ঐতিহাসিক গুরুত্বসম্পন্ন খিদিরপুরের মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়ি প্রোমোটিংয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেলেও, আটকে দিল কলকাতা পুরসভা। রবিবার ছিল কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তর প্রয়াণ দিবস। তার আগেই মেয়র স্পষ্ট জানিয়েছেন, প্রোমোটিংয়ের জন্য ওই বাড়ির কোনও প্ল্যান অনুমোদন দেবে না কলকাতা পুরসভা। খিদিরপুর রোডের উপর ফ্যান্সি মার্কেটের ঠিক সামনেই অবস্থিত বাড়িটিতে একসময় থাকতেন কবি। বহু বছর ধরে অযত্নে পড়ে থাকা ওই বাড়ি এখন ভগ্নপ্রায়। যদিও কলকাতা পুরসভার হেরিটেজ তালিকায় একসময় অন্তর্ভুক্ত ছিল বাড়িটি, পরবর্তীকালে তা বেসরকারি হাতে চলে যায়। স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রোমোটিং সংস্থা সেখানে বহুতল ও শপিং মল গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেছে। এমনকি, আদালতের এক রায়ে পুরসভা পরাজিত হওয়ার পর প্রোমোটাররাও উৎসাহী হয়ে বাড়ি ভেঙে নতুন করে বহুতল-সহ শপিং মল তৈরিতে উদ্যোগী হয়।
আরও পড়ুন: জাতীয় স্তরে উত্তরণ! বাড়ল দায়িত্ব; এসএফআই-এর সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হলেন সৃজন
এ ক্ষেত্রে কলকাতা পুরসভার হেরিটেজ বিভাগ অনড় মনোভাব নিয়েছে বাড়িটি রক্ষা করার জন্য। পুরসভা আবার সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করেছে। মাইকেলের সেই স্মৃতিবিজড়িত বাড়ি ইতিহাস মুছে যাওয়ার সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। এই পরিস্থিতিতে হেরিটেজ বিভাগ ফের সক্রিয় হয়েছে। মেয়র পরিষদ সদস্য স্বপন সমাদ্দার বলেন, “আমরা বাড়িটি রক্ষা করতে সবরকম চেষ্টা করছি। তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এই ইতিহাস বাঁচানো জরুরি।”
আরও পড়ুন: কুণালকে কুমন্তব্য সিপিএমের মীনাক্ষীর, হেসে ওড়ালেন তৃণমূল নেতা
মেয়রের হস্তক্ষেপে আপাতত থেমেছে প্রোমোটিং, তবে ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে প্রশাসনিক উদ্যোগ ও যথাযথ ঐতিহাসিক তথ্য সংরক্ষণের উপর। মেয়র ফিরহাদের এমন ঘোষণার পর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন ইতিহাসপ্রেমীরা ও হেরিটেজ রক্ষা আন্দোলনের কর্মীরা। মেয়র বলেছেন, “মধুসূদন দত্ত বহু বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। খিদিরপুরের এই বাড়িটিও তেমনই একটি। কিন্তু ঠিক কোন বাড়িতে তিনি দীর্ঘকাল ছিলেন, সেই বিষয়ে স্পষ্ট তথ্য নেই। আমি মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলেছি বিষয়টি পরিষ্কার করতে। তার আগে পর্যন্ত কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে কোনও নির্মাণে অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে না।” তিনি আরও বলেন, “আমরা চেষ্টা করছি তহবিল জোগাড় করে বাড়িটা সংস্কার করতে। শেষমেশ একটা স্থায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার, যাতে ঐতিহ্য নষ্ট না হয়।”