Thursday, 26 June, 2025
26 June, 2025
Homeরাজ্যISPAD: পশ্চিমবঙ্গের জন্য গর্বের মুহূর্ত! আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেল রাজ্য

ISPAD: পশ্চিমবঙ্গের জন্য গর্বের মুহূর্ত! আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেল রাজ্য

শিশু ও কিশোরদের টাইপ-১ ডায়াবেটিস চিকিৎসায় উদ্ভাবনী মডেলের জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেল রাজ্য।

অনেক কম খরচে ভিডিও এডিটিং, ফটো এডিটিং, ব্যানার ডিজাইনিং, ওয়েবসাইট ডিজাইনিং এবং মার্কেটিং এর সমস্ত রকম সার্ভিস পান আমাদের থেকে। আমাদের (বঙ্গবার্তার) উদ্যোগ - BB Tech Support. যোগাযোগ - +91 9836137343.

পশ্চিমবঙ্গের জন্য গর্বের মুহূর্ত। শিশু ও কিশোরদের টাইপ-১ ডায়াবেটিস চিকিৎসায় উদ্ভাবনী মডেলের জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেল রাজ্য। ‘ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর পেডিয়াট্রিক অ্যান্ড অ্যাডোলেসেন্ট ডায়াবেটিস’ ২০২৫ সালের জন্য এই পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে। 

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স-এ এই সাফল্যের কথা ঘোষণা করে বলেছেন, “এটা বাংলার জন্য নিছক একটা পুরস্কার নয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য পরিষেবার পরিসরে এটি হল বাংলার সরকারের দৃঢ় পদচিহ্ন”।

টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত শিশু, কিশোর ও যুবদের জন্য রাজ্যের স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ দফতর একটি জনস্বাস্থ্য কর্মসূচি গ্রহণ করেছিল। এর আওতায় বিনামূল্যে ইনসুলিন, ব্লাড সুগার মাপার যন্ত্র, টেস্ট স্ট্রিপ ও অন্যান্য জরুরি সামগ্রী সরবরাহ করা হয়। একই সঙ্গে প্রতিটি জেলায় ‘ডেডিকেটেড’ T1DM ক্লিনিক গড়ে তোলা হয়েছে, যেখানে নির্দিষ্ট দিনে চলে এই চিকিৎসা ও পরামর্শ পরিষেবা।

আরও পড়ুন: রথযাত্রা নিয়ে সতর্ক মমতা; দিঘার রথের রশি শুধু স্পর্শই করতে পারবেন সাধারণ মানুষ

এই প্রকল্পের লক্ষ্য শুধু ওষুধ দেওয়া নয়, বরং রোগী ও তাদের পরিবারের মধ্যে সচেতনতা তৈরি, আত্ম-পর্যবেক্ষণের দক্ষতা গড়ে তোলা এবং রোগের জটিলতা প্রতিরোধ করে দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা।

টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা ভারতে সবচেয়ে বেশি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত দেশের কোথাও এই রোগ মোকাবিলায় এতো সুসংগঠিত ও স্থায়ী সরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। তাই পশ্চিমবঙ্গের এই মডেল বিশ্ব স্বাস্থ্য পরিমণ্ডলে এক নজির গড়েছে।

ISPAD-এর মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান এই প্রকল্পকে স্বীকৃতি দেওয়ায়, তা শুধু রাজ্যের নয়, গোটা ভারতের জন্য এক দৃষ্টান্ত হয়ে উঠল। উন্নয়নশীল দেশগুলির জন্যও এটি একটি অনুসরণযোগ্য পথ দেখাল বলে মনে করছে ইউনিসেফও।

জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের অধীনে প্রতিটি জেলার NCD (Non-Communicable Disease) ক্লিনিকে নির্দিষ্ট দিনে T1DM চিকিৎসা পরিষেবা চালু করা হয়েছে।

প্রশিক্ষিত চিকিৎসক, নার্স ও কাউন্সেলর দ্বারা পরিচালিত ক্লিনিকে দেওয়া হচ্ছে বিনামূল্যে ইনসুলিন, ব্লাড গ্লুকোজ মনিটরিং কিট ও নিয়মিত ফলো-আপ।

আরও পড়ুন: CBSE-র মতো এবার কি মাধ্যমিকেও বছরে ২ বার পরীক্ষা?

সমস্ত রোগীর নাম নথিভুক্ত করে তৈরি করা হয়েছে একটি ইলেকট্রনিক রেজিস্ট্রি—যার মাধ্যমে মাসে মাসে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে রোগীর শারীরিক অগ্রগতি, সুগার নিয়ন্ত্রণ ও অন্যান্য জটিলতা।

প্রতিটি রোগীর জন্য আলাদা ডায়রি রাখা হচ্ছে। স্কুলে যাওয়ার ছেলেমেয়েদের জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষকেও জানানো হচ্ছে তাঁদের শারীরিক অবস্থা।

রোগীর পরিবারকে দেওয়া হচ্ছে সুগার মাপার ট্রেনিং, ইনসুলিন ইনজেকশনের নিয়ম, পুষ্টিবিধি, শারীরিক কসরত ও ‘সিক ডে ম্যানেজমেন্ট’-এর মতো শিক্ষামূলক উপকরণ।

এই সাফল্য রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর, মিশন ডিরেক্টরেট, জেলা স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসক এবং পরামর্শদাতাদের সম্মিলিত প্রয়াসের ফসল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “আমি আমাদের স্বাস্থ্য দফতর, চিকিৎসক এবং সমস্ত টিম সদস্যদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য পরিষেবা আজ আন্তর্জাতিকভাবে সম্মানিত। জয় বাংলা!”

এই স্বীকৃতির ফলে শুধু রাজ্য নয়, কেন্দ্রীয় সরকার এবং অন্যান্য রাজ্যগুলিও পশ্চিমবঙ্গের এই সফল মডেল থেকে শিক্ষা নিতে পারে বলে মত স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের।

অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গের এই মডেল আগামী দিনে জাতীয় স্তরে একটি রেফারেন্স ফ্রেমওয়ার্ক হয়ে উঠতে পারে। চিকিৎসাক্ষেত্রে এমন একটি অভিনব উদ্যোগ যে শিশু ও কিশোরদের জীবন রক্ষা করছে, তার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বাঙালির মুখ উজ্জ্বল করল নিঃসন্দেহে।

 

এই মুহূর্তে

আরও পড়ুন