Wednesday, 15 October, 2025
15 October
HomeকলকাতাGhost Story: সাদা থান পরা কে থাকতেন কুণাল ঘোষের পুরনো বাড়িতে?

Ghost Story: সাদা থান পরা কে থাকতেন কুণাল ঘোষের পুরনো বাড়িতে?

এই বাড়িতে কেউ এক জন থাকেন। একটা সাদা থান পরিহিত কেউ থাকেন। এক জন বৃদ্ধা।

অনেক কম খরচে ভিডিও এডিটিং, ফটো এডিটিং, ব্যানার ডিজাইনিং, ওয়েবসাইট ডিজাইনিং এবং মার্কেটিং এর সমস্ত রকম সার্ভিস পান আমাদের থেকে। আমাদের (বঙ্গবার্তার) উদ্যোগ - BB Tech Support. যোগাযোগ - +91 9836137343.

আমার ঠাকুরদা, ডক্টর মনমোহন ঘোষের কেনা যে বাড়ি, সুখিয়া স্ট্রিটে, আগেকার দিনের জমিদার বাড়ি গোছের একটা বাড়ি ছিল। ঠাকুর দালান, সামনে উঠোন, পিছনে বাগান, ভিতরে হিন্দি সিনেমার মতো ঘোরানো সিঁড়ি। ওখানকার ওই দুটো বাড়ির আমাদের একটা ছিল, আরেকটা বাড়ির সঙ্গে এই বাড়ির কোনও একটা যোগসূত্র ছিল অতীতে। হয়তো আগে যাঁরা থাকতেন, এক বাড়িতে থাকতেন, আরেক জায়গায় মজলিস বসাতেন, এ রকম কিছু ছিল। ওই বাড়িতে নাকি অতীতে বাইজি নাচ হতো। এগুলি সবই শোনা কথা। হাওড়া ব্রিজ যখন ব্রেথওয়েট, বার্ন অ্যান্ড জেসপ কনস্ট্রাকশন কোম্পানি যখন তৈরি করে, সেই একই সময় এই বাড়ি তৈরি হয়েছিল। এই কোম্পানি কয়েকটি বাড়ি তৈরি করেছিল হাওড়া ব্রিজ বানানোর পাশাপাশি, সেগুলির মধ্যে এটা একটি ছিল। কখনও চাক্ষুষ করিনি, তবে আমরা ছোটবেলা থেকে যেটা শুনতাম, এই বাড়িতে কেউ এক জন থাকেন। একটা সাদা থান পরিহিত কেউ থাকেন। এক জন বৃদ্ধা।

অনেকেই বলেছেন, ‘কে গেল’, ‘কে ছুঁয়ে দিয়ে গেল’। আমার বাবার পিসি থাকতেন, ঠাকুমা থাকতেন, মা…। কেউ কখনও চোখে দেখেননি তাঁকে। তবে আমরা পরিষ্কার দেখতে পেতাম যে ব্যাপার কিছু একটা হল, দৃষ্টির কোণ দিয়ে মনে হল কেউ হেঁটে চলে গেল। এবং এ সবই হতো সন্ধ্যার পর, রাতের দিকে। কিন্তু তিনি কখনও কারও ক্ষতি করেননি।

আরও পড়ুনঃ ভৌতিক অভিজ্ঞতা! ‘কেউ দরজা খুলছে, বিছানায় এসে বসল…’, ভূতচতুর্দশীর আগে বামনেত্রী দীপ্সিতা

বাড়িটা বেশ খোলামেলা ছিল, পিছনে বাগান, তার মধ্যে রান্নাঘর। একটু বিচ্ছিন্ন বিচ্ছিন্ন ঘর সব। ঠাকুরমশাইকে দিয়ে পুজো করানো হয়েছিল, একটা দরজায় ‘ক্ষ্রৌঁ’ লেখা হয়েছিল। ঠাকুরমশাই লিখে দিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে কিছু হয়নি। তার পরেও তাঁকে দেখা গিয়েছে।

এর পর আমরা যখন অনেক বড়, আমরা তিন বন্ধু পড়াশোনা করছি দোতলার ঘরে। ওই বাড়িতেই রাত ২-২.৩০ নাগাদ, আমরা তিন কিশোর পড়াশোনা করছি। দরজা বন্ধ। বাইরের সব আলো নেভানো। হঠাৎ একটা পরিষ্কার শব্দ এল যে একটা সুইচ কেউ জ্বালালো। আমরা বেরিয়ে দেখলাম আলো জ্বলছে। আমরা নিভিয়ে দিয়ে এলাম। পর পর চার বার ঘটনাটা ঘটেছিল। এবং দু’দিন এই ঘটনা ঘটেছিল। কল খুলে জল পড়ত। এগুলি নিজের চোখে দেখেছি, তাও বড় বয়সে। আমরা তখন ঠিক করলাম যে তৈরি থাকব, কোনও আওয়াজ হলেই ঝড়ের বেগে ঘর থেকে বেরোব। আবার সেই সুইচের আওয়াজ, আলো জ্বলল। আমরা গেলাম, ছাদ সহ সব খুঁজলাম যে চোর-ডাকাতের কোনও বিষয় আছে কিনা। জনপ্রাণী নেই, সব বন্ধ। কিন্তু ওই ঘটনা বার বার ঘটেছে। পরে মিস্ত্রি ডাকা হল, তিনি জানালেন সুইচ এক দম ঠিক আছে, এটা আপনা থেকে হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। ফলে কিছু ক্ষণ অন্তর অস্তিত্ব জানান দেয় কে?

