Tuesday, 17 June, 2025
17 June, 2025
Homeরাজ্যWest Bengal Education: স্কুলে গেলেও পড়ানোয় মন নেই বহু ‘যোগ্য’ শিক্ষকের

West Bengal Education: স্কুলে গেলেও পড়ানোয় মন নেই বহু ‘যোগ্য’ শিক্ষকের

চেনা স্কুল। চেনা চেনা মুখ। কিন্তু পরিবেশটা যেন বেমালুম বদলে গিয়েছে।

অনেক কম খরচে ভিডিও এডিটিং, ফটো এডিটিং, ব্যানার ডিজাইনিং, ওয়েবসাইট ডিজাইনিং এবং মার্কেটিং এর সমস্ত রকম সার্ভিস পান আমাদের থেকে। আমাদের (বঙ্গবার্তার) উদ্যোগ - BB Tech Support. যোগাযোগ - +91 9836137343.

চেনা স্কুল। চেনা চেনা মুখ। কিন্তু পরিবেশটা যেন বেমালুম বদলে গিয়েছে। চাকরিহারা শিক্ষকদের আন্দোলনের চাপে স্কুল সার্ভিস কমিশন বাধ্য হয় ‘যোগ্য’ শিক্ষকদের তালিকা প্রকাশ করতে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুলে যেতে পারবেন ২০১৬-এর এসএসসি প্যানেলের ‘যোগ্য’ শিক্ষকরা। তার মধ্যেই তাঁদের বসতে হবে যোগ্যতা যাচাইয়ের পরীক্ষায়।

মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পরে স্কুলেগুলোতে একাদশ শ্রেণির ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। নতুন ক্লাসে পড়ানোর প্রস্তুতিও শুরু করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। তবে নতুন ক্লাসে পাঠদান নিয়ে খুব একটা উৎসাহী নন ২০১৬-এর প্যানেলের ‘যোগ্য’ শিক্ষকরা। তাঁদের মনে অনিশ্চয়তার কালো মেঘ। নতুন ক্লাসে পড়ানোর মেয়াদ তো সাকুল্যে আটটা মাস? তারপর? এ দিকে, প্রধানশিক্ষকদের আশঙ্কা, শিক্ষকের অভাবে বাঁচিয়ে রাখা যাবে তো উচ্চ মাধ্যমিকের অনুমোদন?

আরও পড়ুন: বিরাটহীন ভারত, রাখলেন না বোর্ডের অনুরোধ; টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে নিলেন কোহলিও

স্কুল সার্ভিস কমিশন যোগ্যদের তালিকা জমা না-দেওয়ায় সুপ্রিম কোর্ট ২০১৬ সালের শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী নিয়োগের পুরো প্যানেল বাতিল করে দেয়। পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের রিভিউ পিটিশনের প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ‘যোগ্য’ শিক্ষকদের পাঠদান চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। চাকরিহারা শিক্ষকদের আন্দোলনের চাপে স্কুল সার্ভিস কমিশন ‘যোগ্য’ শিক্ষকদের তালিকাও প্রকাশ করে। সেই তালিকা সামনে আসার পরে তাঁরা স্কুলে যাওয়াও শুরু করেন।

রকম শিক্ষামূলক আয়োজন নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে যেমন উৎসাহ থাকে, তেমনই উৎসাহী থাকেন শিক্ষকরাও। তবে, এ বার মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পরে পাঠদানের ব্যাপারে উৎসাহী নন ২০১৬-এর ‘যোগ্য’ শিক্ষকরা। ডিসেম্বরের পরে চাকরি আদৌ থাকবে কি না তা নিয়ে সংশয়ে আছেন তাঁরা।

হলদিয়ার চকদ্বীপা হাইস্কুলের পদার্থবিদ্যার শিক্ষক কার্তিক আদক ২০১৬-এর প্যানেলের ‘যোগ্য’ শিক্ষক। গ্রীষ্মের ছুটি পড়ার আগে স্কুলে যোগ দিয়েছেন তিনি। প্রতি বছর গ্রীষ্মের ছুটিতে ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন জায়গায় বিজ্ঞান সেমিনারে নিয়ে যেতেন তিনি। এ বার বিজ্ঞান শিবির নিয়ে তেমন উৎসাহী নন ওই শিক্ষক।

