মঙ্গলবার সকালটা এভাবে শুরু হবে ভাবেনি শহরবাসী। প্রবল বৃষ্টিতে কার্যত জলের তলায় কলকাতা। কোথাও হাঁটু-জল তো কোথাও বুক পর্যন্ত ডুবে গেছে। যারা অফিস বা বিভিন্ন কাজে বেরিয়েছিলেন রাস্তায় তাদের নাজেহাল পরিস্থিতি। এই অবস্থায় সমস্ত সরকারি স্কুলে পুজোর ছুটি ঘোষণা হয়ে গেল।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে, সব সরকারি স্কুলে মঙ্গলবার থেকেই পুজোর ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এইসব স্কুলগুলিতে পুজোর ছুটি শুরু। আইসিএসই (ICSE) এবং সিবিএসই (CBSE) বোর্ডের স্কুলগুলিকে মঙ্গলবার থেকে অন্তত ২ দিন ছুটি দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকেও আগামী ২ দিন অনলাইন ক্লাস করানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ নিজের পাড়ায় জল! মহাবিস্মিত ফিরহাদ; জনতার কাঠগড়ায় মেয়র
গত রাত থেকে টানা বৃষ্টিতে অবাক করার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে কলকাতায়। হেন কোনও জায়গা নেই যেখানে জল জমেনি। জমা জলে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে ইতিমধ্যে একাধিকজনের মৃত্যুও ঘটেছে। এই পরিস্থিতির জন্য মুখ্যমন্ত্রী দায়ী করেছেন সিইএসসি-কে। মঙ্গলবার দুপুরে একটি বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট বলেন— “এর দায় সিইএসসি-কে নিতে হবে। এখনই জরুরি ভিত্তিতে কর্মীদের নামাতে হবে। এখানে ব্যবসা করছে, আর আধুনিকীকরণের কাজ করছে রাজস্থানে। কলকাতায় কেন করছে না? বলতে বলতে আমার মুখ ব্যথা হয়ে গিয়েছে।”
মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট কথা, খোলা তার, জলমগ্ন রাস্তায় বিপদ আরও বাড়ছে। তাই স্কুল পড়ুয়ারা যাতে কোনও রকমভাবে অসুবিধার মধ্যে না পড়ে সেই কারণেই পুজোর ছুটি ৪ দিন আগেই দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
নাগাড়ে বৃষ্টিতে উত্তর থেকে দক্ষিণ, জলমগ্ন গোটা শহর। বহু রাস্তা, যেগুলিতে আগে জল জমেনি, সেগুলিও ডুবে গিয়েছে হাঁটু সমান জলে। গঙ্গায় ফের জোয়ার এলে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে বলে আশঙ্কা প্রশাসনের।
আরও পড়ুনঃ কলকাতা কি সত্যিই লন্ডন হইল! ১০০ টাকায় ‘হাতি’ চেপে অফিসমুখী জনতা
মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, গঙ্গায় জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে, নিকাশি খালগুলিতেও জল কানায় কানায় ভর্তি। ফলে খালে জল ফেলা হলেও তা আবার শহরের মধ্যেই ফিরে আসছে। বৃষ্টি না কমলে তিনি স্পষ্টত বলতেই পারবেন না যে জল আদৌ কখন নামানো যাবে। তবে মেয়র জানান, দুপুর দেড়টায় বড় বান আসবে। সেই বাণ কেটে গেলে তবেই জল নামানো সম্ভব হবে। আগে জল খালে যাবে, খাল থেকে নদীতে, তারপর সমুদ্রে। এর বাইরে কোনও উপায় নেই।