আরও পড়ুনঃ বেড়েই চলেছে পুজোর শ্রী, লক্ষ লক্ষ ভক্তের সমাগম; নৈহাটির বড়মার পুজো কখন?

আমার প্রিয় কুকুর ছিল রাজা, বাড়িতে লোক এলে ওরা যেমন করে না, আচমকা আচমকা ও সে রকম করত, যেন কেউ এসেছে। আমি মাঝরাতে উঠে ওকে বলতাম, ‘কী রে চ্যাঁচাচ্ছিস কেন?’ কোথাও কাউকে দেখা যেত না, কিন্তু ওর আচরণ দেখে মনে হতো কেউ এসেছে। কিন্তু যিনি আসুন, যিনি ছিলেন তাঁর অনেক সুযোগ ছিল ক্ষতি করার, কখনও তিনি কারও শারীরিক অনিষ্ট, বা ভয় দেখানো এ সব করেননি। তাঁর অস্তিত্ব জানান দিত, কিন্তু ভয় দেখাচ্ছেন যে সেটা মনে হয়নি। তা হলে আমরা সবাই হাসিমুখে ওখানে থাকতে পারতাম না।

বাবার মৃত্যুর পর বাড়িটা ভাঙার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল, কারণ আমি খরচ সামাল দিতে পারছিলাম না। পুরনো বাড়ি, জল পড়ে, বৃষ্টির সময় ঘরে প্লাস্টিক দিয়ে রাখতে হয়, অত পেল্লায় বাড়িকে যত্নে রাখতে অনেক খরচ। তখন সিদ্ধান্ত নিই যে ওটাকে ফ্ল্যাট করব। সেই বাড়ি যখন ভাঙা হচ্ছে, প্রায় ধ্বংসস্তূপ, আমি রোজ যেতাম। আমার সেই বাড়ির প্রতি খুব মায়া ছিল, কারণ জন্ম থেকে ওই বাড়িতেই আমার সব। আমি অফিস থেকে সন্ধ্যার দিকে ফিরতে পারলেই ওখানে যেতাম। তখন ভাঙা চলছিল আর কী! সব এবড়ো খেবড়ো, এই ঘর ভাঙা হয়েছে, ওই ঘর ভাঙা চলছে। সন্ধ্যা বেলায় ফিরলেই আমি এক বার ঘুরে যেতাম। এক দিন সন্ধ্যায় আমি ওই ধ্বংসস্তূপে ঢুকেছি, ঢুকে দাঁড়িয়ে আছি, কোথাও কিছু নেই, আচমকা ওই বেড়িয়ে থাকা শিকের একটি আমার মুখের সামনে দিয়ে চলে গেল। মানে একটা রডকে বেঁকিয়ে ছেড়ে দিলে যেমন হয় না, টেনে ধরে ছেড়ে দিলে যা হয়… এতে আমার মনে হল, এই যে বাড়িটা ভাঙা হচ্ছে তাতে কারও যেন খুব কষ্ট হচ্ছে। সে একটা তীব্র প্রতিবাদ জানাল, কিন্তু আমাকে কোনও আঘাত করল না। ওই শিকটার আমার গাল ছিঁড়ে দেওয়ার কথা। ফলে এই ভূত আছে না নেই, আত্মা আছে না নেই, সব আলোচনা… আমি বিজ্ঞানকেও সমর্থন করি, মৃত্যুর পর কিছু থাকে না, সব মানি। কিন্তু তাও কোথাও একটা কিছু আছে, সবটা সব জায়গায় মেলে না। এটাকে নিয়ে রসিকতার কোনও জায়গা আছে বলে মনে করি না। এটা কোনও গল্প নয়, নিজের চোখে দেখা। আমার মনে হয়েছে, কোনও একটা শক্তি, কোনও একটা কিছু ওই বাড়ির সঙ্গে জড়িয়ে ছিল। কোনও এক জন নারী চরিত্র ছিলেন। এখন সেই বাড়ি একটা ফ্ল্যাট হয়ে গিয়েছে। এখন আর তাঁর কোনও অস্তিত্ব নেই। হালকা ভয় ছিল যে যদি কেউ ভয় পান, বা অভিযোগ করেন। কিন্তু এমন কিছু কখনও হয়নি।

এই মুহূর্তে

আরও পড়ুন