নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ঘিরে তীব্র অশান্তি ছড়াল। পুলিশের গুলিতে ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত শতাধিক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মোতায়েন করা হয়েছে সেনা।
শুরুতে শান্তিপূর্ণ মিছিল থাকলেও পরে উত্তেজনা বাড়ে। বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেড ভেঙে সংসদ ভবনের কাছে প্রবেশ করতে খাকে। ভাঙচুর ও স্লোগান চলে। গাছের ডাল, বোতল ছোড়া হয় পুলিশের দিকে। এরপর পুলিশ জলকামান, টিয়ার গ্যাস ও রবার বুলেট ব্যবহার করে ভিড় ছত্রভঙ্গ করতে শুরু করে। কয়েক জন বিক্ষোভকারী সংসদ প্রাঙ্গণে এর মধ্যে ঢুকেও পড়ে। এতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়।
আরও পড়ুনঃ খানাকুলে গ্রামবাসীদের ওপর ‘চড়াও’ তৃণমূলের বাহুবলী নেতা খোকন, এলাকাবাসীর প্রতিরোধে পিছু হটলেন
অশান্তির জেরে কাঠমান্ডু জেলা প্রশাসন কার্যালয় কারফিউ জারি করেছে। প্রথমে শুধু বানেশ্বর এলাকায় নিষেধাজ্ঞা থাকলেও পরে তা বাড়িয়ে রাষ্ট্রপতির বাসভবন শীতলনিবাস, উপ-রাষ্ট্রপতির বাসভবন লাইনচৌর, মহারাজগঞ্জ, সিংহদুরবার, প্রধানমন্ত্রী বাসভবন বালুওয়াটার-সহ একাধিক সংবেদনশীল এলাকায় জারি হয়েছে।
প্রধান জেলা কর্মকর্তা ছাবিলাল রিজাল স্থানীয় প্রশাসন আইনের ৬ নম্বর ধারা অনুযায়ী এই নির্দেশ দেন। দুপুর ১২টা ৩০ থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কারফিউ কার্যকর থাকবে। ওই সময় জনসমাগম, মিছিল, অবরোধ বা ঘেরাও পুরোপুরি নিষিদ্ধ থাকবে।
কাঠমান্ডুর বানেশ্বর এলাকায় সংঘর্ষে পুলিশের গুলিতে অন্তত দুই জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ‘দ্য কাঠমান্ডু পোস্ট।’ আহতদের মধ্যে রয়েছেন কান্তিপুর টেলিভিশনের সাংবাদিক শ্যাম শ্রেষ্ঠ। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলির নিজ শহর দামাকেও উত্তপ্ত করেছে আন্দোলন। সেখানেও এক জন আহত হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি নেপাল সরকার ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, এক্স-সহ ২৬টি ‘অনিবন্ধিত’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাপ নিষিদ্ধ করেছে। সরকারের এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ উগরে দিয়েছে তরুণ প্রজন্ম। তাঁদের অভিযোগ, দেশে চরমে পৌঁছেছে দুর্নীতি, যা আড়াল করতে ব্যর্থ সরকার কণ্ঠরোধ করছে সাধারণ মানুষের।