Wednesday, 30 April, 2025
30 April, 2025
Homeগল্পBengali Short Story: "নীরব পৃথিবী চায়" (Part: 9)

Bengali Short Story: “নীরব পৃথিবী চায়” (Part: 9)

“নীরব পৃথিবী চায়”

   সৌমেন মুখোপাধ্যায়

 জীর্ণ, তৃষ্ণার্ত, ক্ষুধার্ত, জর্জরিত নরেনের শরীর চক্রবর্তীমশায়ের জুতোর আঘাত সহ্য করতে না পেরে মাটিতে পড়ে যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকে।

বাড়ীর সমস্ত জিনিসপত্র একে একে বাড়ীর বাইরে নিক্ষেপিত হতে থাকে। একসময় তাও বন্ধ হয়ে যায়, তৎপরিবর্তে মায়ের করুণ আর্তনাদ শুনে কাঁপতে কাঁপতে নরেন উঠে দাঁড়ায়। দরজার একটা পাল্লা নরেনের ভর সহ্য করে। বাড়ীর মধ্যে তাকিয়ে দেখে তার অসুস্থ মায়ের উপর চলছে অত্যাচার, অন্ধ বোনটাও বাদ যায়নি। চিৎকার করতে করতে নরেনের কন্ঠ শুকিয়ে যায়, জিব আরষ্ঠ হয়ে যায়,  তাসত্ত্বেও সে চিৎকার করে। বাড়ীর ভিতর থেকে বোনের চিৎকার শুনতে পায় নরেন “দাদাভাই………মা……”। বোনের করুণ চিৎকার শুনে নরেন আরো বেশী কাঁপতে থাকে।

আর পড়ুন: Kashi Bose Lane: পৌরপিতা মোহন কুমার গুপ্তর উদ্যোগে কাশী বোস লেনে চার দিনের প্রদশর্নী

একটা গগনভেদী চিৎকার করে সবকিছু চুপ হয়ে যায়। মাটিতে গড়াগড়ি দিতে থাকেন চক্রবর্তীমশায়, তার সমস্ত শরীরের রক্তের বান সমস্ত ঘরে বহে চলল। উকিলবাবু আর লেঠেলরা নীরব দর্শকের মতো বড় বড় চোখ করে সেই দৃশ্য দেখে মুখে টু’শব্দ করেনি।

চঞ্চলাদেবীর হাতের রক্তাক্ত বটি  এবার দড়াম করে মাটিতে পড়ে যায়। আর একধারে সুনিতা বোবার মতো দাঁড়িয়ে থাকে। তার সমস্ত শরীর শয়তানের লোভের বশীভূত হতে পারেনি। চক্রবর্তীমশায়ের ঘৃণিত পৈশাচিক অত্যাচারের বিরুদ্ধে তার মা আজ দেবী চামুন্ডার মত রুখে দাঁড়িয়েছেন। 

নরেন একবার “মা” বলে ডাকতেই চঞ্চলাদেবী থরথর করে কাঁপতে কাঁপতে মেঝেতে পড়ে যায়। তার সমস্ত শরীর পিশাচের রক্তে রঞ্জিত। শুধু নরেনের ডাকে মায়ের হৃদয় কেঁদে উঠে। চোখ দিয়ে দু’ফোঁটা জল তার গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ে। একবার পুত্রকে নাম ধরে বলেন, “নরেন, তোর বোনকে দেখিস “, তারপর সব চুপ।

আর পড়ুন: Today’s Horoscope: আজ ১৭ ই জানুয়ারি শুক্রবার ২০২৫; প্রেমের জীবনে বড় চমক এই চার রাশির

     অন্ধকার তখন সবে ঘনিয়ে এসেছে। জোনাকি পোকাও আজ আকাশে নেই।  মাঝে মাঝে বিদ্যুতের গর্জন- তর্জন আকাশে শোনা যায়। এরপর শুরু হয় ঝোড়ো হাওয়া, তার’ই প্রভাবে হ্যারিকেনের আলো এক ঝটকায় নিভে যায়। যতক্ষণ হ্যারিকেনের আলো জ্বলছিল ততক্ষণ সকলের মুখ আবছা দেখা যাচ্ছিল,  কিন্তু নিভে যাওয়ার পর সব অন্ধকার হয়ে যায়।

এই অন্ধকারে সকলের সামনে সুনিতার চাপা চিৎকার শুনা গেল। তাকে যেন কে নিয়ে সেই ঘর থেকে চলে যায়। কে বা সুনিতাকে নিয়ে চলে গেল এবং কেনই বা নিয়ে চলে গেল কেউ জানতে পারল না।

এই মুহূর্তে

আরও পড়ুন