কুশল দাসগুপ্ত, শিলিগুড়িঃ
নতুন রূপে সেজে উঠছে শতাব্দীপ্রাচীন সেবকেশ্বরী কালীবাড়ি । শুধু পুজোপাঠ নয়, বহু দশক ধরে এই কালী মন্দির সেবকের অন্যতম পর্যটনস্থলও বটে। শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ির পাশপাশি প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে বহু মানুষ মন্দির দর্শনে আসেন। ৫০ লক্ষ টাকা খরচে মন্দিরের সংস্কার শুরু করেছে পরিচালন কমিটি। আগামীতে মন্দিরে লিফট অথবা এসকালেটার বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন।
সেবকেশ্বরী কালী মন্দির পরিচালন কমিটির সম্পাদক সুব্রত সাহা বলেন, ‘এটি একটি প্রাচীন মন্দির। কিন্তু মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণ ঠিকঠাক হয়নি। বৃষ্টি হলেই জল পড়ে। অনেক কিছু ভেঙে গিয়েছে। বিশ্রামাগারের অবস্থাও ভালো নয়। সেকারণে মন্দির নতুনভাবে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। প্রথম পর্যায়ে ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছে।’
আরও পড়ুনঃ আজ থেকে কর্কট রাশিতে সূর্য, নতুন বিনিয়োগের জন্য আজকের দিনটি অত্যন্ত শুভ
শিলিগুড়ি থেকে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে ২৫ কিলোমিটার দূরে পাহাড়ি জনপদ সেবক। সেখানেই রয়েছে সেবকেশ্বরী কালী মন্দির। মূল রাস্তা থেকে ১০৭টি সিঁড়ি বেয়ে মন্দিরে উঠতে হয়। প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মন্দিরে পুজো দেওয়ার জন্য লাইন পড়ে এখানে।
করোনেশন সেতুর মতো সেবকেশ্বরী কালী মন্দিরও পর্যটকদের কাছে সমানভাবে জনপ্রিয়। কিন্তু দীর্ঘদিন মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণ ঠিকঠাক হয়নি। বৃষ্টি হলে সিঁড়ি থেকে শুরু করে গোটা মন্দিরে জল পড়ে। বিশ্রামাগার, শৌচালয়, পানীয় জলের ব্যবস্থাও ভালো নয়। পুজো দিতে এসে ভক্তরা দু’দণ্ড বসতেও পারেন না। অথচ এই মন্দিরে প্রতিদিন প্রণামি হিসেবে প্রচুর টাকা ওঠে। বহু ভক্ত মন্দিরের উন্নয়নে আর্থিক সহযোগিতাও করেন। তারপরও কেন এমন হাল, সেই প্রশ্ন প্রায়ই ওঠে।
সম্প্রতি সেবকেশ্বরী মন্দির সংস্কার শুরু হয়েছে। মন্দিরের উপরে অনেকটা উঁচু গম্বুজ তৈরি করা হচ্ছে। যে গম্বুজ অনেকটা দূর থেকে দেখা যাবে। পাশাপাশি মন্দির এবং সংলগ্ন এলাকায় লোহার কাঠামো তৈরি করে টিনের ছাউনি দেওয়া হচ্ছে।
মন্দিরে পুজো দিতে এসেছিলেন মালবাজারের স্কুলপাড়ার বাসিন্দা সুবোধ সরকার। তাঁর কথায়, ‘দু’তিন মাস পরপর এখানে আসি। বহুদিন পর মন্দিরটি সংস্কার হচ্ছে। গত বছরও বর্ষায় পুরো জল থইথই অবস্থা ছিল। এবার নতুনভাবে মন্দির তৈরি হচ্ছে, খুব ভালো উদ্যোগ।’
আরও পড়ুনঃ আজ থেকে কর্কট রাশিতে সূর্য, নতুন বিনিয়োগের জন্য আজকের দিনটি অত্যন্ত শুভ
ইসলামপুর থেকে সেবক বেড়াতে এসে সপরিবারে মন্দিরে পুজো দিয়েছেন অনাবিল দত্ত। তিনি বললেন, ‘সেবকেশ্বরী কালীবাড়ি খুব জাগ্রত শুনেছি। তাই এখানে পুজো দিলাম। নতুনভাবে মন্দিরটি তৈরি হচ্ছে দেখে ভালো লাগছে।’
মন্দির পরিচালন কমিটির সম্পাদক বলেছেন, ‘মন্দিরের সিঁড়িগুলি স্টিলের ফ্রেম দিয়ে মুড়ে দেওয়া হবে।’ তাঁর কথায়, ‘এখানে ১০৭টি সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠতে হয়। এজন্য অনেক বয়স্ক মানুষ মন্দিরে উঠে মায়ের দর্শন করতে পারেন না। সেজন্য আগামীতে এখানে লিফট অথবা এসকালেটার বসানোর পরিকল্পনাও রয়েছে।’