Tuesday, 17 June, 2025
17 June, 2025
Homeরাজ্যSSC Case: নতুন ‘বিড়ম্বনায়’ রাজ্য সরকার, এপ্রিলে এপ্রিলফুল

SSC Case: নতুন ‘বিড়ম্বনায়’ রাজ্য সরকার, এপ্রিলে এপ্রিলফুল

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘‘আমরা কারও চাকরি খেতে দেব না।’’ ঠিক এক বছর পর এ বছরের এপ্রিলে সুপ্রিম কোর্টও হাই কোর্টের সেই নির্দেশই বহাল রাখল।

অনেক কম খরচে ভিডিও এডিটিং, ফটো এডিটিং, ব্যানার ডিজাইনিং, ওয়েবসাইট ডিজাইনিং এবং মার্কেটিং এর সমস্ত রকম সার্ভিস পান আমাদের থেকে। আমাদের (বঙ্গবার্তার) উদ্যোগ - BB Tech Support. যোগাযোগ - +91 9836137343.

গত বছর ২২ এপ্রিল ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। কালক্ষেপ না করে সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেছিল রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘‘আমরা কারও চাকরি খেতে দেব না।’’ ঠিক এক বছর পর এ বছরের এপ্রিলে সুপ্রিম কোর্টও হাই কোর্টের সেই নির্দেশই বহাল রাখল। শীর্ষ আদালতেও বাতিল হয়ে গেল ২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগ হওয়া গোটা প্যানেল। যা শাসকদল তৃণমূল তথা রাজ্য সরকারের ‘নতুন বিড়ম্বনা’ বলে ইতিমধ্যেই চিহ্নিত হতে শুরু করেছে। বিরোধীরাও ময়দানে নেমেছে।

তৃণমূলের অন্দরের আলোচনায় প্রাথমিক ভাবে দু’টি অভিমত উঠে আসছে। একাংশের বক্তব্য, নিয়োগে অনিয়ম নিয়ে রাজ্য সরকার সম্পর্কে জনমানসে যে ‘নেতিবাচক ধারণা’ রয়েছে, তা আরও দৃঢ় হল। আরও এক বার কমিশনের ‘অপদার্থতা’ বেআব্রু হয়ে গেল। তবে শাসকদলের অন্য অংশ এর মধ্যেও ‘ইতিবাচক’ দিক খুঁজতে চাইছে। তাদের বক্তব্য, তিন মাসের মধ্যে নতুন করে নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে গেলে এই ধারণা আর থাকবে না। ফলে আগামী বছরের বিধানসভা ভোটেও এর কোনও প্রভাব পড়বে না।

আরও পড়ুন: ২৬ হাজার চাকরিই বাতিল! ২০১৬ সালের শিক্ষক নিয়োগের প্যানেল খারিজ সুপ্রিম কোর্টের, তিন মাসের মধ্যে নতুন নিয়োগ

গত বছর লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় প্রথম দফায় ভোট হয়েছিল ১৯ এপ্রিল। দ্বিতীয় দফার ভোট ছিল ২৬ এপ্রিল। প্রথম দফার ভোট হয়ে যাওয়ার পরে এবং দ্বিতীয় দফার ভোটের ঠিক আগে কলকাতা হাই কোর্ট ২০১৬ সালের এসএসসির পুরো প্যানেল বাতিল করে দিয়েছিল। শাসকদলের এক প্রথম সারির নেতার বক্তব্য, দ্রুততার সঙ্গে সেই সময়ে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া ছিল নবান্নের ‘রাজনৈতিক’ সিদ্ধান্ত। কারণ, চাকরিরতদের নবান্ন ‘বার্তা’ দিতে পেরেছিল, যোগ্যদের চাকরি চলে যাক, তা রাজ্য সরকার চায় না।

গত এক বছর ধরে একাধিক শুনানি হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। ‘যোগ্য’ এবং ‘অযোগ্য’ বাছাই করার কথা বলা হয়েছিল আদালতের তরফে থেকে। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। ফলে হাই কোর্টের নির্দেশে হস্তক্ষেপ করেনি প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ। বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, তিন মাসের মধ্যে নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। যা জেনে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেছেন, ‘‘যারা ঘুষ দিয়ে চাকরি পেয়েছে, তারা উচ্ছন্নে যাক! কিন্তু যারা যোগ্য, তাদের প্রতি এই রায়ে অবিচার হল।’’ তবে একান্ত আলোচনায় তৃণমূলের অনেকেই বলছেন, এই নির্দেশ শুধুমাত্র ২৬ হাজার চাকরিপ্রার্থী বা তাঁদের পরিবার-পরিজনের বিষয় নয়। সার্বিক ভাবে এই রায় জনমানসে রাজ্য সরকার, রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা এবং কমিশনের ভূমিকা নিয়ে ‘বিরূপ’ ধারণাকে আরও শক্তিশালী করবে।

কিন্তু তৃণমূলেরই ‘আশাবাদী’ অংশের দাবি, নির্বাচনী রাজনীতিতে এর সরাসরি কোনও প্রভাব পড়বে না। কারণ, ভোট এখনও এক বছর বাকি। তৃণমূলের এক সাংসদের কথায়, ‘‘লোকসভার মধ্যে তো হাই কোর্ট গোটা প্যানেল বাতিলের রায় দিয়েছিল। তার পরে আমাদের ফল তো ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের চেয়ে ভাল হয়েছিল।’’ তবে পোড়খাওয়া নেতাদের অনেকেই বলছেন, এই ধরনের ঘটনা ধারাবাহিক ঘটতে থাকলে তার প্রভাব সুদুরপ্রসারী হতে বাধ্য। তাঁদের মতে, বিন্দু বিন্দু করেই সিন্ধু হয়। তৃণমূলের এক নেতার কথায়, ‘‘আরজি কর আন্দোলনের সময়ে যে নাগরিক আন্দোলন দেখেছিলাম, তা ছিল সরকার-বিরোধী ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। এখন ভোটে তার প্রভাব পড়ছে না মানে ভবিষ্যতেও পড়বে না, তা হলফ করে বলা যায় কি?’’

আরও পড়ুন: বামপন্থায় ফাটল? দূরত্ব বাড়ছে এসএফআই-আরওআইফের? কি বলছে আরএসপি?

নিয়োগ দুর্নীতির গুচ্ছ গুচ্ছ অভিযোগ রয়েছে। অনেকে গ্রেফতার হয়েছেন। তাঁদের অনেকে এত দিনে জামিনও পেয়ে গিয়েছেন। যদিও প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এখনও জেলবন্দি এই নিয়োগ দুর্নীতি মামলাতেই। ঘটনাচক্রে, যে যে নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে, তা সবই পার্থের আমলের। সুপ্রিম কোর্টের ঘোষিত রায়ে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের যোগ্য এবং অযোগ্য বাছাই করা সম্ভব হয়নি। ২০১৬ সালে পরীক্ষা দিয়ে যাঁরা চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁরা নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়ায় আবেদন জানাতে পারবেন বলেও জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এখানেই শাসকদলের অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, সেই প্রক্রিয়া যদি এখন হয়, তা হলে এক বছর ধরে কমিশন তা করতে পারল না কেন? তবে পরিস্থিতি যে ‘জটিল’, তা প্রায় সকলেই মানছেন। এখন দেখার শিক্ষা দফতর এবং এসএসসি এর পর কী পদক্ষেপ করে। তৃণমূলই বা কী ভাবে ‘রাজনৈতিক’ মোকাবিলার ভাষা তৈরি করে।

এই মুহূর্তে

আরও পড়ুন