এলাহাবাদ হাইকোর্টের নির্দেশিকাকেই বহাল রাখল দেশের শীর্ষ আদালত। বধূ নির্যাতন আইন যাতে ‘আক্রোশ মেটানোর’ হাতিয়ার না হয়ে ওঠে, সেই পক্ষেই দাঁড়াল সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার দেশের প্রধান বিচারপতি বিআর গভাই ও বিচারপতি এজি মাসিহর বেঞ্চে একটি বধূ নির্যাতনের মামলায় হাইকোর্টের নির্দেশিকায় ‘আস্থা’ রাখল সুপ্রিম কোর্ট।
প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, এলাহাবাদ হাইকোর্ট নির্দেশিকা দিয়ে যে নীতিমালার কথা বলেছে, এবার থেকে তাই কার্যকর হবে। পুলিশ-প্রশাসনকেও তা মেনে চলতে হবে। পাশাপাশি, বধূ নির্যাতন বিরোধী আইন ধারা ৪৯৮-এ ধারার অপব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখা যায় আদালতকে।
আরও পড়ুনঃ শিলিগুড়িতে বাংলা ভাষা ব্রাত্যই! ইংরেজি বা হিন্দির দাপট
২০২২ সালে একটি বধূ নির্যাতনের মামলায় আদালতের পর্যবেক্ষণ, ৪৯৮-এ ধারায় কোনও বিবাহিত মহিলা অভিযোগ দায়ের করলেই পুলিশ অভিযুক্ত এবং তার পরিবারকে সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতারের করার জন্য ছুটে যাবে না। FIR দায়েরের পর দু’মাসের ‘কুলিং পিরিয়ড’ মেনে চলতে হবে। এই সময়কালে কোনও ভাবে অভিযুক্ত কিংবা তার পরিবারের বিরুদ্ধে পুলিশ গ্রেফতারির মতো কড়া পদক্ষেপ নিতে পারবে না।
তবে কি দু’মাসের জন্য অভিযুক্ত একেবারে ছাড় দিচ্ছে আদালত? না তা ঠিক নয়। এরপর নীতিমালায় আদালত জানিয়েছে, এই দু’মাসে মামলাটি যে থানায় দায়ের হয়েছে, তার ভিত্তিতে নির্দিষ্ট জেলার পারিবারিক ওয়েলফেয়ার কমিটি বা FWC-র কাছে পাঠানো হবে। তবে কোন মামলাগুলিকে স্থানান্তর করা হবে, সেই নিয়ে শর্ত দিয়েছে আদালত।
বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ, শুধুমাত্র সেই মামলাগুলির স্থানান্তর হবে যেগুলিতে অভিযোগকারীর শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই ও যার সর্বোচ্চ সাজা ১০ বছরের কম।
আরও পড়ুনঃ মমতা সম্পর্কে দীপক ঘোষের সেই বিতর্কিত বইয়ে নিষেধাজ্ঞা
বলে রাখা ভাল, ২০১৭ সালে একটি মামলাতেও বধূ নির্যাতন বিরোধী আইনের অপব্যবহার ও আক্রোশের হাতিয়ার হিসাবে রুখতে এই একইরকম নীতিমালার কথা বলেছিল দেশের শীর্ষ আদালত। কিন্তু ২০১৮ সালে সেই নির্দেশিকা চ্যালেঞ্জ করা হলে তা তুলে নেওয়া হয়। আইনজ্ঞরা মনে করেছেন, সেই নির্দেশিকায় আবার ২০২২ সালের এলাহাবাদ হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণের মাধ্য়মে ফিরে এল। যাতে ‘আস্থা’ প্রকাশ করল শীর্ষ আদালতও।
উল্লেখ্য, যে মামলার ভিত্তিতে এই ‘আস্থা’ প্রকাশ করেছে শীর্ষ আদালত। তাতে দেখা গিয়েছে, ‘আক্রোশ মেটাতে’ করা বধূ নির্যাতন বিরোধী মামলার দ্বারা এক মহিলা তার স্বামী ও শ্বশুরকে প্রায় ১০০ দিনের অধিক জেলবন্দি থাকার ব্যবস্থা করে দেন। মঙ্গলবার শীর্ষ আদালত ওই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে হওয়া মামলা খারিজ করেন এবং বিবাহবিচ্ছেদের নির্দেশ দেন বলেই খবর।