Tuesday, 5 August, 2025
5 August, 25
Homeআন্তর্জাতিক নিউজMax App: 'দূর হটো WhatsApp'! ফোনে বাধ্যতামূলক হচ্ছে MAX অ্যাপ

Max App: ‘দূর হটো WhatsApp’! ফোনে বাধ্যতামূলক হচ্ছে MAX অ্যাপ

আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে মোবাইল ফোনে বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে এই অ্যাপ।

অনেক কম খরচে ভিডিও এডিটিং, ফটো এডিটিং, ব্যানার ডিজাইনিং, ওয়েবসাইট ডিজাইনিং এবং মার্কেটিং এর সমস্ত রকম সার্ভিস পান আমাদের থেকে। আমাদের (বঙ্গবার্তার) উদ্যোগ - BB Tech Support. যোগাযোগ - +91 9836137343.

দেশ জুড়ে উগ্র জাতীয়তাবাদের হাওয়া তুলে দিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আর মার্কিন মেসেজিং সংস্থা ‘হোয়াটসঅ্যাপ’ নয়, এখন থেকে রাশিয়ায় যাবতীয় মেসেজ আদানপ্রদান হবে সরকার নিয়ন্ত্রিত ‘ম্যাক্স’ অ্যাপে। আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে মোবাইল ফোনে বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে এই অ্যাপ। শুরুতে সরকারি কর্মী ও আধিকারিক, পরে ধাপে ধাপে দেশের সব নাগরিকের ফোনে এই এক অ্যাপেই যাবতীয় কাজ করতে হবে।

শুধু তাই নয়, এবার থেকে রাশিয়ায় জুড়ে যত মোবাইল ফোন উৎপাদন হবে, সব ফোনে থাকতেই হবে নয়া এই অ্যাপ। টেলিগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, ইউটিউবের মতো বিদেশি অ্যাপের উপর নির্ভরতা কমিয়ে এই নয়া দিশি অ্যাপ আনা পুতিনের মস্তিষ্কপ্রসূত। ইউজারদের ফোনে শুধু অ্যাপটি থাকলেই হবে না, ফোনের ‘হার্ডওয়্যার’ কন্ট্রোল অর্থাৎ ক্যামেরা, মাইক্রোফোন, লোকেশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর যাবতীয় অনুমতি দিয়ে রাখতেই হবে এই অ্যাপকে।

ব্যবহারকারীরা এই অ্যাপ ফোন থেকে মুছে ফেলতে পারবেন না। কোনও নিয়ন্ত্রণ একবার দিয়ে পুনরায় প্রত্যাহার করা যাবে না। নয়া তথ্য-প্রযুক্তি আইনে ম্যাক্স অ্যাপ থাকা বাধ্যতামূলক হচ্ছে সমস্ত রুশ নাগরিকের ফোনে। ওই আইন একবার লাগু হলে, দেশের নাগরিকদের ইন্টারনেট ব্যবহার করে স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের উপর খবরদারি চালাবে ক্রেমলিন, এমনই অভিযোগ পুতিনের বিরুদ্ধে।

আরও পড়ুনঃ খড়দহ-কাণ্ডে নয়া মোড়! স্কুটির সিটের নীচেই চলত কারবার, দুপুর হলেই যাতায়াত করতেন মহিলারা

এমনিতেই রাশিয়ায় নাগরিকদের স্বাধীনভাবে ইন্টারনেট ব্যবহার ও সরকারি নজরদারির মধ্যে বিড়াল-ইঁদুরের লড়াই চলে। সরকার একটি অ্যাপ নিষিদ্ধ করে, নাগরিকরা ঘুরপথে সেই অ্যাপ ব্যবহার করেন। সম্প্রতি ইউটিউবের ডাউনলোডের গতি কমিয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে মস্কোর বিরুদ্ধে। ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকে রুশ সরকারের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে একাংশের নাগরিকদের মনে সরকার-বিরোধী মনোভাব তৈরি হচ্ছিল। আগ্রাসন থামানোর দাবিতে মস্কোর রাস্তায় পতাকা নিয়ে মিছিলও বেরোয়। আর এই সব প্রতিবাদের জমায়েতের পরিকল্পনা-ই হয় মেসেজের মাধ্যমে। তাই মস্কো চাইছিল এমন এক অ্যাপ, যা আইন করে নাগরিকদের ফোনে থাকা বাধ্যতামূলক করা যাবে।

ফেসবুক-হোয়াটঅ্যাপের মতো অ্যাপের মালিকানা যার হাতে, সেই ‘মেটা’-কে চরমপন্থী বলে দেগেছেন রুশ সরকারি কর্তারা। দেশের প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ যে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করেন দ্রুতই সেই অ্যাপকে নিষিদ্ধ করার পথে হাঁটছে পুতিন প্রশাসন।

