সোমেন দত্ত, কোচবিহারঃ
বিজয়া দশমীতে সংগঠনের শতবর্ষ। তাই মহালয় থেকে দশমী। দশদিন ধরে বাংলায় তিনশোর বেশি সভা ও সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ। এই সমাবেশের উদ্দেশ্য বাংলায় সংগঠনের শক্তি প্রদর্শন। সংঘের শীর্ষ কর্তাদের মতে, গত দশ বছরে রাজ্যে সংগঠনের শাখা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি হলেও শক্তি প্রদর্শন করা হয়নি। বছর ঘুরলেই বঙ্গে নির্বাচন। তার আগে সাধারণ মানুষের কাছে সংগঠনকে পৌঁছে দিতেই এই সিদ্ধান্ত। যাতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিজেপির উপর মানুষের ভরসা বাড়ে। আর মানুষ বুঝতে পারে এই লড়াইয়ে সংঘ বিজেপির পাশে রয়েছে। এছাড়াও দশদিন ধরে চলা কর্মসূচিতে সংঘ ছাড়াও সাধারন বিজেপি কর্মীরাও অংশ নেবে বলে জানান এক শীর্ষ কর্তা।
আরও পড়ুনঃ কিছুক্ষণেই আছড়ে পড়বে সুনামি! জারি অ্যালার্ট
জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষে ২১ সেপ্টেম্বর, রবিবার মহালয়ার দিন পশ্চিমবঙ্গে তিনশোর বেশি সমাবেশের আয়োজন করার পরিকল্পনা করেছে আরএসএস। মহালয়া থেকেই সূচনা হয়ে যায় শারদোৎসবের। এই দিনই দেবী দুর্গা সপরিবারে স্বর্গ ছেড়ে মর্তে আসেন। সেই কারণেই এই দিনটিকে বেছে নেওয়া হয়েছে সমাবেশ করার দিন হিসেবে। এদিন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় আরএসএসের তরফে আয়োজন করা হবে শোভাযাত্রা ও পথসভার। সংঘের পশ্চিমবঙ্গের ইউনিট তিনটি প্রাদেশিক কমিটিতে বিভক্ত – উত্তর, মধ্য এবং দক্ষিণ বাংলা। পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই তিনটি প্রান্তেই সংঘের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। আরএসএসের অন্তত ৫২টি সর্বভারতীয় সহযোগী সংগঠন রয়েছে। এর পাশাপাশি রয়েছে পশ্চিমবঙ্গেরও বেশ কিছু আঞ্চলিক সহযোগী সংগঠন। এই সব সংগঠনগুলিকে এক সঙ্গে শতবর্ষ উদযাপনে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। অর্থাৎ এবার ভারতীয় মজদুর সংঘ, সংস্কার ভারতী, শিক্ষণ মণ্ডল, সহকার ভারতী, শিক্ষক মহাসংঘ এবং সীমান্ত চেতনা-সহ অন্যান্য সংগঠন এবছর আলাদা করে কোনও অনুষ্ঠান, সমাবেশ কিংবা শোভাযাত্রা করবে না।
আরও পড়ুনঃ চলছে মাটি ফেলা, হিডকোর কাজ শুরু! জগন্নাথধামের পর দুর্গা অঙ্গন
সূত্রের খবর, সংঘের পরিকল্পনা হল সমগ্র সংঘ পরিবারের শক্তিকে প্রদর্শন করা। বিজেপি নেতা ও কর্মীরা, যারা একই সঙ্গে স্বয়ংসেবকও, আশা করা হচ্ছে তাঁরা মহালয়ার দিনে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে আয়োজিত এই সব কর্মসূচিতে যোগ দেবেন। ফি বছর আরএসএস বিভিন্ন জেলা থেকে কর্মসূচির মাধ্যমে দেবী দুর্গাকে স্বাগত জানায়। এবার পরিকল্পনা করা হয়েছে, প্রতিটি জেলায়ই একাধিক সমাবেশ ও শোভাযাত্রার আয়োজন করা হবে। এছাড়াও বাকি দিনগুলিতে বিভিন্ন সেবামুলক কাজ করবে শাখা সংগঠনগুলি। যেমন দরিদ্রদের মধ্যে পোশাক বিতরণ, ভোজন ও পুস্তক বিতরণ।
আরও পড়ুনঃ ভোটের আগেই বঙ্গ বিজেপির ম্যারাথন বৈঠক; হাজির RSS
আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের মতে, সংঘ রাজ্যের রাজনৈতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সেই কারণেই এই মহালয়া অনুষ্ঠানকে ব্যাপক রাজনৈতিক গুরুত্বের দৃষ্টিতে দেখা হচ্ছে। কারণ বাংলায় বিজেপি এককভাবে তৃণমূলকে পরাস্ত করতে পারবে না। তাই বিজেপি নেতৃত্বও চাইছে এবার সংঘ সক্রিয়ভাবে ভোটের কাজে অংশ নিক। তার আগে দলের উপর থেকে নিচুস্তর পর্যন্ত সমন্বয় বৈঠক করে ভোটপ্রস্তুতির কাজ করা হবে।