সন্ত্রাসবাদকে রাষ্ট্রীয় নীতিতে পরিণত করেছে পাকিস্তান, ব্রিকস সম্মেলনে এমনই কড়া বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, “সন্ত্রাসবাদকে নিন্দা করা আমাদের সুবিধামতো নয়, বরং নীতিগত অবস্থান হওয়া উচিত।”
এই বার্তা শুধু ভারতের পক্ষেই নয়, আন্তর্জাতিক স্তরেও এক স্পষ্ট অবস্থান। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে উঠে এসেছে, সন্ত্রাসবাদে পাকিস্তানের প্রত্যক্ষ ভূমিকা এবং এই ইস্যুতে আন্তর্জাতিক স্তরে নীরব থাকা দেশগুলির অস্বচ্ছ অবস্থান।
আরও পড়ুন: অভয়া কাণ্ডের এক বছর, অভিশপ্ত দিনে নবান্ন অভিযানের ডাক পরিবারের
সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাম অঞ্চলে একটি ভয়াবহ সন্ত্রাসবাদী হামলায় ২৬ জন পর্যটকের মৃত্যু হয়। হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল পাকিস্তান-যোগ যুক্ত সংগঠন। সেই ঘটনার পরই ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালায় এবং পাকিস্তানে ৯টি জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করে।
BRICS সম্মেলনে বক্তৃতার সময় নরেন্দ্র মোদী বলেন, “ভারত সন্ত্রাসবাদের শিকার। পাকিস্তান, তার মদতদাতা। কাজেই ভুক্তভোগী আর অপরাধীকে এক পাল্লায় মাপা চলে না।”
তিনি আরও বলেন, যারা রাজনৈতিক বা ব্যক্তিগত লাভের জন্য সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে মুখ খোলে না, তারা প্রকৃতপক্ষে মৌন সমর্থন দিচ্ছে। এটা কখনও গ্রহণযোগ্য নয়।
এবছরের BRICS সম্মেলন অনুষ্ঠিত হল ব্রাজিলের রিও ডি জেনেইরো শহরে। সম্মেলনের ‘রিও ডি জেনেইরো ডিক্লারেশন’-এ BRICS-ভুক্ত দেশগুলি স্পষ্টভাবে বলে, “সন্ত্রাসবাদ যে উদ্দেশ্যে, যেখানেই, যেই করুক না কেন – তা অপরাধ এবং অগ্রহণযোগ্য।”
তারা জম্মু-কাশ্মীর হামলার সরাসরি উল্লেখ করে বলে, “আমরা ২২ এপ্রিল ২০২৫-এ জম্মু-কাশ্মীরে হওয়া ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলাকে তীব্রভাবে নিন্দা জানাই। ২৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, সন্ত্রাসবাদের সব রূপ ও প্রকাশের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে লড়াই করব।”
যদিও ঘোষণাপত্রে পাকিস্তানের নাম সরাসরি লেখা হয়নি, কিন্তু সীমান্তপারের সন্ত্রাসবাদ, অর্থ জোগান, ও নিরাপদ আশ্রয়ের মতো শব্দগুলি দিয়ে যে ইঙ্গিত কোথায়, তা স্পষ্ট।
২০১৭ সালে চিনের জিয়ামেনে অনুষ্ঠিত BRICS সম্মেলনের ঘোষণাপত্রে যদিও সরাসরি লস্কর-ই-তইবা, জইশ-ই-মহম্মদ, তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান-এর নাম উল্লেখ করা হয়েছিল, এবার সেগুলি বাদ থাকলেও সুর আরও কড়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: অবস্থান স্পষ্ট করল দিল্লি; তিন বিদেশি সংবাদমাধ্যমের এক্স অ্যাকাউন্ট বন্ধ ভারতে
ঘোষণাপত্রে আরও বলা হয়েছে, “আমরা সন্ত্রাসবাদ দমনে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সমন্বিত পদক্ষেপে বিশ্বাস করি। জাতিসংঘের আওতায় ‘Comprehensive Convention on International Terrorism’ দ্রুত গৃহীত হোক, এই দাবিও জানাই।”
নরেন্দ্র মোদী জানান, ২০২৬ সালে ভারত BRICS সম্মেলনের আয়োজক দেশ হবে। সন্ত্রাসবাদ বিরোধী আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টায় তখনও ভারত তার অবস্থানে অনড় থাকবে।