আরও পড়ুন: দ্বিগুণ ভাড়া গরুমারার ৪ বনবাংলোর

তাঁর কথায়, ‘গরমের ছুটি পড়ার আগে স্কুলে যাওয়া শুরু করেছি। কিন্তু পড়ানোর ব্যাপারে আগের মতো উৎসাহ পাচ্ছি না। তাই, এ বার গরমের ছুটিতে বিজ্ঞান শিবির নিয়ে মাথা ঘামাইনি। ডিসেম্বরের পরে চাকরিই যদি না থাকে, কী হবে এ সব ভেবে?’

‘যোগ্য’ শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ মাত্র আট মাস। তার মধ্যে গরম আর পুজোর ছুটিতে কেটে যাবে প্রায় দু’মাস। চাকরির স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেওয়ায় অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকা ইতিমধ্যে মেডিক্যাল ও চাইল্ড কেয়ার লিভের আবেদন করেছেন। এই দু’টি ছুটি মিলতে পারে চার মাস পর্যন্ত। হাতে রয়েছে ক্যাজুয়াল লিভও।

ফলে চাকরির নিশ্চয়তা না-মেলা পর্যন্ত অনেক শিক্ষক এই আট মাস স্কুলে না-গিয়ে ছুটি নেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, ‘কী হবে স্কুলে গিয়ে? ছ’বছর চাকরি করার পরে আবার পরীক্ষায় বসতে হবে। ছ’বছর ছাত্রদের পড়িয়েছি। চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নিইনি। দু’মাস পড়াশোনা করার পরে আদৌ কি পরীক্ষায় পাশ করা সম্ভব? তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি স্কুলে যাব না। পাওনা ছুটিগুলো নিয়েই সময়টা কাটিয়ে দেবো।’

বহু স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগে কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, দর্শন, নিউট্রিশনের মতো বিষয়ের মাত্র একজন করে শিক্ষক। যোগ্য হিসেবে ওই সব শিক্ষকরা স্কুলে

ফিরে এলেও আট মাস পরে তাঁরা না থাকলে ক্লাস কী ভাবে হবে?

নারায়ণগড়ের শশিন্দা সাগরচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দীপঙ্কর তিওয়ারি বলেন, ‘আমার স্কুলের ১৭জন শিক্ষকের মধ্যে আট জনের চাকরি বাতিল হয়েছিল। পরে ছ’জন যোগ্য স্কুলে ফিরতে পারলেও কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশনের একমাত্র শিক্ষকের নাম বাতিলের তালিকায়। ফলে ওই বিষয়ে আপাতত কোনও শিক্ষকই নেই। অথচ উচ্চ মাধ্যমিকে ওই বিষয়টি রয়েছে। সরকার নিশ্চয় কোনও পদক্ষেপ করবে। সেই আশাতে উচ্চ মাধ্যমিকে ছাত্র ভর্তি নেব। তবুও এ ব্যাপারে একবার উচ্চ মাধ্যমিক সংসদের কাছে চিঠি পাঠিয়ে জানতে চাইব।’

দাঁতনের মোহনপুর রাজা রামচন্দ্র শিক্ষা নিকেতনের চার জন শিক্ষকের চাকরি গিয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন দর্শনের একমাত্র শিক্ষক। স্কুলে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে ১৪ জন ছাত্র ভর্তিও হয়েছে। কিন্তু ৩১ ডিসেম্বরের পরে কী হবে?

প্রধান শিক্ষক সুকুমার শাসমলের কথায়, ‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী সরকার নিশ্চয় নতুন নিয়োগের পথে হাঁটবে। না হলে আংশিক সময়ের শিক্ষক দিয়ে ক্লাস চালাতে হবে।’ শিক্ষক নেই, এই যুক্তিতে ছাত্র ভর্তি না-করা হলে স্কুলের উচ্চ মাধ্যমিকের অনুমোদন বাতিল হয়ে যাবে। আবার স্কুল চালাতে গেলেও দরকার শিক্ষক। ফলে, দোটানায় পড়েছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা।

এই মুহূর্তে

আরও পড়ুন