কুশল দাশগুপ্ত, শিলিগুড়ি:
ভয়ঙ্কর অবস্থা উত্তরবঙ্গের। প্রবল বর্ষণ চলছে একের পর এক জেলায়। ফুঁসছে তিস্তা। এরইমধ্যে আলিপুরদুয়ারে নদীগর্ভে তলিয়ে গেল আস্ত এক শিব মন্দির। তীব্র আতঙ্কে আশপাশে গ্রামের বাসিন্দারা। ঘটনা আলিপুরদুয়ারের ১ নং ব্লকের শালকুমার ২ নং অঞ্চলে । প্রসঙ্গত, সিকিম, ভুটানেও চলছে প্রবল বর্ষণ। তার প্রভাব পড়ছে বঙ্গেও। আলিপুরদুয়ার সহ আশপাশের যে সমস্ত জেলা রয়েছে সেখানকার নদীগুলিও অবিরাম মুষলধারায় ফুলেফেঁপে উঠেছে। আলিপুরদুয়ারের জয়গাঁ, বীরপাড়া, মাদারিহাটের টোটোপাড়ার বাঙরি, তিতি, হাউড়ির মতো নদীগুলিতে জলস্তর অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে এরইমধ্যে।
আরও পড়ুন: করছে গর্জন, ‘গিলে খেতে’ আসছে ডায়না
এদিন শিষামারা নদীর জল আচমকাই বৃদ্ধি পেতেই দু’পাশে ভাঙন শুরু হয়ে যায়। তাতেই নদী গর্ভে তলিয়ে যায় পাশে থাকা একটি শিব মন্দির। প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই শিষামারা নদীর বাধ মেরামতের জন্য ১ কোটি ৯ লক্ষ টাকা বরাদ্ধ হয়েছে। কাজও চলছে। গত ৭ মে বিধানসভার সেচ দফতরের স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান সমীর কুমার জানা এলাকা পরিদর্শনেও আসেন। তার মধ্যেই ফের শুরু ভাঙন। তাতেই ভয়ে কাঁটা এলাকার বাসিন্দারা।
আরও পড়ুন: ডিসকাউন্ট! সেল, সেল, সেল– জামাই চাই, জামাই? রাস্তায় ঘুরে ঘুরে হাঁক ৩ যুবকের
অন্যদিকে শনিবার আলিপুরদুয়ারের বীরপাড়ার ৪৮ নং এশিয়ান হাইওয়েতে বেশ কিছু অংশে ধস নেমেছে। গ্যারগেন্ডা নদীর জলস্তরও বৃদ্ধি পেয়েছে। নদীর গতিপথও কিছুটা বদলে গিয়েছে। তাতেও বেড়েছে উদ্বেগ। আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল বলছেন, “আমাদের এখানে গত ২৪ ঘণ্টা বেশি বৃষ্টি না হলেও ভুটান পাহাড়ের বৃষ্টির জল কার্যত তাণ্ডব চালাচ্ছে। শিষামারা নদীর জলের তোড়ে প্রাচীন একটা মন্দির তলিয়ে গিয়েছে। আরও অনেক জায়গায় নদী ভাঙনের জেরে অবস্থা খারাপ। বসত বাড়ি থেকে চা বাগান সব তলিয়ে যাচ্ছে।” ভুটান পাহাড় থেকে নেমে আসা এই নদীগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে অচিরে আরও বড় বিপদ অপেক্ষা করছে বলে মনে করছেন তিনি। এখন ব্যবস্থা না মিলে আগামীতে ডুয়ার্সের মানচিত্রটাই বদলে যেতে পারে। উদ্বেগের সুরেই তিনি বলছেন, “ এখনই ব্যবস্থা না নিলে অদূর ভবিষ্যতে ডুয়ার্সের মানচিত্রটাই আর থাকবে না। সবটা দেখেই আমরা ইন্দো-ভুটান যৌথ নদী কমিশন তৈরির দাবি জানিয়েছি আমরা। ভারত-নেপাল, ভারত-বাংলাদেশ নদী কমিশন থাকলে ভুটানের ক্ষেত্রে কেন সম্ভব নয়? বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বারবার এই দাবি করেছেন। একাধিকবার রাজ্যের তরফে কেন্দ্রকে চিঠিও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রের কোনও হেলদোল নেই। প্রধানমন্ত্রী আলিপুরদুয়ার থেকে ঘুরে গেলেও এ নিয়ে কোনও কথা বললেন না।”