তারকেশ্বরে এক ঘরে করে দেওয়া হয়েছে ১২টি পরিবারকে। বাজারঘাট থেকে শুরু করে শিশুদের পড়াশোনা-সবই বন্ধ!। বিগত দশ পনেরো দিন ধরে মিলছে না মুদিখানা, দুধ, সবজি মাছ! এমনকি বন্ধ শিশুদের পড়াশোনা। অভিযোগ, প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েও মেলেনি কোনও ফল।সব জেনেও নিশ্চুপ স্থানীয় প্রশাসন।অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন তারকেশ্বরের তেঘরি গ্রামের হালদার পরিবারের সদস্যরা।
আরও পড়ুন: ‘কেস খুব সেনসিটিভ, প্রচুর তথ্য এসেছে, উপযুক্ত অ্যাকশন হবে’, আশ্বাস সিপির
হালদার বংশের বারোটি পরিবারে মোট সদস্য সংখ্যা ষাট জনের উপর। অভিযোগ, এলাকার কিছু তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী এই নিদান দিয়ে রেখেছে সকলকে। ভয়ে মুখ খুলতে চাইছে না কেউ, মুদি দোকান থেকে দুধ বিক্রেতা, এমনকি গৃহশিক্ষক-সবাই ভয়ে চুপ!
হালদার পরিবারের দাবি, গ্রামে একটি রক্ষা কালী মন্দিরে দীর্ঘ তিনশো বছর ধরে উত্তরাধিকার সূত্রে তারা পূজা করতেন কিন্তু বিগত পাঁচ বছর ধরে সেই মন্দির দখলে নিয়েছে গ্রামের কয়েক জন মাতব্বর। এমত অবস্থায় আদালতের দ্বারস্থ হন হালদার পরিবার। একাধিক বার আদালত হালদার পরিবারের পক্ষে রায় দেয়। সেই রায় কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে জোর পূর্বক মন্দির দখলে রেখেছে গ্রামের কয়েকজন মাতব্বর। হালদার পরিবারের দাবি, অভিযুক্তরা এলাকায় তৃণমূল নেতা-কর্মী বলেই পরিচিত। হালদার পরিবারের এক প্রবীণ মহিলা বলেন, “আগে মন্দিরে গেলে, আমাকে দেখেই গ্রামের মহিলারা মন্দির থেকে নীচে নেমে আসত, আমাকে প্রণাম করত, এখন গেলে দূর দূর করে তাড়িয়ে দিচ্ছে। দোকানে গেলে দোকানি একটা জিনিসও দিচ্ছে না। কে দিতে বারণ করেছে, তা জিজ্ঞাসা করলেও ভয়ে চুপ করে থাকছে।”
আরও পড়ুন: জমি বিবাদের জেরে নওদায় বোমাবাজিতে মৃত্যু, বিক্ষোভ স্থানীয়দের
একাধিক বার প্রশাসনিক দফতরে অভিযোগ জানিয়েও মেলেনি কোনও ফল। যদিও এই বিষয়ে বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুশান্ত বেরা বলেন, “এই রকম জঘন্য কাজ তৃণমূলই করতে পারে। আমরা নিন্দা করছি। নিন্দা জানাবারও ভাষা নেই। কী ভয়ঙ্করভাবে তাঁরা বয়কটের শিকার। পুলিশকে বলব, আপনারা বিষয়টি দেখে তাড়াতাড়ি মিটিয়ে দিন।”
তারকেশ্বর বিধায়ক তথা তৃণমূল জেলা সভাপতি রামেন্দু সিং রায় বলেন, “এই ধরণের ঘটনা যদি ঘটে থাকে, তাহলে বরদাস্ত করা হবে না। যদি তৃণমূলের কেউ জড়িত থাকে তাকে বরখাস্ত করা হবে।”
তারকেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কৃষ্ণা অধিকারী বলেন, “এমন কিছু হয়েছে, আমার কাছে কোনও খবর নেই। কেউ অভিযোগ জানায়নি। যদি অভিযোগ জানায়, তাহলে বিডিওর সঙ্গে কথা বলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পদক্ষেপ করব।”