কোনও স্কুলে শহিদ স্মরণ কীভাবে হয়? কখনও বা ক্ষণিকের প্রার্থনা ও মৌনতা। কখনও বা গুরুত্ব নির্বিশেষে গোটা দিনটাই উৎসর্গ করে দেওয়া। কিন্তু রাজনৈতিক মহলের শহিদ স্মরণ, বিভিন্ন মহল বলে, তার মাধুর্যটা নাকি অন্যরকম। সেখানে মিটিং আছে, মিছিল আছে, খাওয়া-দাওয়া আছে, রাজনৈতিক লাইন তৈরি আছে ও দিনশেষে শক্তির প্রদর্শনও রয়েছে।
তাই তো সোমবার সপ্তাহের প্রথম দিনে যখন শহরের প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলা সাজবে তৃণমূলের পোস্টার-হোর্ডিংয়ে। চারপাশে বাজবে শহিদ দিবসের মাইক। সেই সময় কিছু স্কুল থাকবে ‘নিস্তব্ধ’। সেখানে শোনা যাবে না পড়ুয়াদের গলার শব্দ।
আরও পড়ুনঃ দুপুর থেকেই দুর্গন্ধ! দমদমে পরিত্যক্ত স্কুল থেকেই উঁকি দিতেই থ এলাকার লোকজন
তবে এটা কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাবের নমুনা মোটেই নয়। শাসক শিবিরের একাংশ বলছে, এটা আসলে শহরের যানজট পরিস্থিতি থেকে পড়ুয়াদের একদিনের জন্য দূরে রাখা। একটু ‘বিরতি’ দেওয়া। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবিও একই। অভিভাবকদের বাড়তি চিন্তা, ছেলেমেয়েদের রাস্তার যানজট থেকে দূরে রাখতেই ২১ তারিখ বন্ধ থাকবে স্কুল।
২১ জুলাই বন্ধ থাকছে ডন বসকো, ক্যালকাটা গার্লস, সেন্ট জেমস স্কুল, ডিপিএস মেগা সিটি, ডিপিএস রুবি পার্ক ও অভিনব ভারতী। তবে এই সকল বেসরকারি স্কুলের কর্তৃপক্ষ একদিনের জন্য পড়াশোনা থেকে ছুটি দেওয়ার কথা ভাবলেও, লা মার্টিনিয়ার ও বিএসএস স্কুল কিন্তু বেছে নিয়েছে ‘ডিজিটাল’ পথ। তাদের ক্লাস হবে অনলাইনে।
এদিন লা মার্টিনিয়ার সেক্রেটারি সুপ্রিয় ধর বললেন, ‘এটা সত্যি চিন্তাদায়ক। পড়ুয়ারা যখন ফেরে তখন বাজবে ১টা। কোনও ক্রমে যানজটে আটকে গেলে বাড়ি ফিরতে বেজে যাবে ৫টা। যা অভিভাবকদের জন্যও চিন্তাদায়ক। তাই এই ব্যবস্থা। কিন্তু পড়াশোনার তো ক্ষতি হচ্ছে না। অনলাইনে ক্লাসে হবে।’
আরও পড়ুনঃ রাস্তা থেকে উধাও হয়ে যাচ্ছে বাস! আরামবাগ বাসস্ট্যান্ডে নিত্যযাত্রীদের করুন অবস্থা
অন্যদিকে, শিক্ষাবিদ দেবাশিস সরকারের দাবি, ‘রাজনৈতিক লড়াইয়ের যা সংস্কৃতি, মানে এই মিটিং, মিছিল এটা করা মোটেই ভুল নয়। কিন্তু এটা খেয়াল রাখা উচিত আমার এই কার্যকলাপের জন্য একদিন শিক্ষার পাট চুকিয়ে দিতে হল। এটা ভয়ঙ্কর।’ তবে স্কুল বন্ধের দায় কিন্তু নিজেদের ঘাড়ে নিতে নারাজ তৃণমূলের ‘চর্চিত অংশ’। তৃণমূল নেতা অরূপ চক্রবর্তীর বলেন, ‘সিপিএম জিজ্ঞাসা করা উচিত, কেন গুলিটা চালানো হল? ওরাই দায়ী।’
শুধু স্কুলই নয়। ২১শে জুলাই স্নাতকের দ্বিতীয় বর্ষের পূর্ব নির্ধারিত পরীক্ষার দিন পরিবর্তন করেছে সিধু-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ। যদিও তাদের দাবি, পরীক্ষার দিন অনিবার্য কারণবশত পরিবর্তন করা হচ্ছে।