কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী নীতির ফলে দেশের ১০ শ্রমিক সংগঠনের ডাকা ভারত বনধের বিক্ষিপ্ত প্রভাব পড়েছে কয়েকটি রাজ্যে। প্রায় ৩০-৪০ কোটি শ্রমিক-কৃষক এই সাধারণ ধর্মঘটে শামিল হবেন বলে কেন্দ্রীয় শ্রমিক নেতারা দাবি করেছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে ১৭ দফা দাবিতে এই বনধ চলছে বুধবার সকাল থেকে।
আরও পড়ুন: কোচবিহারে গ্রেপ্তার সিপিএমের জেলা সম্পাদক; স্বাভাবিক ছন্দে শিলিগুড়ি
এদিকে, বিহারে আলাদা করে এদিনই বনধের ডাক দিয়েছে কংগ্রেস-আরজেডির মহাগাঁটবন্ধন জোট। বিধানসভা নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনের স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন (SIR) কার্যকর করে লক্ষ লক্ষ ভোটার বাতিল করার চক্রান্তের প্রতিবাদে বিহার বনধের ডাক দেওয়া হয়েছে। বুধবার সকালে সেই বনধে যোগ দেন বিহারের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব ও কংগ্রেসের সাংসদ রাহুল গান্ধী। বিহার বনধকে কেন্দ্র করে জায়গায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। আরজেডি ও কংগ্রেস সমর্থকরা রাস্তা অবরোধ করতে কয়েক জায়গায় টায়ার জ্বালিয়ে দিয়। ৩০ নম্বর জাতীয় সড়কের মানের এলাকায় পাটনা লাগোয়া একটি রাস্তা অবরোধ করে বিরোধী জোট।
এদিকে, আরজেডির ছাত্র সংগঠন জেহানাবাদ স্টেশনে অবরোধ করায় ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। ভারত বনধের পাশাপাশি রাজ্যে বিরোধী দলগুলির ডাকা মিলিত বনধে সবথেকে বেশি প্রভাব পড়ে বিহারে। আরওয়ালে জোট সমর্থকরা জাতীয় সড়ক ১৩৯ ও জাতীয় সড়ক ১১০ সম্পূর্ণ অবরোধ করে দেয়। পাটনা সচিবালয় হল্টের সামনে পাপ্পু যাদবের বাহিনী ট্রাকে করে আসে। রেললাইনের উপর ট্রাক রেখে দেওয়ায় সব ট্রেন চলাচল আপাতত বন্ধ রয়েছে।
বিহার বনধে সমর্থকরা শ্রমজীবী এক্সপ্রেসের চলাচল বন্ধ করে দেয়। বিহিয়া স্টেশনে ট্রেনটি আটকে রয়েছে। জাতীয় সড়ক ৩১ বন্ধ করে দেওয়ায় রাস্তার দুধারে অগুনতি পণ্যবাহী ট্রাক দাঁড়িয়ে রয়েছে। সকালেই দ্বারভাঙা স্টেশনে নমো ভারত ট্রেন রুখে দেয় আরজেডি কর্মীরা।
আরও পড়ুন: ৬০০ টাকা রোজ চাই, যাদবপুরের রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে দিল ধর্মঘটীরা
অন্যদিকে, ওড়িশার খুর্দা জেলার সিটুর কর্মীরা ভুবনেশ্বর যোগাযোগকারী জাতীয় সড়ক অবরোধ করায় যান চলাচলে ব্যাপক প্রভাব পড়ে। ভারত বনধে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে বর্তমানে দেশের একমাত্র বামশাসিত রাজ্য কেরলে। কোট্টায়ামের সমস্ত দোকান ও হাটবাজার, মলে এদিন সকাল থেকে ঝাঁপ ফেলা ছিল। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও ঠিকা মজুররাও এই বনধের সমর্থনে ছিলেন। কোচি ও কোল্লাম জেলায় বনধ সমর্থনকারীরা কেরল রাজ্য পরিবহণের বাস আটকানোর চেষ্টা করেন। এছাড়াও কোঝিকোড়, মালাপ্পুরম, কান্নুর এবং কাসারগোড়েও এদিন জনজীবন সম্পূর্ণ স্তব্ধ ছিল।
দক্ষিণের তামিলনাড়ু, কর্নাটক, তেলঙ্গানায় বিক্ষিপ্তভাবে বনধ সমর্থকরা মিছিল-মিটিং করলেও তেমন কোনও প্রভাব পড়েনি। বেঙ্গালুরুর ফ্রিডম পার্কে কয়েক হাজার বনধ সমর্থক জড়ো হয়েছেন। সেখানে মিছিল করে একটি সভার আয়োজন করেছে শ্রমিক সংগঠনগুলি। এর ফলে একে রোজকার যানজটে জেরবার বেঙ্গালুরু এদিন একেবারে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পুলিশ ইতিমধ্যেই শহরের রাস্তাঘাটের অবস্থার আপডেট দেখে বেরনোর পরামর্শ দিয়েছে এবং ফ্রিডম পার্কে কাছাকাছি গাড়ি নিয়ে যেতে নিষেধ করেছে।