পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় ঘটে যাওয়া ‘চিপসকাণ্ড’ বিতর্ক যখন চলছে। এর মধ্যেই এবার বিস্কুট চুরির সন্দেহে তেরো বছরের নাবালককে কাঠের টুকরো দিয়ে মেরে নাক ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক মুদি দোকানির বিরুদ্ধে। এখানেই শেষ নয়, জখম ছেলেকে সিটি স্ক্যান করাতে নিয়ে যাওয়ার সময় পথ আটকানোর অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। পুলিশ নাকি অভিযোগ দায়ের না করে টাকা পয়সা দিয়ে মিটিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন। শেষমেশ থানায় অভিযোগ দায়ের। তবে সেই অভিযোগ দায়েরের ১২ ঘণ্টা কেটে গেলেও এখনও অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেফতার করেননি।
মঙ্গলবার বিকেলে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটে উত্তর ২৪ পরগনার হাবরা থানার সংহতি স্টেশন লাগোয়া শলুয়া এলাকায়। আক্রান্ত নাবালকের বাবা সঞ্জয় হালদার। তাঁর অভিযোগ, তিনি তাঁর ছেলেকে সকালবেলা ২০ টাকা দিয়ে কাজে চলে যান। বিকেলে ছেলে বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে খেলার মাঠে যাচ্ছিল। তখন সংহতি শলুয়া রেলগেট লাগোয়া শচীন্দ্রনাথ দাসের মুদি দোকানের সামনে বিস্কুট কেনার দাঁড়িয়ে পড়ে। সঙ্গে ছিল নাবালকের আরও পাঁচ বন্ধু। বিস্কুট কিনে টাকা দেওয়ার আগেই দুই বন্ধু চলে যায়। অভিযোগ, শঙ্কর পাল নামে পাশের এক দোকানদার এসে শচীন্দ্রনাথকে বলেন, এই সকল নাবালকরা বিস্কুট নিয়ে চলে গেছে।
আরও পড়ুন: পুরী বনাম দীঘা! পুরীর ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছে দীঘা; হাসছেন প্রভু জগন্নাথ
অভিযোগ, এই কথা শোনা মাত্র মুদি দোকানের মালিক শচীন্দ্রনাথ দোকানের সামনে থাকা কাঠের টুকরো নিয়ে এই নাবালকদের উপর চরাও হয়। ঠিক তখন তিন নাবলক পালিয়ে গেলেও সঞ্জয় হালাদারের ছেলে সপ্তম শ্রেণীর পড়ুয়া নাবলকে ওই কাঠের টুকরো দিয়ে আঘাত করে নাক ফাটিয়ে দেওয়া হয়। নাবালকের চিৎকারের ছুটে আসেন স্থানীয়রা,গলগল করে তখন নাক দিয়ে রক্ত পড়ছে নাবালকের।
নাবালকের বাবার চঞ্চল্যকর অভিযোগ, ছেলেকে মিথ্যা অভিযোগে মেরেছে। অথচ, ছেলেকে ডাক্তারের কাছে না নিয়ে গিয়ে প্রমাণ লোপাটের জন্য দোকানের সামনে পরে থাকা তাজা রক্ত ধুতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। সঞ্জয়বাবুর চঞ্চল্যকর দাবি, মছলন্দপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ছেলেকে ডাক্তার দেখানোর পরে ডাক্তার বাবু ছেলেকে সিটি স্ক্যান করানোর কথা বলেন,সেইমতো ছেলেকে নিয়ে কলকাতা সিটি স্ক্যান করাতে নিয়ে যাওয়ার সময় অভিযোগ সংহতি স্টেশনের কাছে পথ আটকায় হাবরা থানার বাউগাছি পুলিশ ফাঁড়ির এস.আই সুব্রত নায়েক। এই পুলিশকর্তার স্পষ্ট বক্তব্য অভিযোগ না করে টাকা পয়সা দিয়ে মিটিয়ে নিন।
আরও পড়ুন: কেঁচো খুঁড়তে কেউটে! বাবা বাংলাদেশের পেনশনভোগী, বাংলাদেশি সৈকত ভারতের সরকারি কর্মী, হলেন কীভাবে?
অবশেষে রাত ১২ টা নাগাদ হাবড়া থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। তবে অভিযোগ দায়েরের বারো ঘণ্টা পরও অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। অভিযুক্ত শচীন্দ্রনাথ দাস বলেন, “আমি যখন লাঠি উঁচিয়ে শাসন করছিলাম, তখন ওই নাবালক পালাতে গিয়ে নাকে লেগে যায়।” প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সম্প্রতি পাশকুঁড়ায় এক নাবালক চিপস চুরির অপবাদে আত্মহত্যা করে। সেও সপ্তম শ্রেণিতে পড়ত। এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে ফের একই ঘটনা। ছেলের অবস্থা ভাল নয়। খারাপ। আমার ছেলেকে চুরির সন্দেহে মেরেছে। তারপর ডাক্তারের কাছে না নিয়ে গিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছে।