‘অপারেশন সিঁদুর’ এবং ভারত-পাকিস্তানের সেনা সংঘর্ষের পর পাঁচ মাসও কাটেনি। তার মধ্যেই আর এক পড়শি দেশের সঙ্গে অনুরূপ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ল ইসলামাবাদ। আফগানিস্তানের তালিবান নিয়ন্ত্রিত সেনাবাহিনী শনিবার রাতে পাকিস্তানে হামলা চালিয়েছে। রাত থেকে চলছে গোলাগুলি। উভয় পক্ষই দাবি করছে, তারা সফল। এর ফলে পাক-আফগান সীমান্তে ক্রমে উত্তাপ বাড়ছে। প্রতিবেশী ইরান সংযত হওয়ার অনুরোধ করেছে দুই দেশকে।
আরও পড়ুনঃ ক্ষেপেছে কাবুলিওয়ালারা! পাকিস্তানের দিকে এগোচ্ছে তালিবান
শনিবার আফগান সেনার তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, কাবুলে পাকিস্তানি আগ্রাসনের জবাবে তালিবানশাসিত বাহিনী পাকিস্তানে হামলা চালিয়েছে। সীমান্তের বহু জায়গায় পাক নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে আফগান সেনার সংঘর্ষ চলছে। পরে তালিবানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্র এনায়াত খোয়ারাজ়ম সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে জানান, পাকিস্তানে তালিবানের ‘অভিযান সফল’ হয়েছে। তবে ফের পাক আগ্রাসন দেখা গেলে তার যোগ্য জবাব দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
বিতর্কের সূত্রপাত বৃহস্পতিবার থেকে। ওই দিন পাকিস্তানি সেনা আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে আকাশপথে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। কাবুলের দক্ষিণ-পূর্বে পর পর দু’টি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গিয়েছিল। এই ঘটনায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আফগান সার্বভৌমত্বে আঘাতের অভিযোগ আনে তালিবান সরকার। তার জবাব দেওয়ার কথাই বলা হয়েছে সেনার শনিবারের বিবৃতিতে। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন সীমান্তে সংঘর্ষের কথা জানিয়েছে। সে দেশের মন্ত্রী মহসিন নকভি সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘জনবহুল এলাকায় আফগান বাহিনীর এমন হামলা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে। পাকিস্তানের বীর সৈনিকেরা যোগ্য জবাব দিয়েছে। কোনও ধরনের উস্কানি সহ্য করা হবে না।’’
আরও পড়ুনঃ খেলা হবে! তেজস্বীর গড়ে পিকে! অমেঠিতে রাহুলের মতো পরিণতির হুঁশিয়ারি
পাক-আফগান আন্তর্জাতিক সীমান্তে মোতায়েন সৈন্যরা তালিবানের একাধিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে পাল্টা হামলা চালিয়েছে বলে দাবি। সংঘর্ষে ব্যবহৃত হয়েছে ট্যাঙ্ক, রাইফেল এবং হালকা ও ভারী যুদ্ধাস্ত্র। মধ্যরাতের পর গোলাগুলি কিছুটা কমলেও এখনও সীমান্তে উত্তেজনা রয়েছে। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের প্রধান অভিযোগ, সেখানে ক্ষমতাসীন তালিবান পাকিস্তানের মাটিতে অপর জঙ্গিগোষ্ঠী পাকিস্তানি তালিবানকে (টিটিপি) সহযোগিতা করছে। আফগান সরকার সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।
পাক-আফগান সংঘর্ষের এই সময়কে তাৎপর্যপূর্ণ বলে অনেকে মনে করছেন। সম্প্রতি ভারত সফরে এসেছেন আফগানিস্তানের তালিবান মন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। সপ্তাহখানেক থাকবেন। এই প্রথম তালিবানের কোনও মন্ত্রী ভারতে এলেন। দুই দেশের সম্পর্ক, বিশেষত তালিবান সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের ক্ষেত্রে এই সফর গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। এমনিতে আফগানিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক বরাবর বন্ধুত্বপূর্ণ। তবে ২০২১ সালে তালিবান ক্ষমতায় আসার পর কাবুলে ভারতীয় দূতাবাস বন্ধ করে দেয় নয়াদিল্লি।