পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তানের সঙ্গে টানাপোড়েনের আবহে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর ৭ লোককল্যাণ মার্গের দফতরে যান রাহুল। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর এই প্রথম মুখোমুখি হলেন প্রধানমন্ত্রী ও লোকসভার বিরোধী দলনেতা। কী নিয়ে আলোচনা হল তাঁদের?
আরও পড়ুন: দেশবিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার ও প্ল্যাটফর্মের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ
সূত্রের খবর, পরবর্তী সিবিআই প্রধান নিয়োগ নিয়ে বৈঠকে যোগ দিতে এদিন প্রধানমন্ত্রীর ৭ লোককল্যাণ মার্গের দফতরে যান রাহুল। সিবিআইয়ের বর্তমান ডিরেক্টর প্রবীণ সুদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২৫ মে। তার আগে সিবিআই প্রধান বেছে নেবে প্রধানমন্ত্রী, লোকসভার বিরোধী দলনেতা ও সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে গঠিত কমিটি। সিবিআই প্রধানের মেয়াদ ২ বছর হয়। তা ৫ বছর পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে।
২০২৩ সালে মে মাসে সিবিআই প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন প্রবীণ সুদ। তার আগে সিবিআই প্রধান ছিলেন সুবোধ কুমার জয়সওয়াল। প্রবীণ সুদ ১৯৮৬ ব্যাচের আইপিএস অফিসার। আগামী ২৫ মে তাঁর মেয়াদ শেষ হলে সিবিআই প্রধান কে হবেন, তা নিয়ে জল্পনা বেড়েছে। এদিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রাহুল ও সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বৈঠকে পরবর্তী সিবিআই প্রধান নিয়োগ নিয়ে কী সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা এখনও জানা যায়নি।
আরও পড়ুন: ভারত পাকিস্থান যুদ্ধ আসন্ন! ১৯৭১-এর পর প্রথমবার, ভারত-পাক অশান্তির আবহে বড় নির্দেশ রাজ্যগুলিকে
অপরদিকে পহেলগামে জঙ্গি হামলার পর প্রায় ২ সপ্তাহ কাটতে চলেছে, এখনও পর্যন্ত কোনও সন্ত্রাসবাদীকে গ্রেফতার করা যায়নি। এই পরিস্থিতিতে ঘরোয়া রাজনীতিতে যখন চাপ বাড়ছে, তাঁর সচিবালয়ে দফায় দফায় বৈঠক করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ।
এক নজরে রইল দশটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়—
১. পহেলগাঁওতে ২২ এপ্রিলের সন্ত্রাসবাদী হামলায় ২৬ জন পর্যটকের মৃত্যুর জবাব কীভাবে দেবে ভারত? তা নিয়ে আলোচনা করতে সোমবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ম্যারাথন বৈঠক করেন।
২. জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, প্রতিরক্ষা সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব সহ প্রধানমন্ত্রীর দফতরের (PMO) অন্যান্য শীর্ষ আধিকারিকরা এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
৩. প্রতিরক্ষা সচিব রাজেশ কুমার সিংহের সঙ্গে একটি পৃথক বৈঠকে সশস্ত্র বাহিনীর প্রস্তুতি ও প্রতিরক্ষা কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
৪. এর আগে রবিবার বায়ুসেনা প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল এপি সিংহ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
৫. শনিবার নৌসেনা প্রধান অ্যাডমিরাল দিনেশ কে ত্রিপাঠী আরব সাগরের গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক রুটের পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন।
৬. সেনা, নৌ ও বায়ুসেনা প্রধানদের সঙ্গে আগের এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনীকে “সম্পূর্ণ কর্মসূচিগত স্বাধীনতা” দিয়েছেন — তারা প্রতিশোধ নেওয়ার সময়, পদ্ধতি ও লক্ষ্য নির্ধারণে স্বাধীন সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
৭. স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সমস্ত রাজ্যকে পূর্ণাঙ্গ সিভিল ডিফেন্স মহড়া পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছে, যার মধ্যে বিমান হানার সতর্কতা সাইরেন চালু করাও থাকবে।
৮. হামলার ঠিক পরেই ভারত একাধিক অ-সামরিক পদক্ষেপ করেছে, যার মধ্যে সিন্ধু নদীর জল চুক্তি স্থগিত, আটারি সীমান্ত বন্ধ এবং পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল অন্তর্ভুক্ত।
৯. প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বলেছেন, “দেশের প্রতি কুদৃষ্টি যারা দেয়, তাদের উপযুক্ত জবাব দেওয়া আমার দায়িত্ব। সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা সেই জবাব দেব।”
১০. ভারত এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত পাঁচ জন সন্ত্রাসবাদীর পরিচয় চিহ্নিত করেছে, যাদের মধ্যে তিনজন পাকিস্তানের নাগরিক।
