নাগপঞ্চমী পালনের নেপথ্যে পুরাণের একাধিক কাহিনি রয়েছে বলে মনে করা হয়। এর মধ্যে একদিকে যেমন রয়েছেন শ্রীকৃষ্ণ, অন্যদিকে রয়েছে সমুদ্রমন্থনের কাহিনিও।
নাগ পঞ্চমী হল নাগ দেবতাকে পূজা করার একটি গুরুত্বপূর্ণ হিন্দু উৎসব। এটি শ্রাবণ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে পালিত হয়। এই দিনে সর্পপূজা করা হয় এবং বিশ্বাস করা হয় যে এতে পরিবারে সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে এবং সাপের ভয় দূর হয়। এই উৎসবের নেপথ্যে বেশ কিছু পৌরাণিক কাহিনি প্রচলিত আছে। তার মধ্যে কয়েকটি প্রধান কাহিনি নিচে দেওয়া হলো।
আরও পড়ুনঃ শ্রাবণ শুক্লা পঞ্চমীতে সারাদিন শিব যোগ, কেরিয়ারে উন্নতি এই চার রাশির
শ্রীকৃষ্ণ ও কালিয়ানাগ দমন
সবচেয়ে প্রচলিত কাহিনিগুলির মধ্যে এটি অন্যতম। মনে করা হয়, শ্রীকৃষ্ণ যখন শিশু ছিলেন, তখন যমুনা নদীতে কালিয়া নামক এক বিশাল বিষধর সাপ বাস করত। এই সাপের বিষে যমুনার জল বিষাক্ত হয়ে গিয়েছিল এবং এর প্রভাবে গোকুলের মানুষ ও পশুপাখিদের জীবন বিপন্ন হয়ে উঠছিল। একদিন শ্রীকৃষ্ণ বল খেলতে গিয়ে বলটি যমুনা নদীতে ফেলে দেন। বল আনতে গিয়ে তিনি কালিয়া নাগের মুখোমুখি হন। কালিয়া নাগ শ্রীকৃষ্ণকে গ্রাস করার চেষ্টা করলে, শ্রীকৃষ্ণ তার বিরাট রূপ ধারণ করেন এবং কালিয়া নাগের ফণার উপর নৃত্য করতে শুরু করেন। শ্রীকৃষ্ণের নৃত্যের প্রভাবে কালিয়া নাগ দুর্বল হয়ে পড়ে এবং নিজের ভুল বুঝতে পেরে শ্রীকৃষ্ণের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে। শ্রীকৃষ্ণ কালিয়াকে প্রতিশ্রুতি দেন যে সে যদি যমুনা নদী ছেড়ে সমুদ্রে চলে যায়, তাহলে তিনি তাকে কোনো ক্ষতি করবেন না। কালিয়া নাগ সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে এবং সেদিন থেকেই এই তিথিতে নাগ পূজা শুরু হয়।
আরও পড়ুনঃ মোবাইলে আসক্ত হয়ে গোপনে বিয়ে! শিক্ষাদফতরের রিপোর্টে উদ্বেগ
সমুদ্র মন্থন ও বাসুকি নাগ
হিন্দু পুরাণের সমুদ্র মন্থনের কাহিনিতেও নাগের উল্লেখ পাওয়া যায়। দেবতা ও অসুররা যখন সমুদ্র মন্থন করে অমৃত লাভের চেষ্টা করছিলেন, তখন মন্থন দণ্ড হিসেবে মন্দার পর্বত এবং মন্থন রজ্জু হিসেবে বাসুকি নাগকে ব্যবহার করা হয়েছিল। এই মন্থনের ফলে বাসুকি নাগের শরীর থেকে প্রচুর বিষ নির্গত হয়েছিল, যা মহাদেব পান করে সৃষ্টিকে রক্ষা করেছিলেন। এই কাহিনিতেও নাগের বিশাল অবদান এবং দেবতাদের প্রতি তাদের সেবাকে স্মরণ করা হয়।