শনিবার মধ্যরাত। হঠাৎ করে রক্ত-লাল হয়ে উঠল ইজরায়েলের আকাশ। এই নিয়ে ৬১৮ দিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যের নানা দেশের সঙ্গে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে এই ইহুদি ভূম। কখনও তাদের নিশানায় এসেছে গাজা, কখনও এসেছে লেবানন, এবার এসেছে ইরান।
গত দিন তিনেক ধরেই দফায় দফায় চড়েছে পারদ। হামলা-পাল্টা হামলার জেরে বিধ্বস্ত হয়েছে জনজীবন। রবিবার ভোরের দিকে ইরানের সর্ববৃহৎ প্রাকৃতিক গ্যাস কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে ইজরায়েল। সূত্রের খবর, যুদ্ধের আবহ এতটাই তীব্র যে এবার পারমাণবিক হামলার কথা ভাবছে তারা।
আরও পড়ুন: ভয়ঙ্কর মিসাইল ‘রেডি’! মুছে যেতে পারে ইরানের একাংশ
ইজরায়েলের আগে শনিবার মধ্যরাতে হামলা চালিয়েছে ইরান। তাদের একাধিক শহরে আয়রন ডোমকে প্রতিহত করেছে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তেল আভিভের ইজরায়েলি সেনার সদর দফতরও। এই সময়কালেই সেখানকার হাফিয়া শহর, যা বন্দর শহর বলেও পরিচিত। সেখানেও হামলা চালিয়েছে ইরান। সেই সময় এই হাফিয়ায় হামলা নিয়ে বিশেষ কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। সরকারি সূত্রে দাবি করা হয়, পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে।
রবিবার বেলা গড়াতেই একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে হাফিয়া হামলার আরও এক অধ্যায়ের কথা। প্রকাশ্যে আসে বেশ কিছু হামলার ছবি। যেখানে দেখা যায়, ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র আয়রন ডোমকে ছেদ করে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে ইজরায়েলের অন্যতম হাফিয়া বন্দরকে।
নৈরবি টাইমস ও কেনিয়া টাইমসের মতো বেশ কিছু আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্য়মের দাবি, শনিবার রাতের দিকে হাফিয়া বন্দরে পর পর হামলা চালিয়েছে ইরান। যার জেরে প্রায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছে, সেখানে অবস্থিত বন্দর, সেনা ছাউনি, রাসায়নিক কেন্দ্র ও তেল পরিশোধনাগার। তবে কি এই হামলার প্রতিবাদেই তেহরানের প্রাকৃতিক গ্যাস কেন্দ্রে হামলা চালাল ইজরায়েল?
আরও পড়ুন: Airtel, Jio এবং Vodafone Idea কে চ্যালেঞ্জ! 5G পরিষেবার ট্রায়াল শুরু করতে চলেছে
উল্লেখ্য, ‘প্রায় ধ্বংস’ হয়ে যাওয়া এই হাফিয়া বন্দরের সঙ্গে রয়েছে ভারত-যোগ। প্রথম থেকেই দুই দেশে সংঘাত থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছে ভারত। কিন্তু তারপরেও এবার কার্যত বাধ্য হয়েই জুড়ে গেল সেই প্রসঙ্গ। এই হাফিয়া বন্দরের ৭০ শতাংশ অংশীদারিত্ব রয়েছে আদানি পোর্ট অর্থাৎ গৌতম আদানির কাছে। ২০২৩ সালে ইজরায়েলের গ্যাডোট গোষ্ঠীর সঙ্গে যৌথ অংশীদারিত্বে এই বন্দরটি কিনেছিল গৌতম আদানির সংস্থা। যার তৎকালীন সময়ে দাম পড়েছিল প্রায় ১৫০ কোটি মার্কিন ডলার। তবে এই হাফিয়া পোর্টে ইরানি হামলার প্রসঙ্গে এখনও পর্যন্ত মুখ খোলেনি কোনও পক্ষই। না বিবৃতি দিয়েছে ইজরায়েলের নেতানিয়াহু সরকার। না বিবৃতি দিয়েছে আদানি গোষ্ঠী। মুখ খোলেনি ইরানও।