রোজকার এই ব্যস্ত জীবনে যখন রোজ বাড়ির বাইরে বেরতে হয়, শরীরের পাশাপাশি ত্বকের ওপরও সেই প্রভাব পড়তে বাধ্য। শরীরের সঠিক যত্ন তো বটেই, ত্বকের খেয়ালও রাখা এক চিন্তার বিষয়। ঘরোয়া টোটকা সাধারণত সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। অত সময় কোথায়!
এদিকে ত্বকের উজ্জ্বলতা কমছে, ব্রণর দাগ বা বলিরেখা চিন্তার কারণ হয়ে উঠছে। তাহলে আপনার জন্য সহজ সমাধান হতে পারে ‘কেমিক্যাল পিল’। কিন্তু অনেকের মধ্যেই প্রশ্ন আসে, এটা কি নিরাপদ? সত্যিই কাজ করে? এই নিয়েই বিস্তারিত আলোচনা করলেন ডার্মাটোলজিস্ট ড. অজয় রানা।
আরও পড়ুন: ভূতের মুখে রামনাম! মাসুদ আজাহারকে প্রত্যর্পণে রাজি’ পাকিস্তান
কেমিক্যাল পিল আসলে কী?
ড. রানা বলছেন, ‘এটি একটি এমন স্কিন ট্রিটমেন্ট, যেখানে বিশেষ অ্যাসিড ব্যবহার করে ত্বকের ওপরের মৃত কোষ তুলে ফেলা হয়, আর তাতে সহজ নিয়মে ত্বক হয়ে ওঠে তরতাজা, উজ্জ্বল ত্বক।”
এটি ডার্ক স্পট, পিগমেন্টেশন, ব্রণর দাগ, সূক্ষ্ম বলিরেখা এবং ত্বকের নিষ্প্রাণ ভাব দূর করতে বহুল ব্যবহৃত একটি চিকিৎসা পদ্ধতি।
কেমিক্যাল পিল কি নিরাপদ?
হ্যাঁ, তবে শুধুমাত্র বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানেই এটি নিরাপদ ও কার্যকর। ড. রানা বলছেন, ‘কেমিক্যাল শব্দটি ভয় ধরাতে পারে, কিন্তু এটি সঠিকভাবে এবং সঠিক হাতে করালে এতে ক্ষতির আশঙ্কা খুবই কম।’
কীভাবে কাজ করে কেমিক্যাল পিল?
ত্বকে একটি এক্সফোলিয়েটিং অ্যাসিড প্রয়োগ করা হয়, যা ত্বকের উপরের স্তরগুলো তুলে ফেলে। এই ‘নিয়ন্ত্রিত ইনজুরি’-র ফলে নতুন কোশ তৈরি হয়।
কেমিক্যাল পিল তিন ধরনের হয়ে থাকে:
• সুপারফিশিয়াল (মৃদু): শুধুমাত্র ত্বকের উপরিভাগে কাজ করে। গ্লাইকোলিক বা ল্যাকটিক অ্যাসিড ব্যবহৃত হয়।
• মিডিয়াম ডেপথ: ত্বকের ডার্মিস স্তর পর্যন্ত পৌঁছায়। ডার্ক স্পট বা মাঝারি রিঙ্কলস-এর জন্য কার্যকর।
• ডিপ পিল: শক্তিশালী অ্যাসিড (যেমন ফিনল) ব্যবহৃত হয়। গভীর সমস্যা সমাধানে কার্যকর, তবে বেশি রিকভারি টাইম লাগে।
কেমিক্যাল পিলের উপকারিতা কী?
- ত্বকের টোন ও টেক্সচার উন্নত করে
•ব্রণর দাগ ও রোদে হওয়া ক্ষতি কমায়
• ফাইন লাইনস ও রিঙ্কলস থেকে মুক্তি দেয়
• নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকে কোলাজেন বাড়ায়
• ত্বকের অন্যান্য স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টের কার্যকারিতা বাড়ায়
প্রক্রিয়াটি কেমন ও রিকভারিতেই বা কীরকম সময় লাগে?
পুরো প্রক্রিয়াটি শেষ হতে ৩০–৪৫ মিনিট লাগে। প্রথমে ত্বক পরিষ্কার করা হয়, তারপর প্রয়োগ করা হয় কেমিক্যাল সলিউশন। কিছুক্ষণ পর সেটি নিউট্রালাইজ বা রিমুভ করা হয়। এতে সামান্য জ্বালাভাব বা টানটান অনুভূতি হতে পারে।
আপনি কীরকম পিল ট্রিটমেন্ট করাচ্ছেন, তার ওপর নির্ভর করবে রিকভারির সময়। সুপারফিশিয়াল পিলে কয়েক দিনের মধ্যেই ত্বক স্বাভাবিক হয়ে যায়। ডিপ পিলে ১–২ সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। কিন্তু পিল ট্রিটমেন্টের পরে সূর্যের আলো থেকে ত্বককে সুরক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
আরও পড়ুন: দাঁড়িয়ে থাকল ৩ ঘণ্টা ৪০ মিনিট জানকি এক্সপ্রেস; দুটো কাকের তুমুল ঝগড়া-মারপিট
এবার প্রশ্ন আসবে, সবার জন্য কি কেমিক্যাল পিল উপযুক্ত?
ড. রানা জানাচ্ছেন, ‘সবার ত্বকে কেমিক্যাল পিল কাজ না-ও করতে পারে। যাঁদের সংবেদনশীল ত্বক, স্কিন ইনফেকশন বা নির্দিষ্ট কোনও স্কিন কন্ডিশন রয়েছে, তাঁদের আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।’ ডিপ পিল ডার্ক স্কিনে হাইপারপিগমেন্টেশনের ঝুঁকি বাড়াতে পারে, তাই বিশেষ সতর্কতা দরকার।
বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ: এই সংক্রান্ত কোনও মতামত বঙ্গবার্তার নয়। বঙ্গবার্তা স্বাস্থ্য / সাজগোজ সম্পর্কিত কোনও সম্পাদকীয় / সম্পাদক-নিয়ন্ত্রিত তথ্য, পরামর্শ প্রদান করে না। প্রদত্ত পরামর্শ ও তথ্য প্রয়োগের আগে সঠিক সিদ্ধান্ত নিন। নিজের মতামতকে গুরুত্ব দিন।