রাস্তায় ট্র্যাফিক জ্যামে ফেঁসে থাকার সময়ে শয়ে শয়ে গাড়ি যখন একসঙ্গে হর্ন বাজায়, কান-মাথা যেন ঝাঁ ঝাঁ করে। এই যন্ত্রণাদায়ক অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে কম-বেশি সব ভারতবাসীই গেছেন। তবে এই বিকট আওয়াজ হয়তো আর বেশিদিন শুনতে হবে না। কারণ কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়কমন্ত্রী নীতিন গড়করি জানালেন, গাড়ির হর্নে এবার থেকে নানা ভারতীয় বাদ্যযন্ত্রের সুর বাধ্যতামূলক করা হবে। এই নিয়ে কেন্দ্র একটি নতুন আইনও আনার পরিকল্পনা করছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: সন্ত্রাসের ‘রক্তাক্ত নজর’ পড়ল পর্যটকদের উপর; জম্মু-কাশ্মীরে পর্যটকদের উপর এলোপাথাড়ি গুলি, নিহত দুই
সোমবার এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে গড়করি বলেন, ‘আমরা চাই, রাস্তায় গাড়ির হর্নের শব্দ আরও স্নিগ্ধ ও শ্রুতিমধুর হোক। বাঁশি, সানাই, তবলা, বেহালা, হারমোনিয়ামের মতো নানা ভারতীয় বাদ্যযন্ত্রের সুর যেন গাড়ির হর্নে ব্যবহৃত হয়, সে দিকেই এগোচ্ছি আমরা।’
বলাই বাহুল্য, এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য রাস্তাঘাটে শব্দ দূষণ কমানো। বর্তমানে যানবাহনের হর্ন থেকে যে বিকট শব্দ বেরোয়, তা শুধু অস্বস্তিকর নয়, মানুষের স্বাস্থ্যের উপরেও প্রভাব ফেলে। এক্ষেত্রে ভারতীয় বাদ্যযন্ত্রের সুর কাজে লাগিয়ে হর্নের শব্দকে আরেকটু সহনীয় করে তোলা যাবে বলে মনে করছেন মন্ত্রী।
এদিন গড়করি আরও বলেন, দেশের মোট বায়ু দূষণের ৪০%-এর জন্য দায়ী ভারতের পরিবহণ খাত। সেই কারণে মোদী সরকার পরিবহণে সবুজ ও বায়ো ফুয়েল ব্যবহারে উৎসাহ দিচ্ছে। বিশেষত মিথানল ও ইথানল-জাত জ্বালানির ওপর জোর দিচ্ছে কেন্দ্র।
আরও পড়ুন: দাম ১ লাখ ছুঁল সোনার; বিনিয়োগে সতর্ক থাকার পরামর্শ
মন্ত্রী এদিন ভারতের অটোমোবাইল শিল্প নিয়েও আশাবাদী মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালে যেখানে ভারতের গাড়ি শিল্পের মূল্য ছিল ১৪ লক্ষ কোটি টাকা, আজ তা বেড়ে হয়েছে ২২ লক্ষ কোটি টাকা।’ গড়করি আরও বলেন, ‘আমরা আজ জাপানকে পিছনে ফেলে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম গাড়ির বাজার হয়ে উঠেছি। এখন কেবল আমেরিকা ও চিন আমাদের থেকে এগিয়ে রয়েছে।’
তবে হর্নে বাজনার সুর বাজার পরিকল্পনা কার্যকর হলে ভারতের রাস্তায় শব্দ দূষণ যেমন কমবে, তেমনি রাস্তাঘাটের অভিজ্ঞতাও হবে আরও শান্তিপূর্ণ। আর এই সানাইয়ের সুর, কিংবা তবলায় তাল যদি সত্যিই গাড়ির হর্নে বাজে, তাহলে গাড়ির পিছনের ‘হর্ন প্লিজ’ লেখা বদলে যেতে পারে ‘মিউজিক প্লিজ!’-এ।