কুশল দাশগুপ্ত, শিলিগুড়িঃ
বিপদের আশঙ্কা আগেই করা হয়েছিল। সেই আশঙ্কাই সত্যি হল। লাগাতার প্রবল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গ। নামল ধস, রাস্তা ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন বহু এলাকায়। দার্জিলিংয়ের মিরিকে ধস নেমে দুইজনের মৃত্যুর খবরও মিলেছে। শিলিগুড়ি থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে পাহাড়।
আরও পড়ুনঃ কোচবিহারের যমুনাদিঘি এখন এঁদো পানাপুকুর; বড়োদেবীর ভাসানে বির্তক
নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি হচ্ছিল টানা বিগত কয়েকদিন ধরে। শনিবারও প্রবল বৃষ্টি হয়। এই বৃষ্টির জেরেই বিজনবাড়ির পুলবাজারে ভাঙল রাস্তা। বহু পর্যটকের আটকে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভেঙে গিয়েছে দুধিয়া সেতুও। রাতের একটানা বৃষ্টিতে লোহার সেতুর একাংশ ভেঙে যায়। শিলিগুড়ি-মিরিক সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে এর জেরে। ধস নেমে ঋষিখোলা, পেডংয়ের অনেক রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
অন্যদিকে, মিরিক জুড়ে বিস্তীর্ণ অঞ্চলে নেমেছে ধস। মিরিকের বস্তিতে ধস নেমে মৃত্যু হয়েছে ৫ বাসিন্দার। দুর্যোগের জেরে বন্ধ ১০ নম্বর জাতীয় সড়কও। দার্জিলিং-কালিম্পংয়েও যোগাযোগের একাধিক রাস্তা বন্ধ। দার্জিলিং বিশপ হাউসের কাছেও ধস নেমেছে। সেখানে পাথর সরানোর কাজ চলছে।
দার্জিলিং জুড়ে একাধিক জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে। পুজোর পর বহু মানুষই পাহাড়ে ঘুরতে গিয়েছেন। লাগাতার বৃষ্টি, ধসের জেরে বহু পর্যটকের আটকে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ঘনঘন পড়ল বাজ, রাতভর তুমুল বৃষ্টি, কলকাতায় হানা দিলো বজ্রগর্ভ মেঘ
আবহাওয়ার লেটেস্ট আপডেট অনুযায়ী, দার্জিলিং, সিকিমের পাহাড়ে আপাতত বৃষ্টি ধরেছে। তবে আগামী ২৪ ঘণ্টায় আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়িতে কমলা সতর্কতা রয়েছে। আলিপুরদুয়ারে জারি রয়েছে লাল সতর্কতা।
ভুটানেও প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে, বিপদ বাড়বে ডুয়ার্সেরও। শনিবার সন্ধ্য়া থেকেই মুষলধারায় একটানা বৃষ্টি হচ্ছে সিকিম, দার্জিলিং, ডুয়ার্সে। একাধিক অঞ্চলে বৃষ্টি ডবল সেঞ্চুরি করেছে। লাগাতার বৃষ্টিতে বাড়ছে নদীর জলস্তরও। ফুঁসছে তিস্তা, তোর্সা, জলঢাকা-সহ একাধিক পাহাড়ি নদী। তিস্তার বাঁধে জল ছাড়ার হার ৩৫০০ কিউমেক ছাড়ানোর আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জানা গিয়েছে মিরিক এবং সুখিয়ায় ধসে চাপা পড়ে এক শিশু সহ মোট পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এছাড়াও, ধূপগুড়ি শহরের বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যেই, জাতীয় সড়কের উপর দিয়ে জল বইছে। ধূপগুড়ি থেকে ফালাকাটার ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কও জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ফলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।
জানা গিয়েছে, বানারহাট ব্লকের তোতাপাড়া বস্তি এলাকায় বাড়ির ভেতর দিয়ে নদীর জল বইছে। ডায়না নদীর জল ঢুকে পড়েছে গ্রামে।