দেশের ৭৮ বছরের স্বাধীনতার ইতিহাসে প্রথম রাজ্য। বামশাসিত কেরলে চরম দারিদ্রসীমার নীচে থাকবেন না এক জনও। আগামী নভেম্বরে কেরলকে চরম দারিদ্রমুক্ত হিসাবে ঘোষণা করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে রাজ্য সরকার। আগামী ১ নভেম্বর এই ঘোষণা করা হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে। মন্ত্রী এম বি রাজেশ বলেন, ‘‘দেশের মধ্যে প্রথম দারিদ্রমুক্ত রাজ্য হতে চলেছে কেরল। এটা অত্যন্ত গর্বের বিষয়।’’
আরও পড়ুনঃ “এমন বন্ধু আর কে আছে!” ভূতেরাও বন্ধু হতে পারে! তারা যখন বন্ধু হয়, তখন বুঝি মানুষকেও টেক্কা দেয়
রাজ্যকে দারিদ্রমুক্ত করতে পিনারাই বিজয়নের সরকার ‘এক্সট্রিম পভার্টি ইরাডিকেশন প্রজেক্ট’ (ইপিইপি) চালু করে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দুঃস্থ পরিবারগুলিকে চিহ্নিত করে তাঁদের জন্য প্রয়োজনীয় সব রকম ব্যবস্থা করাই মূল লক্ষ্য। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দুঃস্থ পরিবারগুলিকে চিহ্নিত করতে তৃণমূল স্তর থেকে সমীক্ষা শুরু করে রাজ্য সরকার। কেরলকে চরম দারিদ্রসীমামুক্ত করতে নানা পদক্ষেপ করা হয়। ইপিইপি প্রকল্পের মূল লক্ষ্য, রাজ্যে কেউ যেন চরম দারিদ্রসীমার নীচে না থাকেন।
স্থানীয় প্রশাসনগুলিকে সেই সব দুঃস্থ পরিবারগুলিকে চিহ্নিত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। রাজ্য প্রশাসন জানিয়েছে, দারিদ্রসীমার নীচে থাকা এমন ৬৪ হাজার পরিবারকে ইপিইপি-র মাধ্যমে চিহ্নিত করা হয়। তার পর সেই পরিবারগুলির খাদ্য, স্বাস্থ্য, বাসস্থান এবং জীবন নির্বাহের সংস্থান করেছে রাজ্য সরকার। মন্ত্রী এম বি রাজেশ জানিয়েছেন, লেফ্ট ডেমোক্র্যাটিক ফন্ট (এলডিএফ) সরকারের আমলে প্রথম এই লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়। তখন স্থির হয় পাঁচ বছরের মধ্যে কেরলকে চরম দারিদ্রসীমামুক্ত হিসাবে ঘোষণা করা হবে। মন্ত্রীর কথায়, ‘‘আমরা ১০০ শতাংশ সেই লক্ষ্য পূরণ করতে পেরেছি।’’
আরও পড়ুনঃ ‘সরকার পাল্টে দিন, বাংলায় অনুপ্রবেশ বন্ধ করব’! হুঙ্কার শাহের, কটাক্ষ মমতাকে
মন্ত্রী জানিয়েছেন, ৬৪ হাজার পরিবারকে এই প্রকল্পের আওতায় চরম দরিদ্র হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। তার পরই বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পের মাধ্যমে এই পরিবারগুলির উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়। ছোট ছোট প্রকল্পের মাধ্যমে পরিবারগুলির সমস্ত রকম চাহিদাগুলির উপর জোর দেওয়া হয়। তৃণমূল স্তরে সমীক্ষা চালানোর সময় জানা যায়, ৩৫ শতাংশ পরিবারের কোনও উপার্জন নেই। ২৪ শতাংশ পরিবারের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে। ২১ শতাংশ পরিবারের দু’বেলা ঠিকমতো খাবার জোটে না। ১৫ শতাংশের বাসস্থান নেই। এই সমস্যাগুলিকে চিহ্নিতকরণের পরই দারিদ্রমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয় বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী রাজেশ।
দেশে শিক্ষার হারে এক সময় শীর্ষে ছিল কেরল। বর্তমানে তা মিজ়োরামের দখলে থাকলেও বড় রাজ্যগুলির মধ্যে এগিয়ে কেরলই।





