Wednesday, 5 November, 2025
5 November
Homeউত্তরবঙ্গSiliguri: অচল এনবিইউ, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করল সারা বাংলা...

Siliguri: অচল এনবিইউ, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করল সারা বাংলা তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতি

উপাচার্যহীন বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষমতা কোন গোষ্ঠীর হাতে থাকবে তা নিয়ে দীর্ঘদিন থেকেই কোন্দল চলছে ক্যাম্পাসে।

অনেক কম খরচে ভিডিও এডিটিং, ফটো এডিটিং, ব্যানার ডিজাইনিং, ওয়েবসাইট ডিজাইনিং এবং মার্কেটিং এর সমস্ত রকম সার্ভিস পান আমাদের থেকে। আমাদের (বঙ্গবার্তার) উদ্যোগ - BB Tech Support. যোগাযোগ - +91 9836137343.

কুশল দাশগুপ্ত, শিলিগুড়িঃ

তাদের বেতন বৃদ্ধির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছেন কিছু আধিকারিক ও শিক্ষক, এই অভিযোগে বুধবার থেকে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করল সারা বাংলা তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতি। আন্দোলন থেকে সংশ্লিষ্ট আধিকারিক, শিক্ষকদের শ্রেণিশত্রু বলে আক্রমণ। বয়কটেরও ডাক দিলেন শাসক সংগঠনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তন্ময় বাগচী। যা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। কর্তৃপক্ষের বদলে কয়েকজন শিক্ষক ও আধিকারিককে টার্গেট করে অস্থায়ী শিক্ষাকর্মীদের আন্দোলনের কারণ নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। ফলে উপাচার্যহীন বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী কর্মীদের সঙ্গে শিক্ষক, আধিকারিকদের নজিরবিহীন সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যার জেরে নতুন করে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে ক্যাম্পাসে।

আরও পড়ুনঃ চোরাই মালের ‘শপিং মল’! দোকানের পিছনে লুকোনো গোডাউন! মোটরবাইক, সিলিন্ডার, সাইকেল উদ্ধার; শিলিগুড়িতে এসব হচ্ছেটা কি?

উপাচার্যহীন বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষমতা কোন গোষ্ঠীর হাতে থাকবে তা নিয়ে দীর্ঘদিন থেকেই কোন্দল চলছে ক্যাম্পাসে। তার জেরেই যাবতীয় গণ্ডগোল বলেই মনে করছেন পড়ুয়া ও গবেষকদের একটা বড় অংশ।

আন্দোলনের নেপথ্যে রয়েছে অস্থায়ী শিক্ষাকর্মীদের বেতন বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিষয়ে তৈরি একটি কমিটি। অস্থায়ী শিক্ষাকর্মীদের দাবির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ভাস্কর বিশ্বাস ২০ অগাস্ট ১১ জনের একটি কমিটি তৈরি করেন। তার চেয়ারম্যান করা হয় ডিন মহেন্দ্রনাথ রায়কে। রেজিস্ট্রার, জয়েন্ট রেজিস্ট্রার, ফিন্যান্স অফিসার, চিফ ইঞ্জিনিয়ার, মেডিকেল অফিসার সহ কয়েকজন শিক্ষককেও কমিটির সদস্য করা হয়। এরপর সদস্যদের বেশ কয়েকজন চিঠি দেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন মেনে কমিটি তৈরির কথা বলেন তাঁরা। বেতন বৃদ্ধির মতন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে পদ্ধতি মেনে রাজ্য সরকার বা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের কথাও বলেন কেউ কেউ। রেজিস্ট্রারকে পাঠানো সদস্যদের সেই চিঠি পৌঁছে যায় অস্থায়ী শিক্ষাকর্মীদের হাতে। তারপরই কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামেন তাঁরা।

