সূর্য্যকান্ত চৌধুরী, বাঁকুড়া:
বড়ো মা, মেজো মা, ছোট মা… এলাকায় রয়েছে তিনটি কালী মন্দির। নিত্যপুজো হয় সেখানে। ভক্তরা আসেন। মা-কে দর্শন করেন। পুরোহিত ভোগ দেন। এভাবেই দীর্ঘদিন ধরে নিষ্ঠার সঙ্গে চলে এসেছে পুজো। কিন্তু শুক্রবারই রাতেই সেই কালী মন্দিরগুলিতে ঘটল বিরাট ঘটনা। শনিবার সকালে উঠে যখন গ্রামের মহিলারা মা-কে পুজোতে গেলেন, তখন প্রতিমার এই রূপ দেখে থাকতে পারলেন না আর। কালী মায়ের শরীরে নেই কোনও অলঙ্কার। তিনটি মন্দিরেই একই অবস্থা। স্থানীয় মানুষজনদের বুঝতে অসুবিধা হল না যে, রাতের অন্ধকারে দুষ্কৃতীরা ঢুকে প্রতিমার সব গহনা নিয়ে চম্পট দিয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে, বাঁকুড়ার বড়জোড়া থানার নিরীশা গ্রামে। গ্রামের মাঝে থাকা মন্দিরের তালা ভেঙে অলঙ্কার চুরির ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। খবর পেয়ে বড়জোড়া থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
আরও পড়ুন: চাঞ্চল্যকর অভিযোগ ইউটিউবারের! নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে ট্রেনে উঠে মাদক খাইয়ে চুরি!
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়ার বড়জোড়া ব্লকের নিরীশা গ্রামের মাঝামাঝি মোট তিনটি মন্দির রয়েছে। পাশাপাশি তিনটি কালী মন্দিরেই বড় মা, মেজো মা ও ছোট মা রূপে কালী পুজো হয়। কালীর বিগ্রহে থাকা সোনা-রুপোর গহনা ছাড়াও পুজোর কাজে ব্যবহৃত বাসনপত্রের একটা বড় অংশ মন্দিরেও রেখে দেওয়ার রেওয়াজ চলে আসছে।
আজ বেলার দিকে গ্রামের এক মহিলা মন্দিরে প্রণাম করতে গিয়ে দেখেন মেজো মা-র মন্দিরে তালা ভাঙা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। গায়েব হয়ে গিয়েছে মন্দিরের ভেতরে থাকা প্রণামী বাক্স ও দেবী মূর্তিতে থাকা সোনা ও রুপোর অলঙ্কার। একই অবস্থা বড় মা, ছোট মায়ের মূর্তিরও। সব গহনা নিয়ে চম্পট দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। এমনকী মূর্তির সামনে থাকা ঘটের উপরের গামছাটিও ছাড়েনি দুস্কৃতীরা।
আরও পড়ুন: আরজি করের মতো নাগরিক আন্দোলন! পথে নামছেন ‘রাতদখলকারী’রা, সতর্ক শাসক
এই ঘটনায় আজ দুপুর থেকেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে এলাকায়। স্থানীয়দের দাবি, মন্দিরগুলি ছাড়াও পুজোর বাসন ও অলঙ্কার গ্রামবাসীদের ঘরে গচ্ছিত থাকে। মন্দিরে তালা ভেঙে চুরি হলে গ্রামের বাড়িগুলির নিরাপত্তা কোথায় তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা। স্থানীয় বাসিন্দা কাবেরী পরিকার বলেন, “আমার জা মা-কে প্রণাম করতে এসে দেখেন ঠাকুর কাঁপছে। তারপর তাকিয়ে দেখেন প্রণামী বাক্স নেই। ও ভয় পেয়ে গেছে। তারপর ছুটে গেলেন। সবাইকে ডেকেছেন। এরপর ছোট মন্দিরেরও এক অবস্থা।”