নবম শ্রেণির ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার সংশ্লিষ্ট বেসরকারি স্কুলের সম্পাদক জগন্নাথ মাহাতো। তাঁর বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছিল নিহত ছাত্রকে মারধর করার। মঙ্গলবার সাতসকালে তাঁকে গ্রেফতার করল কেন্দা থানার পুলিশ। ঘটনার সূত্রপাত রবিবার সন্ধ্যায়। পুরুলিয়ার কেন্দায় একটি বেসরকারি স্কুলের হোস্টেলের ভেতর থেকে উদ্ধার হল নবম শ্রেণির ছাত্রের মৃতদেহ। যা ঘিরে ছড়াল উত্তেজনা।
আরও পড়ুনঃ বনসৃজন; বর্তমানে দেশের ও আমাদের রাজ্যের পরিস্থিতি
জানা গিয়েছে, ওই নাবালকের বাড়ি স্কুল থেকে ২০০ মিটার দূরত্বে। কিন্তু পড়়াশোনার সুবাদেই হস্টেলে থাকত সে। রবিবার প্রতিদিনের মতোই কোচিংয়ের পড়াশোনা সেরে হস্টেলে নিজের ১২ নং ঘরে চলে যায় ওই পড়ুয়া। রাতের দিকে পড়ে হইচই। পড়ুয়ার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে কর্তৃপক্ষ।
পরিবারের অভিযোগ, তাঁদের সময় মতো খবর দেয়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ। অন্য পড়ুয়াদের থেকে ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়েছেন তাঁরা। এদিন নিহতের মা বলেন, ‘ওর বন্ধুদের মুখে শুনলাম, ওকে নাকি শনিবার স্কুলের এক শিক্ষক খুব মেরেছে। সেই কারণেই রবিবার অন্য পড়ুয়ারা ওঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল। তারপর দেখে এই কাণ্ড।’ স্কুলের অন্য পড়ুয়ারা আবার অভিযোগ তুলেছে এই স্কুল সম্পাদকের বিরুদ্ধে। শনিবার নিহত ছাত্রকে তিনি মারধর করেছিলেন বলে অভিযোগ একাংশের পড়ুয়াদের। উল্লেখ্য, সোমবার সকালে নাবালক মৃত্যুর ঘটনা ঘিরে পারদ চড়ে এলাকায়। পুরুলিয়ার মানবাজার রাজ্য সড়কে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন স্থানীয়রা। ৯ ঘণ্টা ধরে পথ অবরোধ করে চলে আন্দোলন। দাবি, গ্রেফতার করতে হবে অভিযুক্ত সম্পাদককে। এরপর আন্দোলনকারীদের দাবি মেনেই অভিযুক্ত জগন্নাথ মাহাতো ও তাঁর ভাইকে আটক করে পুলিশ। কিন্তু অভিযুক্তের ভাইয়ের বিরুদ্ধে কোনও লিখিত অভিযোগ না থাকায় তাঁকে ছেড়ে দেয় কেন্দা থানার পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় জগন্নাথ মাহাতোকে।
আরও পড়ুনঃ আজ থেকেই বাড়ি বাড়ি শুরু SIR কাজ, আতঙ্কিত হওয়ার প্রশ্নই নেই
বলে রাখা প্রয়োজন, জগন্নাথ মাহাতো ছাড়াও অভিযোগ উঠেছে ওই বেসরকারি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নারায়ণ মাহাতো, সহ-প্রধান শিক্ষক গুণধর মাহাতো ও শিক্ষক বিদ্যুৎ মাহাতোর বিরুদ্ধে। স্থানীয় সূত্রে জগন্নাথ মাহাতো এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা। পুরুলিয়া তৃণমূল সাংগঠনিক জেলা কমিটির সদস্য। ২০০৮ সালে এই স্কুলটি তৈরি করেন তিনি।
এদিন বিজেপি জেলা সাধারণ সম্পাদিকা ময়না মুর্মু বলেন, ‘এই রাজ্যে ছেলেমেয়েরা সুরক্ষিত নয়। পুলিশ মামলা ঘোরানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। আত্মহত্যা বলে দায় ঠেলে দিচ্ছে। আমরা চাই এই ঘটনার পূর্ণ তদন্ত হোক। নাবালকের মা বিচার পাক।’ অন্যদিকে স্থানীয় বামনেতারা অভিযোগ তুলেছেন, ওই স্কুলে মদের আসর বসানোর। তাঁদের কথায়, ‘এটা কোনও স্কুল ছিল না। এখানে মদের আসর বসত। এখনই বন্ধ হওয়া উচিত।’


                                    