আরও পড়ুনঃ ‘আগে মানুষ সরকার বাছত, এখন কেন্দ্র ভোটার বাছছে’, ফের গর্জন অভিষেকের

কর্মবিরতির ডাক দিয়ে বুধবার রেজিস্ট্রারের দপ্তরের সামনে দিনভর বিক্ষোভ দেখান শিক্ষাবন্ধু সমিতির নেতা-কর্মীরা। সংগঠনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি রণজিৎ রায়ের কথা, ‘রেজিস্ট্রার, ডিন সক্রিয় হলেও কমিটির অন্য সদস্যদের অনেকেই পরিকল্পিতভাবে আমাদের বেতন বৃদ্ধিতে বাধা দিচ্ছে। তাই তাদের বিরুদ্ধেই আমাদের আন্দোলন।’ এদিন ফিন্যান্স অফিসার, চিফ ইঞ্জিনিয়ার সহ বিভিন্ন দপ্তরে গিয়েও হইচই করেন আন্দোলনকারীরা।

পরিকল্পিতভাবে তাঁদের বিরুদ্ধে কর্মীদের উসকে দেওয়া হচ্ছে বলে পালটা অভিযোগ তুলেছেন কমিটির একাধিক সদস্য। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিক সমিতিতেও আলোচনা হয়েছে। কীভাবে রেজিস্ট্রারকে পাঠানো গুরুত্বপূর্ণ চিঠি বাইরে ফাঁস হয়ে গেল তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন আধিকারিকরা। এক আধিকারিকের বক্তব্য, ‘আসলে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার জানেন এই মুহূর্তে রাজ্য সরকারের অনুমোদন ছাড়া কোনওভাবেই অস্থায়ী কর্মীদের বেতন বাড়ানো যাবে না। তাই তিনি বুঝেশুনেই এমন লোকেদের কমিটির সদস্য করেছেন যাঁরা আইনের প্রশ্ন তুলবেন। আর সেই সদস্যরা বেতন বাড়াতে চাইছেন না একথা ছড়িয়ে তাঁদের ঘাড়ে দোষ চাপাবেন। পুরোটাই পরিকল্পনামাফিক করা।

কমিটির সদস্য এবং বিশ্ববিদ্যালয় টিচার্স কাউন্সিলের সম্পাদক অর্ধেন্দু মণ্ডলের কথা, ‘আইন ভেঙে বেতন বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত হলে কমিটির সদস্য হিসাবে পরবর্তীতে দায়ভার আমার কাঁধেই চাপবে। তাই রেজিস্ট্রারকে চিঠি দিয়ে আইন মেনে কাজ করার কথা বলেছি। তাতে যে যা খুশি বলতে পারে।’ তবে বয়কটের ডাক দিয়ে কোনও অনুশোচনা নেই তন্ময়ের। তাঁর বক্তব্য, ‘যা বলেছি সচেতনভাবেই বলেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য নানা খাতে অর্থ খরচ হলেও আমাদের সময়ই নানা অজুহাত দিচ্ছেন কয়েকজন শিক্ষক ও আধিকারিক।’ ভাস্কর ছুটিতে আছেন। বাংলার শিক্ষক উৎপল মণ্ডলকে রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছেন তিনি। জয়েন্ট রেজিস্ট্রার বা ডেপুটি রেজিস্ট্রার থাকতেও কেন উৎপলকে দায়িত্ব দেওয়া হল তা নিয়েও কয়েকদিন ধরে আধিকারিক মহলে তোলপাড় চলছে। এদিন একাধিকবার ফোন করেও ভাস্করকে পাওয়া যায়নি। উৎপলের মোবাইল সুইচড অফ বলেছে। মহেন্দ্রনাথ অবশ্য যাবতীয় বিতর্ক এড়িয়ে গিয়েছেন। তাঁর দায়সারা কথা, ‘যা করার সবটাই রেজিস্ট্রার করেছেন। কেন অস্থায়ী কর্মীরা আন্দোলন করছে তা-ও জানি না।’

উপাচার্যহীন বিশ্ববিদ্যালয় চলছে রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের নির্দেশে। ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর সুসম্পর্কের কথা কারও অজানা নয়। আন্দোলনকারীদের নেতা রণজিৎ তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতির রাজ্য কমিটির সদস্য। আন্দোলনকারীদের অনেকেই বলছেন, শিক্ষা দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের অনুমোদন নিয়ে সহজেই বেতন বৃদ্ধি সংক্রান্ত সমস্যা মেটাতে পারেন তাঁরা। সেই পথে না হেঁটে কেন কমিটি নিয়ে ক্যাম্পাসে আন্দোলন করছেন তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।

এই মুহূর্তে

আরও পড়ুন