নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে সে দেশের সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কিকে বেছে নিল জেন জ়ি। বুধবার আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা কাঠমান্ডুতে সভা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অনলাইনে বিভিন্ন জেলা থেকে আন্দোলনকারী নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধিরা ওই আলোচনাসভায় যোগ দিয়েছিলেন।
ছাত্র-যুব আন্দোলনের জেরে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি ইস্তফা দিয়ে আত্মগোপন করেছেন। কিন্তু তার পরেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি নেপালে। বর্তমানে ভারতের পড়শি দেশের শাসনভার সেনার দখলে। রাস্তায় রাস্তায় টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী। এই পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের ‘মুখ’ নিয়ে মঙ্গলবার রাত থেকেই জল্পনা শুরু হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত কয়েক ঘণ্টার আলোচনার পরে পাঁচ হাজারেরও বেশি আন্দোলনকারী বেছে নিয়েছেন বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী সুশীলাকে।
আরও পড়ুনঃ ‘দুর্দিনে সঙ্গে আছি, দায়িত্ব ছাড়ি না’! নেপালের পরিস্থিতি দেখে তবেই কলকাতায় ফিরবেন মমতা
নেপালের সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, প্রথমে কার্কির কাছে সম্মতি প্রস্তাবটি পাঠানো হয়েছিল আন্দোলনকারীদের তরফে। তিনি প্রস্তাব বিবেচনার জন্য অন্তত ১,০০০ লিখিত স্বাক্ষর চেয়েছিলেন। কিন্তু প্রথমেই তিনি ২,৫০০-এরও বেশি স্বাক্ষর পেয়েছেন। তবে এই মুহূর্তে ক্ষমতার রাশ নেপালি সেনার হাতে। তারা জেন জ়ির প্রস্তাব মেনে নেবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার ওলির ইস্তফার পরে প্রাথমিক ভাবে আন্দোলনকারীদের একটি অংশ পরবর্তী সরকার প্রধান হিসেবে কাঠমান্ডুর নির্দল মেয়র, তথা জনপ্রিয় র্যাপার বছর পঁয়ত্রিশের বলেন্দ্র শাহ ওরফে বলেনের নাম সামনে এনেছিল।
৭২ বছর বয়সী সুশীলা কারকি নেপালের প্রথম মহিলা যিনি প্রধান বিচারপতি হয়েছিলেন। ২০১৬ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারি তাঁকে প্রধান বিচারপতি পদে নিয়োগ করেছিলেন। সুশীলার নাম সুপারিশ করেছিলেন সদ্য প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি, যিনি সেই সময়েও প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।
আরও পড়ুনঃ বাসে আগুন, রাস্তায় জনতাকে মার পুলিশের, জ্বলছে ফ্রান্স
আইনি যাত্রা শুরু করার আগে সুশীলা কারকি পেশায় শিক্ষিকা ছিলেন। সেই সময় থেকেই তাঁর সাহসী, দক্ষ ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছিল। কোনওভাবেই দুর্নীতি তাঁকে স্পর্শ করতে পারে না, এমনটাই জনমানসে বিশ্বাস তৈরি হয়।
তিনি ২০০৬ সালের সংবিধান খসড়া কমিটির সদস্য ছিলেন। ২০০৯ সালে তাঁকে নেপালের সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ বিচারপতি হিসাবে নিয়োগ করা হয়। পরের বছর তিনি স্থায়ী বিচারপতি হন। ২০১৬ সাবে তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পান। এরপর স্থায়ী পদে নিয়োগ করা হয়। বিচারব্যবস্থার পর এবার গোটা দেশ সামলানোর দায়িত্ব আসতে চলেছে সুশীলা কারকির কাঁধে।