Thursday, 17 July, 2025
17 July, 25
Homeগল্পBengali Book: নিখুঁত খিস্তিপিডিয়া! একদম স্ট্রেটকাট বোমের কারখানা; হালকা মেজাজে বইটি পড়তেই...

Bengali Book: নিখুঁত খিস্তিপিডিয়া! একদম স্ট্রেটকাট বোমের কারখানা; হালকা মেজাজে বইটি পড়তেই পারেন

রেগে গেলে যে খিস্তি বেরোয় খুশি হলে সেটি বেরোয় না। মাছ ওয়ালির খিস্তি আর প্রেমিকার খিস্তির মধ্যেও আছে অনেক তফাত। খিস্তি এমন একটা পাইকারি প্রোডাক্ট যেটা বাপ দেয়, ছেলেও দেয়।

অনেক কম খরচে ভিডিও এডিটিং, ফটো এডিটিং, ব্যানার ডিজাইনিং, ওয়েবসাইট ডিজাইনিং এবং মার্কেটিং এর সমস্ত রকম সার্ভিস পান আমাদের থেকে। আমাদের (বঙ্গবার্তার) উদ্যোগ - BB Tech Support. যোগাযোগ - +91 9836137343.

বাংলায় খিস্তি নিয়ে প্রচুর বই নেই, যেকটি বই সম্বল সেগুলোর মধ্যে এত বেশি জ্ঞানের আলোচনা, আর ব্যাকরণের ওভার ডোজ যে পড়তে পড়তে বিরক্ত লাগে। খিস্তি যেকোন জাতির ইমোশন প্রকাশের মাধ্যম। রেগে গেলে যে খিস্তি বেরোয় খুশি হলে সেটি বেরোয় না। মাছ ওয়ালির খিস্তি আর প্রেমিকার খিস্তির মধ্যেও আছে অনেক তফাত। খিস্তি এমন একটা পাইকারি প্রোডাক্ট যেটা বাপ দেয়, ছেলেও দেয়। অভিনব খিস্তি খেউড় শুনে অনেকেই নাক কুঁচকে বলেন, অপ সংস্কৃতি। কিন্তু তাঁরা ভুলে যান, খিস্তি খেউড় গালাগাল এগুলো এককালে ছিল যেকোন বড় পুজোর মূল বিষয়! অর্থাৎ পুজোর পর দেবতা/ দেবীর ভাসানে খেউড় খিস্তি না হলে তাঁরা মনে করতেন এই পুজোয় খামতি থেকে গেল।

আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশ বলল ‘ভুল বোঝাবুঝি’; সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়ি ভাঙা স্থগিত 

বড় বড় জমিদার বাড়িতে বাবুরা যে খেউড় গাইতেন, তাঁতে অংশ নিতেন মহিলা মহল ও। যদিও, সেসব দিন ফুরিয়ে হেজেমজে গেছে।

খিস্তি হয়ে গিয়েছে অনেকটা বাতকর্মের মত। দেয় সবাই, কেউ স্বীকার করে না।

ছোঁক ছোঁক করা কাকু স্বাস্থ্যবতী কিশোরীকে দেখে “ইস্কুল থেকে এই এলে? ইস রোদে এতটা হেঁটে আসা, খুব কষ্ট হয় তাই না?” বলে যখন হদিশ নেন তখন কিশোরীর ঝাঁঝালো সেমি নিরামিষ খিস্তির গল্প শুনে কারোরই মনে হয়না এই খিস্তি অনর্থক এই খিস্তি অপ্রাসঙ্গিক অসভ্যতা।

দুশ পাতার বইটি জুড়ে লেখক তুলে ধরেছেন নিখুঁত খিস্তিপিডিয়া। মন্দিরের ভেতরে চলতি খিস্তি, জেলা প্রভেদে খিস্তি, বস্তি অঞ্চলের খিস্তি, বাঙাল ঘরের খিস্তি, ঘটির খিস্তি, খিস্তির সঙ্গে জুড়ে থাকা প্রবাদমালা আরও কত কি যা পড়তে পড়তে বেশ মজা লাগে। কোথাও মনে হয় না অশ্লীলতা বলে। যে কথা বলতে চাইলেও অনেক সময় বলে উঠতে পারি না সেইসব কথার ফুলঝুরি রয়েছে এই বইয়ে।

আরও পড়ুনঃ রাগ বর্জন করুন, আজ ভুলেও এই কাজগুলি নয়

ক্ষেত্র বিশেষে এসেছে জেলের ভেতরে প্রচলিত গালাগাল, কোড ওয়ার্ড ইত্যাদি বিষয় ও।  অপরাধ জগতের শব্দকোষ নিয়ে আরো কিছু তথ্য পেলে আরো খুশি হতাম এই বইয়ে, কারণ ১৯৭০ সালে শ্রী ভক্তি প্রসাদ মল্লিকের অপরাধ জগতের ভাষা ও শব্দকোষ বইটি একটি অসামান্য কাজ হলেও সেই সময়ের নিরিখে গালাগাল, কোড ওয়ার্ড, অপরাধের ধরণ পুরোটাই বদলে গিয়েছে। গ্রামে গঞ্জে সিঁদ কেটে চুরি যেমন উঠে গিয়ে ডিজিট্যাল চুরি ট্রেন্ডি হয়ে গেছে তেমনই ভাষা, অপভাষা যাই বলুন না কেন তাঁর ট্রেন্ড ও ঘটে গিয়েছে। এখন সুন্দর কুচযুগ ভক্ত মানুষকে বলা হয় ফেটিশ লাভার! হারিয়ে গেছে বাংলার মেয়েদের আদি “মাই – মজনু” খিস্তিটি।

তবুও এই বইয়ে লেখক খুঁজে পেতে যা পেয়েছেন যথেষ্ট।  অনর্থক জ্ঞান নেই, ব্যাকরণের কচকচানি নেই, একদম স্ট্রেটকাট বোমের কারখানা।

ভাষা নিয়ে ছুতমার্গ বা ফুলের ঘায়ে মূর্ছা যাওয়ার প্রবণতা না থাকলে হালকা মেজাজে বইটি পড়তেই পারেন, কিছু থাক না থাক চর্চার অভাবে ভুলতে বসা শব্দ ভান্ডারকে নতুন করে ঝালিয়ে নিতে পারবেন

লেখক – কিন্নর রায়

প্রকাশক – ক্যাফে টেবিল

দাম – ২৫০

এই মুহূর্তে

আরও পড়ুন