উত্তরপ্রদেশের ঔশানেশ্বর মহাদেব মন্দিরে দুর্ঘটনা। আচমকা বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে এসে পড়ল পুণ্যার্থীদের ভিড়ে। পুজো দিতে এসে তড়িদাহত হলেন অনেকে। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে মন্দিরে হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যায়। বিদ্যুত শকের হাত থেকে বাঁচতে পুণ্যার্থীরা দৌড়াদৌড়ি শুরু করেন। ফলে পদপিষ্টের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। এই ঘটনায় অন্তত দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত অনেকে।
উত্তরপ্রদেশের বারাবঙ্কী জেলার হায়দারগড়ের ঔশানেশ্বর মহাদেব মন্দির পুণ্যার্থীদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। এখন শ্রাবণ মাস চলছে। ফলে ওই মন্দিরে পুণ্যার্থীদের ভিড় লেগেই আছে। সোমবার মহাদেবের বিশেষ পুজো উপলক্ষে মন্দিরের ভিড় ছিল তুলনামূলক বেশি। রবিবার রাত থেকেই পুজো দেওয়ার জন্য মন্দিরে অনেকে জড়ো হয়েছিলেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, সেই ভিড়ের মধ্যেই ভোর ৩টে নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে।
জেলাশাসক শশাঙ্ক ত্রিপাঠী সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেন, ‘‘পুণ্যার্থীরা মন্দিরে পুজো দিচ্ছিলেন। সেই সময় আচমকা একটা বাঁদর বিদ্যুতের তারের উপর লাফিয়ে পড়ে। ফলে তারটি ছিঁড়ে মন্দিরের ছাউনির উপর পড়ে। ওই জায়গায় কারেন্ট ছড়িয়ে যায়। যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁদের চিকিৎসা চলছে।’’ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মন্দিরে তখন মহাদেবের ‘জলাভিষেক’ চলছিল। টিনের শেডের নীচে অনেকে দাঁড়িয়ে ছিলেন। আচমকা প্রচণ্ড শব্দ হয় এবং বিদ্যুতের ঝলকানি দেখা যায়। তার পর অনেকে বিদ্যুতের শক অনুভব করেন। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে।
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এই ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন। মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। সরকারের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের তিনি ঘটনাস্থলে অবিলম্বে পৌঁছোতে বলেছেন এবং পুণ্যার্থীদের উদ্ধারকাজে হাত লাগানোর নির্দেশ দিয়েছেন। আহতদের যাতে উপযুক্ত চিকিৎসা হয়, তা নিশ্চিত করতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার সকালে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ একটার ঘাড়ে আরেকটা কামরা, বাড়ছে মৃত্যু; ভয়ঙ্কর ট্রেন দুর্ঘটনা
যে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের মধ্যে এক জন ২২ বছরের প্রশান্ত। লোনিকাত্রা থানা এলাকার মুবারকপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন তিনি। অন্য সকলের সঙ্গে শ্রাবণ মাসে মহাদেবের পুজো দিতে এসেছিলেন মন্দিরে। মৃত আর এক জনের পরিচয় এখনও জানা যায়নি। দু’জনেরই মৃত্যু হয়েছে ত্রিবেদীগঞ্জ কমিনিউনিটি হেল্থ সেন্টারে। সূত্রের খবর, ঔশানেশ্বর মন্দিরের ঘটনায় আহতের সংখ্যা ৪০-এর বেশি।
রবিবারই হরিদ্বারের মনসা দেবী মন্দিরে পুণ্যার্থীদের মধ্যে পদপিষ্টের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। এখনও পর্যন্ত তাতে আট জনের মৃত্যু হয়েছে। সেই ঘটনার নেপথ্যেও ছিল বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে যাওয়া নিয়ে আতঙ্ক এবং হুড়োহুড়ি। বারাবঙ্কীর শিবমন্দিরেও প্রায় অনুরূপ ঘটনা ঘটল।