শৈবতীর্থ তারকেশ্বরকে ঘিরে তৈরি হচ্ছে নতুন নগর পরিকল্পনা। সেই লক্ষ্যে তারকেশ্বরের চারপাশে মোট ৬০টি মৌজা নিয়ে ‘ল্যান্ড ইউজ ম্যাপ’ তৈরি করা হচ্ছে। সরকারি কর্তাদের ব্যাখ্যা, তারকেশ্বরকে কেন্দ্র করে আগামী দিনে নতুন শহর গড়ে উঠবে। সেটা মাথায় রেখে ভবিষ্যতের একটা রূপরেখা তৈরি করা হবে।
মূলত নতুন টাউনশিপ তৈরির জন্য ১৯৭৯ সালের ওয়েস্ট বেঙ্গল টাউন অ্যান্ড কান্ট্রি (প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট) আইন অনুযায়ী এই ধরনের সমীক্ষা হয়ে থাকে। নগর পরিকল্পনার জন্য এটা খুবই জরুরি। তার উপর ভিত্তি করেই ভবিষ্যতে তারকেশ্বরের যাবতীয় উন্নয়নের কাজ হবে। তারকেশ্বর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা স্থানীয় বিধায়ক রামেন্দু সিংহ রায় জানিয়েছেন, আপাতত তারকেশ্বরের ল্যান্ড ইউজ ম্যাপ তৈরির জন্য সমীক্ষার কাজ শুরু হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ চেতনানাশক স্প্রে করে দুঃসাহসিক চুরি শিলিগুড়ির গেট বাজারে! অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ৭
এই সমীক্ষা শেষ হলেই তারকেশ্বরকে ঘিরে বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নের কাজ শুরু করা হবে। আপাতত ৬০টি মৌজা এলাকায় এই সমীক্ষা হবে। তার জন্য তারকেশ্বর উন্নয়ন পর্ষদের তরফে টেন্ডারও ডাকা হয়েছে। সরকারি কর্তারা জানাচ্ছেন, গত কয়েক দশকে তারকেশ্বর পুর এলাকা কলেবরে অনেকটাই বেড়েছে। তারকেশ্বর পুরসভার আশপাশে অনেক বাড়িঘর তৈরি হচ্ছে। আগে তারকেশ্বর মন্দিরে মূলত শ্রাবণ মাসে পুণ্যার্থীরা ভিড় করতেন। এখন সারা বছরই তারকেশ্বর মন্দিরে ভিড় লেগেই রয়েছে। তাদের থাকার জন্য তৈরি হচ্ছে অনেক নতুন হোটেল।
ফলে ভবিষ্যতে শৈবতীর্থ তারকেশ্বরের আরও শ্রীবৃদ্ধি ঘটবে বলে মনে করা হচ্ছে। সেই লক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই তারকেশ্বর উন্নয়ন পর্ষদ তৈরি করছেন। তারকেশ্বরের উন্নয়নের জন্য বাজেটে আলাদা করে টাকা বরাদ্দ করা হচ্ছে। সেই উন্নয়নের কাজকে মসৃণ করতেই তারকেশ্বর পুরসভা এবং তারকেশ্বর ব্লকের মোট ৬০টি মৌজা নিয়ে ল্যান্ড ইউজ ম্যাপ বানানো হচ্ছে। কোথায় রেলপথ রয়েছে, কোথায় পিচ রাস্তা নেই, কোথায় বনাঞ্চল রয়েছে, কোথায় ইলেকট্রিক লাইন রয়েছে, কোথায় জলাশয় রয়েছে ইত্যাদি সমস্ত তথ্য ল্যান্ড ইউজ ম্যাপ থেকে পাওয়া যাবে।
সরকারি নথি অনুযায়ী, ল্যান্ড ইউজ ম্যাপ তৈরির জন্য তারকেশ্বরের আশপাশের ৬০টি মৌজার প্রায় ৮০.৪৪ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে সমীক্ষা চালানো হবে। তার মধ্যে পাঁচটি মৌজা তারকেশ্বর পুরসভার মধ্যে পড়ছে। বাকিটা পঞ্চায়েত এলাকা।
আরও পড়ুনঃ চিন্তায় বিমান! জোটে আগ্রহী নয় ফরওয়ার্ড ব্লক ও আরএসপি
তারকেশ্বর পুরসভার চেয়ারম্যান উত্তম কুণ্ডু বলেন, ‘খবরটা আমরাও শুনেছি। এই কাজে পুরসভার যদি কোনও সহযোগিতা লাগে, আমরা সবসময় পাশে আছি। এটা জেনে ভালো লাগছে যে, আমাদের মুখ্যমন্ত্রী তারকেশ্বরকে এতটা গুরুত্ব দিচ্ছেন। এর জন্য আমরা তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ।’
তিনি জানান, এখান থেকে প্রায় চারশোর উপরে বাস চলে। তারকেশ্বর থেকে বিষ্ণুপুরের রেলপথ সম্পূর্ণ হলে তখন ট্রেন যোগাযোগ আরও বাড়বে। যতদিন যাচ্ছে লোকবসতিও বাড়ছে। তার জন্য এখন থেকেই নগর পরিকল্পনার কাজ শুরু করা দরকার।
