ফের এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সাক্ষী রইল বাংলা। শনিবার সন্ধ্যায় বারাসতের বারাসতের কদম্বগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের বামুনমোড়া এলাকায় এক গোডাউনে আগুন লাগে। দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে সমস্ত মজুত সামগ্রী। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিকে দমকলের বিরুদ্ধে দেরিতে আসার অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা।
জানা গিয়েছে, এদিন সন্ধ্যে ৭ টা নাগাদ বামুনমোড়া এলাকার একটি ডায়পারের গোডাউনে আগুন লাগে। এলাকার মানুষরাই কালো ধোঁয়া বেরোতে দেখে দমকলে খবর দেন। কিন্তু দমকল আসার আগেই আশেপাশের গোডাউনেও আগুন ছড়িয়ে যায়। গোডাউন সংলগ্নবাড়িগুলিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেইসমস্ত বাড়ির সদস্যদের নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: শুরু ধর্মীয় নেতা বাছাই! কার হাতে যাবে ইরান? মৃত্যুর আগেই মনোনয়ন খামেনেইয়ের
দুর্ঘটনার পর কেটে গিয়েছে প্রায় ৩ ঘণ্টা। ঘটনাস্থলে দমকলের ২০টি ইঞ্জিন পৌঁছেছে। তবে এখনও দেখা যাচ্ছে আগুনের লেলিহান শিখা। হতাহতের বিষয়ে স্পষ্ট এখনও কোনও খবর নেই। কিন্তু বিধ্বংসী আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে দমকল কর্মীদের। সেক্ষেত্রে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে গভীর রাত গড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না।
দমকল সূত্রে খবর, গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে আগুন ধরেছে বলে মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি গোডাউনের ভিতরে প্রচুর দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুনের তীব্রতা বেড়েছে। এই ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্কিত স্থানীয়রা। তাঁরা জানিয়েছেন, গোডাউন থেকে একের পর এক বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। তীব্রতা এতটাই যে গোটা এলাকা কেঁপে উঠছে।
দমকলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন স্থানীয়রা। তাঁদের অভিযোগ, খবর দেওয়ার অনেক পরে দমকলের কর্মীরা এসেছেন। ক্ষুব্ধ মানুষজন দমকলের একটি গাড়িতে ভাঙচুর চালায় বলেও অভিযোগ। তবে আগুনের তীব্রতা থাকায় রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। সূত্রের খবর, পরিস্থিতির মোকাবিলায় দমকলের আরও ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে নিয়ে আসা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যেখানে আগুন লেগেছে তার আশেপাশে পরপর গোডাউন রয়েছে। গোটা জায়গাটা কংক্রিটের পাঁচিল দিয়ে ঘেরা। কমপক্ষে ৮-১০টি গোডাউন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা। ঘটনার পরই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে যান বারাসতের সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। আগুন নেভানোর জন্য আশেপাশের এলাকা থেকেও জল আনা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
গত রবিবার খিদিরপুর বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। মুহূর্তের মধ্যে পুড়ে ছাই হয় বহু দোকান। সেখানেও দমকল দেরিতে আসার অভিযোগ করেছিলেন ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দারা। পরের দিনই ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদারদের জন্য আর্থিক সাহায্যের ঘোষণাও করেছেন তিনি।