সোমেন দত্ত, কোচবিহারঃ
স্কুলে গার্ড নেই, মাসি নেই। ফলে বাচ্চাদের নিরাপত্তা থাকছে না। এই বিষয়ে কয়েকদিন আগেই শিশুদের নিয়ে কোচবিহার সদর মহকুমা শাসক ও পুলিশ সুপারের দপ্তরে গিয়েছিলেন অভিভাবকরা। এর পরেও কোচবিহার সদর গভর্নমেন্ট হাইস্কুলের সমস্যা মেটার কোনও নামই নেই। প্রশাসনের তরফেও কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছে না। এতেই ক্ষোভ বাড়ছে অভিভাবকদের মধ্যে। মঙ্গলবার দুপুরে স্কুলের সমস্যার বিষয় নিয়ে ওসি এডুকেশনের দ্বারস্থ হন তাঁরা।
স্কুলে নেই কোনও গ্রুপ-সি, গ্রুপ-ডি কর্মী। কর্মীর অভাবে পরিস্থিতি এমন যে স্কুলের ক্লাসঘরের দরজা খোলা থেকে প্রতি পিরিয়ডে ঘণ্টা বাজানো, মিড-ডে মিলের বাজার করা, প্রায় সব কাজই করতে হচ্ছে শিক্ষকদের। এমনই দুরবস্থা কোচবিহারের দুশো বছরের প্রাচীন এই স্কুলটির। একেই স্কুলে অর্ধেকের বেশি শিক্ষক নেই। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষকরা পড়াবেন না অন্য কাজ সামলাবেন, সেটাই বোঝা দায়।
আরও পড়ুনঃ খাস কলকাতায় পাচারকারী! গিরিশ পার্ক থেকে উদ্ধার ৯ নাবালিকা সহ ১১ জনকে উদ্ধার করল বড়তলা থানার পুলিশ
এদিন ওসি এডুকেশন জয়িতা খাটুয়া বলেন, ‘স্কুলের সমস্যার বিষয়টি আমার জানা ছিল না। অভিভাবকরা এদিন আমাকে সমস্যার কথা জানিয়েছেন। বিষয়টি দেখা হচ্ছে।’
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, যে স্কুলের সমস্যা নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে একাধিকবার খবর প্রকাশিত হয়েছে। স্কুলের অভিভাবকরা এর আগেও সমস্যা নিয়ে ডিএম অফিসে জানিয়েছেন। তিন-চারদিন আগেও বাচ্চাদের নিয়ে স্কুলের অভিভাবকরা এসডিও এবং পুলিশ সুপারের দপ্তরে গিয়ে সমস্যার কথা জানিয়েছেন। একবার কর্মীর অভাবে স্কুল কর্তৃপক্ষ অস্থায়ীভাবে নয়জন গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি কর্মী রেখেছিলেন। এর জন্য পড়ুয়াদের থেকে কয়েকশো টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছিল। বাড়তি টাকা নেওয়ার অভিযোগে শিক্ষা দপ্তর স্কুলের টিআইসিকে দু’বার শোকজও করেছেন। এরপর ২২ অগাস্ট স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই অস্থায়ী কর্মীদের কাজ থেকে ছাড়িয়ে দেয়। এতকিছুর পরেও স্কুলটির ঢিল ছোড়া দূরত্বে অফিস থাকা সত্ত্বেও ওসি এডুকেশন বলছেন, স্কুলটির সমস্যার কথা তিনি কিছুই জানেন না!
আরও পড়ুনঃ মহা সমস্যায় পর্যটকরা! তারাপীঠে নয়া নিয়ম
অভিভাবিকা সুপর্ণা দেব বলেন, ‘স্কুলে গার্ড নেই, মাসি নেই। তার উপর স্কুলের সামনে পাকা রাস্তা রয়েছে। বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে ভয় লাগে।’ একই সুর অভিভাবিকা মিঠু মল্লিক, বিউটি বর্মন দাসের গলাতেও। আরেক অভিভাবিকা মালেকা খাতুন বললেন, ‘ভালো স্কুল বলে আমরা এতদূর থেকে এই স্কুলে ছেলেকে ভর্তি করেছি। এখন যদি বছরের মাঝে স্কুলের এমন অবস্থা হয়, তাহলে ছাত্রদের নিয়ে আমরা কোথায় যাব? পাশাপাশি যা অবস্থা তাতে ছেলেকে স্কুলে পাঠাতেও এখন ভয় লাগে।’
বিষয়টি নিয়ে স্কুলের টিআইসি বিজন সাহা বলেন, ‘স্কুলের সমস্যার বিষয়ে অভিভাবকরা ডিএম অফিসে গিয়েছিলেন বলে শুনেছি। শিক্ষা দপ্তর থেকে আমাকে যেভাবে নির্দেশ দেবে, আমি তেমনভাবে কাজ করব।’