অনলাইনে টিকিট বা ঘর বুকিং করার ক্ষেত্রে প্রতারণার শিকার হতে পারেন সাধারণ মানুষ, সতর্ক করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। অমিত শাহের মন্ত্রকের অধীন ভারতীয় সাইবার অপরাধ সমন্বয় কেন্দ্র বা আইফোরসি (ইন্ডিয়ান সাইবার ক্রাইম কোঅর্ডিনেশন সেন্টার) এই মর্মে জনস্বার্থে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। সেখানেই বলা হয়েছে, অনলাইন বুকিংয়ের দুনিয়ায় ফাঁদ পেতে রেখেছে প্রতারকেরা। সামান্য অসাবধানতায় সেই ফাঁদে পা দিয়ে ফেলতে পারেন যে কেউ। মূলত এই প্রতারকদের ‘টার্গেট’ বা লক্ষ্য হলেন পুণ্যার্থী এবং ভ্রমণপিপাসুরা। যাঁরা ঘুরতে যান, তাঁদের মধ্যে অনলাইনে বুকিংয়ের প্রবণতা বেশি থাকে। সাম্প্রতিক সময়ে এই সব ক্ষেত্রে অনলাইন প্ল্যাটফর্মের ব্যবহার বাড়ছে। কী ভাবে প্রতারণা এড়াবেন, ছ’দফা পরামর্শ দিয়েছে অমিত শাহের মন্ত্রক।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা জুড়ে অবৈধভাবে চলছে গ্যাস রিফিলিং
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ধর্মীয় পুণ্যার্থী এবং পর্যটকদের ‘টার্গেট’ করে দেশ জুড়ে অনলাইন বুকিং প্রতারণা চক্র গড়ে উঠেছে। ভুয়ো ওয়েবসাইট, সমাজমাধ্যমের প্রতারণামূলক বিভিন্ন পেজ, ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে মানুষকে ঠকানো হচ্ছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে গুগ্লের মতো সার্চ ইঞ্জিনে বিজ্ঞাপনও দেওয়া হচ্ছে। বাদ যাচ্ছে না হোয়াট্সঅ্যাপও। কোন কোন ক্ষেত্রে প্রতারণা বেশি হচ্ছে? উদাহরণ হিসাবে চারটি অনলাইন বুকিংয়ের কথা বলেছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রক।
১. চারধাম যাত্রায় কেদারনাথে হেলিকপ্টার বুকিং।
২. পুণ্যার্থীদের জন্য অতিথিশালা এবং হোটেল বুকিং।
৩. অনলাইনে ক্যাব বা ট্যাক্সি বুকিং।
৪. ধর্মীয় স্থান ভ্রমণ বা লম্বা ছুটিতে ঘুরতে যাওয়ার প্যাকেজ বুকিং।
গুগ্ল, ফেসবুক, হোয়াট্সঅ্যাপ বা ভুয়ো ওয়েবসাইটে এই ধরনের আকর্ষণীয় অফার দেখে অনেকেই টাকা দিয়ে ঘর, টিকিট বা গোটা প্যাকেজ ভাড়া করে ফেলেন। কিন্তু এক বার টাকা দিয়ে ফেললে আর তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায় না।
আরও পড়ুন: আরামবাগে ‘বিপজ্জনক’ সেতু পরিদর্শন, সংস্কারের আশ্বাস পূর্ত সচিবের
মানুষ যত ক্ষণে বুঝতে পারেন যে তাঁরা প্রতারিত হয়েছেন, তত ক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়। এই ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে কেন্দ্রের পরামর্শ—
- টাকা দেওয়ার আগে সবসময় ওয়েবসাইটের বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাই করে নিতে হবে।
- গুগ্ল, ফেসবুক বা হোয়াট্সঅ্যাপে অচেনা লিঙ্কে ক্লিক করা এড়াতে হবে। ‘স্পনসর্ড’ লেখা লিঙ্কের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
- শুধুমাত্র সরকারি পোর্টাল বা নির্ভরযোগ্য সংস্থার মাধ্যমে অনলাইন বুকিং করতে হবে। বুকিংয়ের পর তার সত্যতা আরও এক বার যাচাই করে নিতে হবে।
- ভুয়ো বা প্রতারণামূলক ওয়েবসাইটের খোঁজ পেলে অবিলম্বে ন্যাশনাল সাইবার ক্রাইম রিপোর্টিং পোর্টালে গিয়ে বা ১৯৩০ নম্বরে ফোন করে অভিযোগ জানাতে হবে।
- কেদারনাথের জন্য হেলিকপ্টার বুকিং করা যাবে https://www.heliyatra.irctc.co.in এই সরকারি ওয়েবসাইট থেকে।
- সোমনাথ ট্রাস্টের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট https://somnath.org । এর মাধ্যমে অতিথিশালা বুকিং করা যাবে।
প্রতারণা ঠেকাতেও একাধিক পদক্ষেপ করেছে সরকার। বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, গুগ্ল, ফেসবুক এবং হোয়াট্সঅ্যাপের সঙ্গে নিয়মিত প্রতারণার সঙ্কেত বিনিময় করা হচ্ছে। রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে সাইবার অপরাধের ‘হটস্পট’ চিহ্নিত করা হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে। ভুয়ো ওয়েবসাইট বা পেজগুলিকে যত দূর সম্ভব চিহ্নিত করে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য, মে মাস থেকেই চারধাম যাত্রা শুরু হয়ে যাবে। কেদারনাথের দরজা খুলে যাবে ২ মে। এই সময় থেকে হাজার হাজার মানুষ চারধামের জন্য অনলাইনে বুকিং শুরু করেন। তার আগেই এল কেন্দ্রের সতর্কবার্তা।