প্রত্যাশামতোই মঙ্গলবারেই ইস্তফা দিয়েছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। জেন জির দুর্নীতিগ্রস্ত সরকার বিরোধী আন্দোলনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন ওলি। সেনা সূত্র জানিয়েছে, ইস্তফা দেওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রী ওলি নেপালের সেনাপ্রধান অশোক রাজ সিগডেলের সঙ্গে ফোনে সেনা সাহায্য চান। পরিস্থিতি সামাল দিতে সেনাবাহিনী নামাতে বলেন তিনি। এমনকী প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন থেকে নিরাপদে দেশত্যাগের জন্যও সেনাপ্রধানের কাছে কাতর অনুরোধ জানিয়েছিলেন ওলি। তখনই সেনাপ্রধান তাঁকে ইস্তফা দেওয়ার পরামর্শ দেন। সেনাপ্রধান স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, তিনি ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ালে একমাত্র তবেই বাহিনী পরিস্থিতি সামাল দিতে রাস্তায় নামবে। তখনই ওলির কাছে দিনের আলোর মতো স্পষ্ট হয়ে যায় যে, তাঁর রাজদণ্ডের সূর্য অস্তগামী হওয়া সময়ের অপেক্ষা।
মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীকে বাঁচাতে ও পালাতে সাহায্য করার জন্য প্রায় ডজনখানেক হেলিকপ্টার উড়ে যায় ভাইসেপতি মন্ত্রী আবাসন এলাকা থেকে। তাঁদের সকলকে ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু, সেই খবর পেয়ে গণঅভ্যুত্থানকারী প্রতিবাদীরা ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও জড়ো হয়ে যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়া খবরে প্রতিবাদীরা বিমানবন্দরের ধারে ড্রোন, লেজার লাইট ও আতসবাজি ধরিয়ে বিমান চলাচলে বাধা দিতে থাকে। যার ফলে নেপালের বিমানবন্দরগুলি থেকে বিমান চলাচল সম্পূর্ণ অচল হয়ে পড়ে।
সোমবার থেকে দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারের বিরুদ্ধে নবীন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা প্রবল বিক্ষোভ শুরু করে। সেই আন্দোলন দমন করতে সরকার ব্যাপক দমনপীড়ন চালালে প্রায় ২০ জনের মৃত্যু ও কয়েক শতাধিক জখম হন। তারই বিরুদ্ধে শাসক জোট সরকারের ভিতরে বাইরে প্রবল সমালোচিত হন। একের পর এক তাঁর মন্ত্রীরা পদত্যাগ করতে শুরু করেন। বিরোধী দলও তাঁর পদত্যাগ দাবি করে। শেষমেশ সেনাবাহিনী প্রধানমন্ত্রীকে ইস্তফা দিতে বলার পর পদত্যাগ করলেন ওলি।
আরও পড়ুনঃ জ্বলছে নেপাল, পুড়ছে নেপাল, বন্ধ হয়ে গেল শিলিগুড়ি থেকে কাঠমান্ডু বাস পরিষেবা
সূত্রে জানা গিয়েছে বেসরকারি হিমালয় এয়ারলাইন্সের বিমানে ওলি দুবাই পালিয়ে যেতে পারেন। সেনাবাহিনীর কাছে সেই মিনতিই করে রেখেছেন তিনি। যদিও ওলি চিকিৎসার জন্য দুবাই যাচ্ছেন বলে সরকারিভাবে জানানো হবে। ঘনিষ্ঠ সূত্র জানা গিয়েছে, আপাতত উপপ্রধানমন্ত্রীর ঘাড়ে দায়িত্ব চাপিয়ে দেশত্যাগ করছেন ওলি। অন্তর্বর্তী কিংবা সর্বদল সরকার নির্বাচন পর্যন্ত কাজ চালাতে পারে। তবে সবটাই নির্ধারিত হবে সরকারিভাবে ওলির দেশত্যাগের নিশ্চিত খবরের পর।