আগামী ৭ মে, বুধবার একাধিক রাজ্যে হবে মক ড্রিল। অশান্তির আবহে এমনই নির্দেশ দেওয়া হল কেন্দ্রের তরফে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, যে কোনও হামলার পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ যাতে নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারে, সেই কারণে এই ড্রিল করতে হবে।
যে পরিস্থিতিতে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এর আগে শেষবার এমন মক ড্রিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ১৯৭১ সালে। অর্থাৎ ঠিক যে বছর ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হয়, সেবার এমন মহড়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: যতদিন ইসলাম থাকবে, ততদিন সন্ত্রাসবাদ থাকবে; মুখ খুললেন তসলিমা নাসরিন
গত ২৪ ঘণ্টায় একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক সেরেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রতিরক্ষা সচিবের সঙ্গেও কথা বলেছেন তিনি। আর তারপরই এই মক ড্রিলের নির্দেশ পৌঁছল রাজ্যে রাজ্যে।
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলায় মৃত্যু হয় ২৬ জন পর্যটকের। পাক জঙ্গি সংগঠন সেই হামলার দায় নিয়েছে। এরপরই প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দেন, যে কোনও প্রান্ত থেকে খুঁজে বের করা হবে জঙ্গিদের। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও জানিয়েছেন, কাউকে রেয়াত করা হবে না।
রবিবার রাতের দিকে একেবার যুদ্ধকালীন তৎপরতার সঙ্গে ময়দানে নামে ভারতীয় বায়ুসেনা। সূত্রের খবর, রাত ৯টায় ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের একদম লাগোয়া ফিরোজপুর ক্যান্টনমেন্টে এই সামরিক মহড়া করে বায়ুসেনা। সীমান্ত লাগোয়া এলাকা হওয়া ঘাঁটি একেবারে অন্ধকার করে দিয়ে মহড়া চালায় সেনা।
আরও পড়ুন: দিশেহারা জঙ্গিরা; উপত্যকায় বিরাট সাফল্য, ধ্বংস জঙ্গি ঘাঁটি, সেনার হাতে যা জিনিস এল
এদিকে, গত ১১ দিন ধরে একটানা সীমান্তে গুলিবর্ষন করে চলেছে পাকিস্তান। প্রায় প্রতিদিন রাতেই সংঘর্ষ বিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে চলেছে পাক সেনা।
৭ই মে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে সিভিল ডিফেন্স (নাগরিক প্রতিরক্ষা) নিয়ে একটি মক ড্রিল (অনুশীলনী) অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। এর লক্ষ্য — কোনো শত্রু আক্রমণের সময় সাধারণ মানুষ কীভাবে নিরাপদ থাকবে, তা আগামভাবে প্রস্তুত করা ও সচেতনতা বাড়ানো।
এই অনুশীলন চলাকালীন নিচের পদক্ষেপগুলি নেওয়া হবে:
- বাতাসে হামলার সতর্কবার্তা (Air Raid Warning Siren) বাজানো হবে, যেন সকলে সেটির সিগন্যাল চিনতে পারে।
- সাধারণ মানুষকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে — কীভাবে আত্মরক্ষা করতে হবে এবং সংকটময় সময়ে কী করণীয়।
- ক্র্যাশ ব্ল্যাকআউট বা আলো নিভিয়ে ফেলার ব্যবস্থার অনুশীলন করা হবে।
- গুরুত্বপূর্ণ কারখানা বা স্থাপনাগুলিকে ঢেকে ফেলা (camouflaging) শেখানো হবে, যাতে শত্রুর নজরে না পড়ে।
- অবস্থান খালি করার (evacuation) পরিকল্পনা আপডেট ও তার রিহার্সাল করা হবে।
এইসব অনুশীলন আমাদের নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই ভয় না পেয়ে, সকলকে অংশগ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।
সচেতন নাগরিকই সুরক্ষিত নাগরিক।