পেরিয়ে গিয়েছে একটা দশকের অধিক। বাংলা যেন এখনও আটকে সেই ২০০৮ সালে। এমনকি, শিল্প নিয়ে যখন বসে প্রশাসনিক বৈঠক। সেখানেও ফিরে ফিরে আসে বাম আমলের ট্রেড ইউনিয়ন ও টাটা গোষ্ঠীর চলে যাওয়ার কথা।
সোমবারও ঠিক তেমনটাই হল। বেঙ্গল ন্যাশনাল চেম্বার অফ কমার্সের অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী শশী পাঁজা। সেখানে গিয়েও পূর্বতন শাসককে নিয়ে সুর চড়াতে দেখা গেল তাঁকে। বাম আমলে ট্রেড ইউনিয়নের ‘শাসন’ নিয়ে মুখ খুললেন তিনি। বললেন, ‘২০১১ সালে পরিবর্তনের আগে আমরা রাজ্যে কী দেখেছি, সেটা সবাই জানে। আর এখন কি দেখছি, সেটাও দেখতে পাচ্ছেন।’
আরও পড়ুনঃ আটক প্রধান শিক্ষক! চন্দননগরের নামী স্কুলে ছাত্রকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ
এরপরেই তাঁর সংযোজন, ‘সেই সময় ট্রেড ইউনিয়নগুলি রীতিমতো জঙ্গিদের মতো আচরণ করত। সমস্ত কারখানা তালাবন্ধ। এমনকি, শিল্পপতিদের নানা ভাবে হেনস্থার ঘটনা তো রোজকার ছিল।’
একাংশের অভিযোগ, রাজ্যের বর্তমান শাসকদল ও শিল্পের সম্পর্কের মাঝে রয়েছে শতহস্তের দূরত্ব। কারণ, সিঙ্গুর প্রকল্প বন্ধ করেই ক্ষমতায় এসেছিলেন মমতা। ফলত, টাটার বাংলা ছাড়াকে ঠিক চোখে দেখেনি শিল্পমহল। তবে সে সব এখন অতীতের কথা। অতীত আঁকড়ে ধরে এগোনো সম্ভব নয়। অতীত থাকুক, বর্তমান এগোক।
সাম্প্রতিককালে মুখ্যমন্ত্রী ও টাটা কর্তার সাক্ষাতের পর বিভিন্ন মহলে এই বার্তাটাই ছড়িয়ে পড়েছে। রাজ্যে নতুন বিনিয়োগেরও আশা চাড়া দিয়েছে। এদিনের বণিক সভায়ও সেই ‘আশার’ কথাই ইঙ্গিতে তুলে ধরলেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।
আরও পড়ুনঃ চাঞ্চল্য ধূপগুড়িতে! তরুণীকে উত্যক্ত করার প্রতিবাদে পরিবারের সদস্যদের এলোপাথাড়ি কোপ
এদিন তিনি বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও দিন টাটার বিরোধিতা করেননি। তিনি কোনও দিন বলেননি যে শিল্প হবে না। বিরোধিতা ছিল পূর্বতন রাজ্য সরকারের নীতি নিয়ে। টাটার বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেসের কোন বিরোধিতা ছিল না। বাম সরকার যেভাবে দো-ফসলি জমিগুলিকে শিল্পপতিদের হাতে তুলে দিচ্ছিল, সেটা নিয়েই প্রতিবাদ করেছিলেন মমতা।’
তবে কি টাটা-মমতা মিলমিশ? কুণালের বার্তায় ইঙ্গিত রয়েছে বলেই মত একাংশের। এদিন তিনি আরও বলেন, ‘২০০৫ সালে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সিঙ্গাপুরে গিয়ে শিল্প নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন মাদ্রিদে গেলেন, সেখানকার শিল্পপতিরা তাঁর প্রতি আস্থা দেখিয়েছেন। রাজ্যের শিল্প ও শিল্পবান্ধব পরিস্থিতিতে যে অনেকটাই বদল এসেছে, এটা তারই প্রমাণ।’