বাংলাদেশের ময়মনসিংহে কিংবদন্তি বাঙালি পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক ভিটে ভাঙার কাজ আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিল সেখানকার প্রশাসন। সেই সঙ্গে গঠন করা হয়েছে একটি কমিটি, যাদের দায়িত্ব হবে — কী ভাবে ঐতিহ্যবাহী এই বাড়িটি পুনর্গঠন বা সংরক্ষণ করা যেতে পারে, তা খতিয়ে দেখা।
ভারতের তরফে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের পরই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সরাসরি এই ঘটনার প্রতিবাদ করেন। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সরাসরি বাংলাদেশ সরকারের কাছে হস্তক্ষেপের আবেদন জানিয়েছিলেন। এরপরই জানা গেল, বাংলাদেশ প্রশাসন বাড়ি ভাঙার কাজ থেকে সরে এসেছে। বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়াও দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ পিছিয়ে যাচ্ছে সমুদ্র! ভূমিকম্পে কাঁপল সবকিছু, ধেয়ে আসছে সুনামি
বাংলাদেশের তরফে জানান হয়েছে, সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক ভিটে ভাঙার ঘটনা নিয়ে দুই বাংলায় যে প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে, তা ‘ভুল বোঝাবুঝি’। দাবি, বাড়িটি ভগ্নদশায় থাকায় সুরক্ষার কথা ভেবেই ভাঙা শুরু হয়েছিল। তবে নতুন করে সেখানে একটি আধুনিক কংক্রিটের ভবন নির্মাণ করে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা ছিল প্রশাসনের।
তাঁরা এও জানাচ্ছে, পুরনো কাঠামো রক্ষা করে সেখানে সংস্কৃতি কেন্দ্র তৈরি সম্ভব কি না, তা খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যেই একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, ভারত থেকে যে উদ্বেগ জানানো হয়েছে, তা সম্ভবত প্রকল্প সম্পর্কে পুরোপুরি তথ্য না পাওয়ার কারণেই।
আরও পড়ুনঃ রাগ বর্জন করুন, আজ ভুলেও এই কাজগুলি নয়
নয়াদিল্লির তরফে আগেই বিবৃতি দিয়ে জানান হয়, ‘উপেন্দ্রকিশোরের বাড়িটি শুধু একটি স্থাপত্য নয়, এটি ভারত ও বাংলাদেশের মিলিত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক। এই বাড়িকে সাহিত্য-স্মারক হিসেবে সংরক্ষণের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা উচিত। প্রয়োজনে ভারত সরকার সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।’
ঢাকার শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা মেহেদি জামান জানিয়েছিলেন, বাড়িটি গত দশ বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। শিশুদের নিরাপত্তার কথা ভেবে তা ভেঙে নতুন ভবন তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় অনুমোদনও এর প্রেক্ষিতে নেওয়া হয়েছে।