বিহারের নির্বাচনী তালিকা সংশোধন ঘিরে তৈরি হওয়া বিতর্কের মাঝে বুধবার এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতার সাক্ষী হলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। জীবিত থেকেও যাঁদের ভোটার তালিকায় ‘মৃত’ বলে দেখানো হয়েছে, তাঁদের সঙ্গে বসে চা খেলেন তিনি। আর সেই অভিজ্ঞতার জন্য কটাক্ষ করে ধন্যবাদ জানালেন নির্বাচন কমিশনকে।
রাহুল এক্স-এ লিখেছেন, ‘জীবনে অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে… কিন্তু জীবনে প্রথমবার ‘মৃত’ মানুষদের সঙ্গে চা খেলাম। এই অনন্য অভিজ্ঞতার জন্য ধন্যবাদ নির্বাচন কমিশনকে।’ তিনি একটি চার মিনিটের ভিডিও শেয়ার করেন, যেখানে দেখা যায় সাতজন ‘মৃত’ ভোটারের সঙ্গে কথা বলছেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ বুনো হাতির হামলা; বানারহাটে মৃত্যু দুই ব্যক্তির
রাহুল জানতে চান, কীভাবে তাঁরা জানতে পারলেন কমিশন তাঁদের ‘মেরে ফেলেছে’। উত্তরে এক ব্যক্তি বলেন, ‘আমরা জানতে পারি খসড়া তালিকা প্রকাশের পর, যেখানে ৬৫ লক্ষ নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমি জীবিত… এসেছি জানাতে আমি মরিনি। আমাদের পঞ্চায়েতে অন্তত ৫০ জন আছেন, যাঁরা মৃত নন।’
অন্য এক ব্যক্তি জানান, এঁরা সবাই বিহারের রাঘোপুরের বাসিন্দা, যা আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবের আসন। বন্যার কারণে আরও কয়েকজন ‘মৃত’ ভোটার সেই বৈঠকে আসতে পারেননি। এক ৮৫ বছরের বৃদ্ধাকেও ভোটার তালিকায় মৃত দেখানো হয়েছে।
এনিয়ে এক কংগ্রেস কর্মী অভিযোগ করেন, ‘পুনঃযাচাইয়ের কাগজপত্র জমা দিয়েও এঁদের নাম মুছে দেওয়া হয়েছে। মৃত ঘোষিত ভোটারদের পূর্ণ তালিকাও প্রকাশ করেনি কমিশন।’ তাঁদের অভিযোগ, এটা কেবল কোনও কেরানির ভুল নয়, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার স্পষ্ট উদাহরণ।
আরও পড়ুনঃ পুতিন যুদ্ধ না থামালে ভয়ঙ্কর পরিণতি হবে, হুঙ্কার ট্রাম্পের
সুপ্রিম কোর্টে এই ইস্যুতে বুধবার সকালে শুনানি হয়। আদালত প্রাঙ্গণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়েছেন ‘মৃত’ ঘোষণা হওয়া বৃদ্ধা ও অন্যরা। রাহুল তাঁদের আশ্বস্ত করেছেন, ভোট চুরি তিনি হতে দেবেন না।
বিহার ভোটের আগে বিরোধী জোটের অন্যতম স্লোগান হয়ে উঠেছে ‘ভোট চুরি’ রুখে দেওয়া। কমিশনের এই ‘বিশেষ নিবিড় সংশোধন’ পদ্ধতি নিয়ে মামলা সুপ্রিম কোর্টে ঝুলছে, যা আগামী বছর বাংলায়, তামিলনাড়ু ও অসমে এবং ২০২৭-এ উত্তরপ্রদেশে হাই প্রোফাইল ভোটের আগে বড় নজির গড়ে দিতে পারে।
কংগ্রেস পরে এই সাত ‘মৃত’ ভোটারের নাম প্রকাশ করে, রামিকবল রায়, হরেন্দ্র রায়, লালমুনি দেবী, বাচিয়া দেবী, লালওয়াতি দেবী, পুনম কুমারী ও মুন্না কুমার, সকলেই রাঘোপুরের বাসিন্দা।
রাহুল গান্ধী ইতিমধ্যেই কমিশন ও বিজেপির মধ্যে ‘যোগসাজশ’-এর অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর দাবি, কর্নাটক ও মহারাষ্ট্রে গত বছর ভোট জালিয়াতির ষড়যন্ত্র হয়েছে, আর বিহার ভোটের ক্ষেত্রেও একই চেষ্টা চলছে।