বিশ্বভারতীর পাঠভবনের ছাত্রাবাসে এক অস্বস্তিকর ঘটনার জেরে পাঁচজন ছাত্রকে সাময়িক বরখাস্ত করল বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ, হস্টেলের ভিতরে বসে একসঙ্গে মদ্যপান করেছিল তারা। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই শান্তিনিকেতনে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তদের মধ্যে চারজন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী এবং একজন উচ্চমাধ্যমিক স্তরের ছাত্র। অভিযোগ, ওই দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রই হস্টেলের বাইরে থেকে মদ এনে দশম শ্রেণির ছাত্রদের সরবরাহ করেছিল। এই ঘটনায় বিদ্যালয়ের তরফে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত শেষে পাঁচ ছাত্রকে দু’মাসের জন্য সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: স্করপিও-লরির মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত ৪; বেলদায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা
পাঠভবনের এক সূত্র জানিয়েছে, দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রটি ‘উত্তরণ’ নামের হস্টেলের বাসিন্দা এবং বাকিরা থাকে ‘বয়েজ হস্টেল’-এ। সেখানেই বসে তারা সম্প্রতি মদ্যপান করে। ঘটনার দিন হস্টেলের ওয়ার্ডেন একাধিক ছাত্রের মুখ থেকে মদের গন্ধ পেয়ে কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান। এরপরই তদন্ত শুরু হয়।
এই ঘটনায় হস্টেলের নিরাপত্তা ও নজরদারির কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বেশ কয়েকজন অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “ছোট ছেলেরা হস্টেলে বসেই নেশায় জড়িয়ে পড়ছে। এটা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। পড়াশোনার পরিবেশ দিন দিন নষ্ট হচ্ছে।” কেউ কেউ অভিযোগ করেন, এর আগেও হস্টেলে মদ্যপানের ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু তেমনভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
অভিভাবকদের একাংশের মতে, ছাত্রাবাসে নিয়মিত নজরদারি ও হঠাৎ পরিদর্শন চালু না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলেন, “সতর্ক না হলে এই বয়সেই নেশার প্রতি আসক্তি তৈরি হবে, যা তাদের ভবিষ্যতের জন্য ভয়ানক বিপদ ডেকে আনবে।”
আরও পড়ুন: ১৫ পাতার রিপোর্ট; ‘কেন জ্বালানি বন্ধ করে দিলে?’ ইঞ্জিন বিকল হতেই ভয়ার্ত প্রশ্ন পাইলটের!
বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ বোধিরূপা সিংহ সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, “ছাত্রদের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সংশোধনমূলক ব্যবস্থাই গ্রহণ করা হয়েছে।” বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক জানিয়েছেন, “ছাত্রদের কিছু আচরণ শৃঙ্খলার পরিপন্থী ছিল। শিক্ষকরা তাদের শুধরে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।”
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শান্তিনিকেতনে শিক্ষার পরিবেশ ও ছাত্রাবাস ব্যবস্থাপনা নিয়ে ফের একবার প্রশ্নের ঝড় উঠেছে।