‘বৃদ্ধ’ কন্ডোম! বয়স প্রায় দু’শো ছুঁইছুঁই। তা দেখতে ভিড় উপচে পড়ছে আমস্টারডামের একটি মিউজ়িয়ামে। কচিকাঁচা থেকে বুড়ো—সকলেই ভিড় জমাচ্ছেন। যাঁদের খুব একটা মিউজ়িয়ামে ঘোরার অভ্যাস নেই, তাঁরাও একবার ঢুঁ মেরে যাচ্ছেন।
উনবিংশ শতকের যৌনতা ও দেহ ব্যবসা নিয়ে প্রদর্শনী শুরু হয়েছে আমস্টারডামের রিকস মিউজ়িয়ামে। বলাই বাহুল্য প্রদর্শনীর স্টার অ্যাট্রাকশন এখন এই কন্ডোম। ভেড়ার অ্যাপেনডিক্স দিয়ে তৈরি এই কন্ডোমে আবার ছবিও আঁকা।
আরও পড়ুন: পানিহাটিতে ভরা রাস্তায় কাউন্সিলরকে চুলের মুঠি করে মার
তা বিশ্লেষণ করে ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, ছবিতে এক সন্ন্যাসিনীকে দেখা যাচ্ছে ‘সাদর আমন্ত্রণ’ জানাতে। সামনে তিন যাজক। মোটামুটি প্রত্যেকেরই যৌনাঙ্গ স্পষ্ট। যাজকদের একজন নেড়া, একজন রোগা, তৃতীয় সামান্য মোটা। সন্ন্যাসিনী আঙুল তুলে কারও দিকে ইঙ্গিত করছেন।
তবে তিন জনের মধ্যে কার দিকে তা স্পষ্ট নয়। ছবিটিতে লেখা রয়েছে ভয়লা মন চইকস— বাংলা করলে দাঁড়ায়, এই আমার পছন্দ! রসিক লোকজন বলছেন, নেড়া, মোটা, রোগার মধ্যে কাউকে একটা মনে ধরেছে সন্ন্যাসিনীর।
কন্ডোমটি ১৮৩০ সালের বলে জানিয়েছেন মিউজ়িয়াম কর্তৃপক্ষ। সেই সময় কন্ডোমের ব্যবহার নিয়ে যথেষ্টই আপত্তি ছিল চার্চের। কন্ডোমটির গায়ে আঁকা ছবি তাই চার্চের রক্ষণশীলতাকে ঠুকেই বলে মনে করছেন অনেকে।
আরও পড়ুন: দিল্লির বহুতলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড
তখন চার্চের আপত্তি থাকলেও কন্ডোমের ব্যবহার কিন্তু ছিল। তবে খুল্লামখুল্লা বিক্রি হতো না। পাওয়া যেত যৌনপল্লিতে। চুল কাটার সেলুনেও লুকিয়ে চুরিয়ে বিক্রি হতো। রাবারের কন্ডোম আসার আগে তখনকার কন্ডোম ছিল কাপড়ের, পশুর চামড়ার এমনকী কচ্ছপের খোলারও।
তবে সেগুলি মোটেই খুব কার্যকরী ছিল না। কন্ডোম ব্যবহারের পরেও গর্ভবতী হয়ে যাওয়ার আকছার ঘটনা ঘটত। এমনকী যৌন রোগও ছড়াত।
ফেরা যাক প্রদর্শনীর কন্ডোমে। এটি কখনও ব্যবহারই হয়নি। আল্ট্রা-ভায়োলেট রে প্রয়োগ করে এ সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছেন মিউজ়িয়ামের কিউরেটর জয়েস জ়েলেন। একটি নিলামে প্রথম এই কন্ডোমটি দেখেন জ়েলেন ও তাঁর সহকর্মীরা। তা দেখে রীতিমতো হেসে কুটোপাটি খেয়েছিলেন মিউজ়িয়ামের লোকজন। কিন্তু তখনই ঠিক করেন আগামী প্রদর্শনীতে কন্ডোমটিকে আনতেই হবে মিউজ়িয়ামে।
জ়েলেন জানিয়েছেন, নভেম্বর পর্যন্ত কন্ডোমটি থাকবে। দেখার ইচ্ছে থাকলে তার আগে একবার ঘুরে আসতেই পারেন আমস্টারডামের রিকস মিউজ়িয়ামে।