নির্মাণকারী সংস্থা অবশ্য এই সব সমালোচনায় কান দিতে নারাজ। ভিকে কোম্পানির দাবি, মার্কিন ‘হোয়াটসঅ্যাপ’ বা চিনা ‘উইচ্যাট’-এর সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতেই রাশিয়ার জবাব ‘ম্যাক্স’। এটি একটি সুপার অ্যাপ। এক অ্যাপেই মেসেজ আদানপ্রদান থেকে আর্থিক লেনদেন- করা যাবে সবই। চ্যাট থেকে ফটো আপলোড, এমনকী সরকারি পরিষেবা পেতেও এই অ্যাপ-ই এখন থেকে ভরসা হতে চলেছে রুশ নাগরিকদের। এই ভিকে কোম্পানিরই ভিকে ভিডিয়ো পরিষেবাই রাশিয়ায় ইউটিউবের বিকল্প।

শুধু সাধারণ জনগণ-ই নয়, স্কুল স্তরের পড়ুয়াদের পর্যন্ত এই অ্যাপ ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। আপাতত পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে। দ্রুতই এই অ্যাপকে জাতীয় স্তরে বাধ্যতামূলক করা হবে। আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি বিশারদদের অনুমান, এক অ্যাপের মাধ্যমেই রুশ নাগরিকদের দৈনন্দিন জীবনযাপনের সব তথ্য এখন থেকে ক্রেমলিনের হাতের মুঠোয় চলে আসবে। কারণ, এই অ্যাপের মাধ্যমে নাগরিকদের কথা আড়ি পেতে শোনা, মেসেজ পড়া -সহ মত প্রকাশের যাবতীয় মাধ্যমের উপর নজরদারি চালাতে পারবে ক্রেমলিন। সরকার বিরোধী কোনও মতামত প্রকাশ করতে দেখলেই অভিযুক্ত ব্যক্তির ৬৩ ডলারের জরিমানা। এমনকী, প্রয়োজনে গ্রেফতার-ও করা যাবে।

ম্যাক্স-এর উত্থান অবশ্য একদিনে নয়। রুশ প্রেসিডেন্ট, মন্ত্রিসভার সদস্যরা অনেকদিন ধরেই দেশের মাটি থেকে হোয়াটসঅ্যাপকে তাড়াতে চাইছিলেন। রাশিয়াতে ব্যাপক জনপ্রিয় হোয়াটসঅ্যাপ। অন্তত কয়েক কোটি মানুষ ব্যবহার করেন এই মেসেজিং সার্ভিস। রয়েছে টেলিগ্রামও, আর এক জনপ্রিয় মাধ্যম মেসেজ আদানপ্রদানের মাধ্যম। কিন্তু এই দুই মেসেজিং সার্ভিসের উপরেই রুশ সরকারের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণ নেই। তাই সরকার এমন এক মেসেজিং অ্যাপ আনতে চাইছিল, যার উপর ক্রেমলিনের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকবে।

আরও পড়ুনঃ পুত্রদা একাদশীতে ইন্দ্র যোগ, কর্মক্ষেত্রে গোপন শত্রুর জন্য উন্নতিতে বাধা

দেশ জুড়ে ঘুরপথে ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য VPN-এর উপরেও কড়াকড়ি চলছে। অন্তত ২০০টি ভিপিএন সার্ভিস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দ্রুতই হোয়াটসঅ্যাপকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে পারে মস্কো, অনুমান বিশেষজ্ঞদের। মজার বিষয় হল, নয়া অ্যাপটি যে ভিকে সংস্থা বানিয়েছে, তার প্রতিষ্ঠাতার নাম পাভেল ড্যুরভ। তিনিই ‘টেলিগ্রাম’ বানান। পুতিন টেলিগ্রাম ইউজারদের সমস্ত তথ্য পাভেলের কাছে চেয়েছিলেন। পাভেল দিতে রাজি হননি।

রাতারাতি পাভেলের তৎকালীন সংস্থার শীর্ষকর্তাদের বদলি করে দেয় পুতিন সরকার, অভিযোগ পাভেলের। শেষ পর্যন্ত পাভেল নিজে রাশিয়া ছাড়েন। বর্তমানে দুবাইতে বসে তিনি ‘টেলিগ্রাম’ অ্যাপটি চালান। আজ পর্যন্ত টেলিগ্রামের কোনও ইউজারের তথ্য তিনি রুশ সরকারের সঙ্গে ভাগ করে নেননি বলেই দাবি করেন ‘নির্বাসিত’ পাভেল। আজ সেই ভিকে সংস্থার নিয়ন্ত্রণ রুশ সরকারের সিক্রেট সার্ভিসের হাতে।

এই মুহূর্তে

আরও পড়ুন