বুধবার রাতে পর পর কয়েকটি বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল। ঘটনাচক্রে, আফগান তালিবান নেতা তথা সে দেশের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির ছ’দিনের ভারত সফরের গোড়াতেই!
আরও পড়ুনঃ ‘বন্ধু’ ট্রাম্পকে ফোনে অভিনন্দন প্রধানমন্ত্রী মোদীর, গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক থামিয়ে কথা বললেন নেতানিয়াহু
সংবাদ সংস্থা এএফপি জানাচ্ছে, বুধবার রাতে অন্তত দু’টি জোরালো বিস্ফোরণ ঘটেছে কাবুল শহরের প্রাণকেন্দ্রে। আফগান সরকারের মুখপাত্র জ়বিউল্লা মুজাহিদও এক্স পোস্টে বিস্ফোরণের কথা স্বীকার করে নিয়ে জানিয়েছেন, এ সংক্রান্ত তথ্য পরে দেওয়া হবে। যদিও তালিবানের একটি সূত্র উদ্ধৃত করে প্রকাশিত খবরে দাবি, পাকিস্তানি বায়ুসেনার যুদ্ধবিমান বা ড্রোন হামলার কারণেই এই বিস্ফোরণ। ওই খবরে দাবি, পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে সক্রিয় তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) বিদ্রোহী বাহিনীর কয়েকটি ডেরা রয়েছে কাবুলে। সেগুলিকেই নিশানা করেছে পাক বায়ুসেনা।
প্রায় দেড় দশক ধরে পাক সেনার বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছে টিটিপি। আফগানিস্তানের শাসক তালিবানের একাংশ থেকেও তার মদত পাচ্ছে বলে ইসলামাবাদের অভিযোগ। টিটিপি-কে ‘ফিতনা আল খোয়ারিজ়’ বলে চিহ্নিত করে পাক সরকার এবং সেনা। এর আগে গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশ লাগোয়া আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশে হামলা চালিয়েছিল পাক বায়ুসেনার যুদ্ধবিমান।
আরও পড়ুনঃ সতর্কতা জারি! হাতে আর সময় নেই, পিছিয়ে যাচ্ছে সমুদ্র, ১ ঘণ্টাতেই আছড়ে পড়বে সুনামি!
ইসলামাবাদের দাবি, টিটিপি বিদ্রোহীদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ওই হামলা চালানো হয়। যদিও আফগান তালিবানের অভিযোগ, বারমাল জেলায় লামান-সহ সাতটি গ্রাম লক্ষ্য করে একের পর এক বিমান হামলা চালানো হয়েছিল। মৃত্যু হয়েছিল মহিলা, শিশু-সহ ৪৬ জন সাধারণ মানুষের।
২০২১-এর ১৫ অগস্ট তালিবান আনুষ্ঠানিক ভাবে কাবুল পুনর্দখল করেছিল। আফগানিস্তানে দ্বিতীয় বার তালিবানি শাসন কায়েম হওয়ার পরেই সে দেশে পাততাড়ি গোটাতে শুরু করে আমেরিকা। প্রাথমিক ভাবে ইসলামাবাদের সঙ্গে সম্পর্ক ভাল থাকলেও আফগান তালিবান ঔপনিবেশিক জমানার ডুরান্ড লাইনকে ভিত্তি করে সীমানা নির্ধারণের বিরোধিতা করার পরেই সম্পর্ক খারাপ হতে শুরু করেছিল। অন্য দিকে, ক্রমশ নয়াদিল্লির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে শুরু করে আফগানিস্তানের নতুন শাসকদের। এই পরিস্থিতিতে পাক সামরিক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই এখন আফগানিস্তানে সক্রিয় সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ইসলামিক স্টেট-খোরাসান (আইএসকে) এবং লশকর-এ-ত্যায়বার মধ্যে সমঝোতা গড়ে তুলে বালোচ এবং টিটিপির মোকাবিলায় সক্রিয় হয়েছে।