Friday, 4 July, 2025
4 July, 2025
Homeসমস্তShantanu Sen: দু'বছরের জন্য স্থগিত রেজিস্ট্রেশন সাসপেন্ড, চিকিৎসকের পদ নিয়ে টানাপড়েন; রেজিস্ট্রেশন...

Shantanu Sen: দু’বছরের জন্য স্থগিত রেজিস্ট্রেশন সাসপেন্ড, চিকিৎসকের পদ নিয়ে টানাপড়েন; রেজিস্ট্রেশন বাতিল হওয়ার পরই যা সাফাই 

আমার রেজিস্ট্রেশনে MBBS, DMRD কোয়ালিফিকেশন রয়েছে। DMRD হচ্ছে রেডিওলজি কোয়ালিফিকেশন রয়েছে। এটার ভিত্তিতেই আমি রেডিওলজিস্ট হিসাবে প্র্যাকটিস করি।

অনেক কম খরচে ভিডিও এডিটিং, ফটো এডিটিং, ব্যানার ডিজাইনিং, ওয়েবসাইট ডিজাইনিং এবং মার্কেটিং এর সমস্ত রকম সার্ভিস পান আমাদের থেকে। আমাদের (বঙ্গবার্তার) উদ্যোগ - BB Tech Support. যোগাযোগ - +91 9836137343.

রাজনীতি এবং চিকিৎসা, দুই জগতেই পরিচিত মুখ শান্তনু সেন। তবে এবার চিকিৎসকের পদ নিয়ে শুরু হল টানাপড়েন। ভুয়ো বিদেশি ডিগ্রি ব্যবহার করে দিনের পর দিন রোগী দেখার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হলেন প্রাক্তন আইএমএ প্রেসিডেন্ট তথা তৃণমূলের বরখাস্ত নেতা শান্তনু সেন। বৃহস্পতিবার তাঁকে তলব করেছিল ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিল (WBMC)। সেখানেই তদন্ত শেষে জানিয়ে দেওয়া হয়, দু’বছরের জন্য স্থগিত করা হচ্ছে তাঁর রেজিস্ট্রেশন। এই সময়ের মধ্যে চিকিৎসক হিসেবে কোনও প্র্যাকটিস করতে পারবেন না তিনি।

আরও পড়ুন: স্কুলের হস্টেল থেকে উদ্ধার ছাত্রের দেহ; ‘খুন হয়েছে’ বলছে পরিবার

অভিযোগ, বিদেশি সংস্থার দেওয়া এফআরসিপি ডিগ্রি-র অপব্যবহার করেছেন শান্তনু সেন। কাউন্সিলের অনুমতি বা রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই সেই ডিগ্রি ব্যবহার করে পরিচয়পত্রে তা যুক্ত রেখেছিলেন। রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান সুদীপ্ত রায়ের বক্তব্য, ‘ভুয়ো ডিগ্রি সংক্রান্ত অভিযোগ সত্যি বলেই প্রমাণিত হয়েছে। কাউন্সিলকে না জানিয়ে ওই ডিগ্রি ব্যবহার করাটা পুরোপুরি নিয়মবিরুদ্ধ।’

অভিযোগ ওঠার পরে অবশ্য পাল্টা সাফাই দেন শান্তনু। তাঁর দাবি ছিল, কাউন্সিল তাঁকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হেনস্থা করছে। তাঁর কথায়, ‘এফআরসিপি একটি সাম্মানিক ডিগ্রি। এর জন্য আলাদা করে রেজিস্ট্রেশন করানোর প্রয়োজন পড়ে না। কাউন্সিল প্রতিহিংসার বশে এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।’ এমনকি অভিযোগ ওঠার পর তিনি ১০ হাজার টাকা জমা দিয়ে ডিগ্রি রেজিস্ট্রেশনের আবেদনও করেন। যদিও পরে সেই আবেদন পর্যন্ত বাতিল হয় এবং তাঁর দাবি অনুযায়ী, টাকাও ফেরত দেওয়া হয়নি।

আরও পড়ুন: মন্ত্রীকেই তাঁর দলেরই লোকজন বললেন, “ধান্দাবাজ-চিটিংবাজ-তোলাবাজ”! অস্বস্তিতে সিদ্দিকুল্লা 

এ বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের আর এক চিকিৎসক নেতা ডা. নির্মল মাজি বলেন, ‘শান্তনু সেনকে সাসপেন্ড করা মেডিক্যাল কাউন্সিলের সঠিক পদক্ষেপ। দলের পক্ষ থেকেও তাঁকে আগেই সাসপেন্ড করা হয়েছে, কারণ তাঁর আচরণে দল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

রাজনৈতিক মহলের মতে, আইএমএ-র প্রাক্তন সভাপতি হওয়া সত্ত্বেও এমন বিতর্কে জড়িয়ে পড়া শান্তনু সেনের পক্ষে বড় ধাক্কা। এখন দেখার, এই ঘটনার পর আইনি পথে কী পদক্ষেপ নেন তিনি। তবে আপাতত অন্তত দু’বছরের জন্য ‘ডাক্তার শান্তনু সেন’ নামটি শোনা যাবে না কোনও চেম্বারে।

রেজিস্ট্রেশন বাতিল হওয়ার পর কী বললেন শান্তনু?

