বাঁশবেড়িয়া হংসশ্বেরী মন্দির সারা বাংলার মধ্যে অন্যতম বিখ্যাত মন্দির। সারা বছর এখানে শান্তরূপে দক্ষিণাকালী হংসেশ্বরীর পুজো হয়। কালীপুজোর দিন মা রুদ্ররূপ ধারণ করেন। ওইদিন কেমন রূপ হয় মায়ের?
আরও পড়ুনঃ বেড়েই চলেছে পুজোর শ্রী, লক্ষ লক্ষ ভক্তের সমাগম; নৈহাটির বড়মার পুজো কখন?
এদিন মায়ের মুখে রূপোর মুখোশ, সোনার জিভ পরানো হয়। মাথায় মুকুট। এই রাজবেশ ধারণ করার পরে অমাবস্যায় পুজো শুরু হয়। পুজো শেষ হওয়ার পর রাজবেশ খুলে ফেলা হয়। মা তখন আবার শান্তরূপ ধারণ করেন।
বর্তমানে যেখানে হংসেশ্বরী মন্দির রয়েছে, তার পাশেও কয়েকটি মন্দির রয়েছে। রাজপরিবারের বাড়ির কিছু অংশ অবশিষ্ট রয়েছে। শোনা যায়, রাজা নৃসিংহ দেব রায় ১৮০১ সালে মন্দির তৈরির কাজ শুরু করেন। ১৮১৪ সালে তা শেষ হয়। তারপর হংসেশ্বরী মন্দিরে মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। বেনারস থেকে গঙ্গায় ভেসে আসা নিম কাঠের গুঁড়ি দিয়ে মূর্তি তৈরি হয়েছিল। মূর্তিতে কোনও জোড়া তাপ্পি দেওয়া হয়নি, টানা একটি নিমকাঠ কেটে তৈরি হয় এই দেবীমূর্তি।
আরও পড়ুনঃ হুগলির তারকেশ্বরের ‘ছেলে কালী’! খেলার ছলে শুরু পুজো পেরিয়েছে ১০০ বছর
বছরে দুটো বড় উৎসব হয় হংসেশ্বরী মন্দিরে। কালীপুজো আর স্নান যাত্রা। সাধারণ সময়ে সকাল সাতটায় মন্দির খোলে। দশটায় পুজো শুরু হয়। ভোগ নিবেদন হয়। দুপুরে ভোগ নিতে পারেন ভক্তরা। হংসেশ্বরী মন্দির হেরিটেজ সম্পত্তি। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার তত্বাবধানে রয়েছে।
মন্দিরের সেবাইত ধ্রুব চট্টোপাধ্যায় জানান,বছরে এক রাতের জন্য রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন মা। কালী পুজোর দিন সন্ধ্যা আরতির পর তাকে রাজবেশ পরানো হয়। রুপোর মুখোশ ও সোনার জিভ পরানো হয়। গায়ে কোন বস্ত্র থাকে না। ফুলমালা দিয়ে ঢাকা থাকেন দেবী। মা এদিন এলোকেশীরূপে দেখা দেন। পুজো শেষে ভোর চারটেয় সেসব আবার খুলে ফেলা হয়। শান্ত রূপে ফিরে আসেন মা। কালী পুজোয় ভক্তের ঢল নামে হংসেশ্বরী মন্দিরে। লাইন দিয়ে পুজো দেন ভক্তরা। আঁটোসাটো পুলিসি নিরাপত্তা থাকে।