উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কেন্দ্র যা-ই পদক্ষেপ করুক, তাতে পূর্ণ সমর্থন রয়েছে বিরোধীদের। বৃহস্পতিবার সর্বদল বৈঠক শেষে এমনটাই জানালেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’ সূত্রকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, রুদ্ধদ্বার ওই বৈঠকে গোয়েন্দা-ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে নিয়েছে কেন্দ্র। প্রতিবেদন অনুসারে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, “যদি কিছু ভুল না-ই হয়ে থাকে, তা হলে আমরা এখানে বসে আছি কেন? কোথাও না কোথাও ব্যর্থতা রয়েছে, সেটিই খুঁজে বের করতে হবে।”
জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে পর্যটকদের উপর নৃশংস জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৬ জন। দেশজুড়ে এই ঘটনার নিন্দা ও ক্ষোভের আবহে কেন্দ্র সরকারকে যেকোনও কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য পূর্ণ সমর্থন জানাল বিরোধীরা।
আরও পড়ুন: বিশ্বের সামনে ‘বেআব্রু’ পাকিস্তান! রাষ্ট্রদূতদের বৈঠকে পহেলগাঁও পরিস্থিতি ব্যাখ্যা ভারতের
বুধবার সন্ধ্যায় সর্বদলীয় বৈঠকে বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও গোয়েন্দা বিভাগের শীর্ষ আধিকারিকরা সমস্ত রাজনৈতিক দলের নেতাদের পহেলগামের ঘটনার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেন। লোকসভায় বিরোধী দলের নেতা রাহুল গান্ধী বলেন, “সব রাজনৈতিক দল একযোগে এই বর্বর হামলার নিন্দা করেছে এবং সরকারকে যেকোনও পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি।” প্রধানমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে রাহুল বলেন, যা অ্যাকশন নেওয়ার নিন। পুরো সাপোর্ট করব।
এদিনের সর্বদল বৈঠকের আগে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক বসেছিল। সেই বৈঠকেও সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার জন্য পাকিস্তানকে তুলোধনা করা হয়। সেই সঙ্গে কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানানো হয়।
পরে সর্বদল বৈঠকে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে বলেন, “আমরা চাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কাশ্মীরে শান্তি ফিরে আসুক।” তিনি আরও জানান, রাহুল গান্ধী আগামীকাল অনন্তনাগে যাবেন, যেখানে আহতদের চিকিৎসা চলছে।
আরও পড়ুন: হুগলির রিষড়ার হরিসভার BSF জওয়ানকে জোর করে আটকে রাখল পাকিস্তান
তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের পাশে আমরা রয়েছি। গোটা দেশকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়তে হবে। সকল রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে বার্তা দেওয়া হয়েছে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার আবেদন জানিয়েছি।”
সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজুর পরে জানান, এদিনের বৈঠকে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বিভাগ ও সরকারের শীর্ষ আধিকারিকরা সংসদের সদস্যদের বিস্তারিত জানিয়েছেন। কোথায় ত্রুটি হয়েছিল এবং কী পরিস্থিতিতে এই হামলা ঘটেছে তা জানানো হয়েছে। গোটা দেশ এই কঠিন সময়ে একজোট রয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে কাশ্মীরের বইসরন উপত্যকায় লস্কর-ই-তোইবার একটি শাখা সংগঠনের জঙ্গিরা হঠাৎ গুলি চালায় নিরীহ পর্যটকদের উপর। ‘মিনি সুইৎজারল্যান্ড’ নামে খ্যাত সেই মনোরম অঞ্চলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে মুহূর্তেই। নিহতদের মধ্যে একজন নেপালের নাগরিকও রয়েছেন, বাকি ২৫ জন ভারতের ১৪টি রাজ্যের বাসিন্দা।