শান্তনু সেনের দাবি, তাঁর ডিগ্রি বৈধই,  রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদনও করেছিলেন, আরটিআই-ও করেছিলেন। কিন্তু তিনি কোনই উত্তর পাননি। তাঁর কথায়, “আমার রেডিওলজির যোগ্যতা রয়েছে। যদি অন্যায় করতাম, আমি আমার অজ্ঞতাটা মেনে নিয়ে কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে চলে যেতাম।”

সাংবাদিক বৈঠকে শান্তনু সেন বলেন, “এই মেডিক্যাল কাউন্সিলে আমি নিজে কিছুদিন আগে পর্যন্ত সরকারি নমিনি হিসাবে কাজ করেছি। আমার রেজিস্ট্রেশনে MBBS, DMRD কোয়ালিফিকেশন রয়েছে। DMRD হচ্ছে রেডিওলজি কোয়ালিফিকেশন রয়েছে। এটার ভিত্তিতেই আমি রেডিওলজিস্ট হিসাবে প্র্যাকটিস করি।” নিজের ডিগ্রিগুলোও তিনি ক্যামেরার সামনে তুলে ধরেন।

তাঁর দাবি, তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে DMRD তে প্রথম হয়েছিলেন, গোল্ড মেডেল পেয়েছিলেন। তার সার্টিফিকেটও দেখান। পরবর্তীকালে FRCP করেন ২০১৯ সালে।

শান্তনু বলেন, “বেঙ্গল মেডিক্যাল অ্যাক্ট ১৯১৪,  ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল কাউন্সিল অ্যাক্ট ১৯৫৬ ধারা অনুযায়ী ডাকা হয়। আমি নাকি FRCP ডিগ্রিটা রেজিস্টার করিনি, তাতে নিয়ম ভেঙেছি। প্রথম ওনারা যে ধারাগুলোর কথা উল্লেখ করেছেন, তাতে বলা হয়েছে অ্যাডিশনাল ডিগ্রিগুলোকে রেজিস্ট্রার করতে হবে। কোথাও কোনও টাইম ফ্রেম দেওয়া নেই।” তাঁর দাবি, তিনি তারিখ উল্লেখ করে দেখিয়ে দিয়েছিলেন, ঠিক কবে কিনি রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদন করেছিলেন। তার জন্য ১০ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছিল বলেও দাবি শান্তনুর। তাঁর কথায়, বারবার আরটিআই করেছি। চিঠি করেছি। একটা চিঠিরও উত্তর দেওয়া হয়নি। তাহলে ধরে নিতে পারি, রেজিস্ট্রেশন হয়ে গিয়েছে।”

তিনি বলেন, “আমি এসে প্রমাণ করে দিয়ে যাই, কোনও নিয়ম ভাঙা হয়নি। তারপরও আজকে ডেকে পাঠানো হল। আমার রেডিওলজির যোগ্যতা রয়েছে। যদি অন্যায় করতাম, আমি আমার অজ্ঞতাটা মেনে নিয়ে কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে চলে যেতাম।”

মেডিক্যাল কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট সুদীপ্ত সেনের নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, ” আজকে আমাকে ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিলে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। আমার খুব খারাপ লাগছে ভেবে ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিলের যিনি প্রেসিডেন্ট হিসাবে বসে রয়েছেন, এক সময়ে ২০০১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর পোলিং এজেন্ট হয়ে সিপিএমের হাতে বেধড়ক মার খেয়েছিলাম।” তাঁর অভিযোগ, ” আজকে এখানে বসে  একাধিক অনৈতিক কাজ নয়, বেছে বেছে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে বিরোধিতা করা, এমন কিছু কাজ হচ্ছে, যাতে বেশ কয়েকজন চিকিৎসক বাধ্য করে বিমুখে চালিত করছে। তার জলন্ত নিদর্শন আমি নিজে।”

উল্লেখ্য, দিনের পর দিন ভুয়ো ডিগ্রি ব্যবহার করে মানুষের চিকিৎসা করছিলেন, এমনই অভিযোগ ওঠে শান্তনুর বিরুদ্ধে। এদিন ভুয়ো বিদেশি ডিগ্রি ব্যবহারের সেই অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে বলেই জানিয়েছেন রোগী কল্যাণ সমিতিক চেয়ারম্যান সুদীপ্ত রায়।

এই মুহূর্তে

আরও পড়ুন