সৌরভ দত্ত, কলকাতা :
প্রয়াত ভারতীয় চলচ্চিত্র জনপ্রিয় সিনে পরিচালক রাজা মিত্র। বৃহস্পতিবার কলকাতার একটি সরকারি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন জাতীয় পুরস্কার জয়ী পরিচালক। বয়স হয়েছিল ৭৯।
১৯৮৭ সালে মুক্তি পায় পরিচালক রাজা মিত্রর প্রথম ছবি ‘একটি জীবন’। প্রথম ছবিতেই জাতীয় পুরস্কার জিতে নেন পরিচালক। এছাড়াও, ‘নয়নতারা’, ‘যতনের জমি’ সিনেপ্রেমীদের প্রশংসা পেয়েছিল।
রাজা মিত্রের পরিচালিত ছবিঃ
৩২ টি তথ্যচিত্র পরিচালনা করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে, ‘কয়লার নাম দ্য ম্যাসেস’ , ‘রেলওয়েতে এইচএস অয়েলের অর্থনীতি’ , ‘ক্যালকাটা ফুটপাথ ডেভেলার’ , ‘দ্য ট্রাইবাল রেজিস্ট্যান্স’ , ‘কলকাতা’ , ‘অতীত এবং বর্তমান’ , ‘বীরভূমের স্ক্রল পেইন্টারস , টুওয়ার্ডস এ গ্লোবাল ব্রেক’, ‘জীবন পটুয়া’ , ‘আশ্রয়’ , ‘বিদ্যাসাগর’ , ‘বিয়ন্ড এ হেড কাউন্ট’ , ‘কালীঘাট পেইন্টিংস অ্যান্ড ড্রয়িংস’। যা সমালোচকদের প্রশংসা কুড়িয়েছিল।
ঠিক সেদিন কি ঘটেছিল?
২০ ডিসেম্বর ভোর ৩টের সময় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন পরিচালক। ফেসবুকে তাঁর মৃত্যুর খবর জানিয়েছেন ছেলে রৌদ্র মিত্র। তিনি লেখেন, “দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, আমার বাবা রাজা মিত্র দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে আজ প্রয়াত হয়েছেন রাত ৩টের সময়।”
আরও পড়ুন: সবার আগে দেশ, তাই আমার দোকানে খরিদ্দার কমে যাওয়ায় একেবারে হতাশ নই আমি প্রণবেন্দু বাগচি
নভেম্বরের শেষের দিকে রৌদ্র ফেসবুকেই জানিয়েছিলেন পরিচালকের ক্যানসার ধরা পড়েছে একেবারে শেষ স্টেজ।
একটা মাস প্রতিনিয়ত লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন। ভর্তি ছিলেন শম্ভুনাথ হাসপাতালে।ফুসফুসে ক্যানসার সেই সঙ্গে মস্তিষ্কে টিউমার ধরা পড়েছে। তিনি লিখেছিলেন, “বাবা এখন চিকিত্সাধীন। এই অবস্থায় বাবার সঙ্গে মেল, মেসেজ, ফোন এবং ফেসবুকে কোনও ভাবে যোগাযোগ করা সম্ভব হবে না। বাবার এই অসুস্থতায় কোনও প্রয়োজন হলে আপনাদেরকে পাশে থাকার অনুরোধ করছি।” রাজা মিত্রর মৃত্যুর খবরে শোকস্তব্ধ টলিপাড়া। প্রথম ছবিতেই করেছিলেন বাজিমাত। এ দিন সে সব পুরনো কথাই মনে পড়ে গিয়েছে সবার।
আরও পড়ুন: যুবক-যুবতী দের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন সন্দীপন
চিত্র পরিচালকের মৃত্যুতে, সোস্যাল মাধ্যমে চিত্র পরিচালক অতনু ঘোষ জানান, রাজাদা চলে গেলেন। রাজা মিত্র। যাঁর ‘একটি জীবন’ বাংলা ছবির ইতিহাসে মাইলফলক। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আরও কত কাজ- নয়নতারা, যতনের জমি, বীরভূমের স্ক্রোল পেইন্টার্স বা কালীঘাট পেইন্টিং তথ্যচিত্র। খুব সম্ভবত দূরদর্শনে প্রথম আলাপ। এমনিতেই আমি জাত মুখচোরা, আর উনি অত নামী মানুষ। তারপর বুঝি বড় পরিচালকের কোনও ভার নেই, দিব্যি সহজে কথা বলা যায়, প্রশ্ন করা যায়। পরে যখন যেখানে দেখা হয়েছে, অনায়াসে কাঁধে হাত তুলে দিয়েছেন- ‘ওটা দেখলাম। বেশ করেছো, এখন কী ভাবছ?’ অনেকটা অক্সিজেন পেয়েছি। আমার মত আনকোরার কাজ রাজা মিত্র দেখেছেন, দেখেন? একবার গোর্কি সদনের গৌতমদা (ঘোষ) নতুন টেলিফিল্ম করিয়েদের উৎসাহ দিতে এক সাক্ষাৎকারের আয়োজন করেছেন। আমার সেশন শুরু হওয়ার আগে হঠাৎ দেখি রাজাদা দর্শকদের মধ্যে এসে বসলেন।
________