সৌম্য পালিত:
১৬ বছর ধরে সরকারের কর্মরত। ফাঁস করেছেন একাধিক হেভিওয়েট কেসের পর্দা। ভারতের সবচেয়ে হাই প্রোফাইল আর্থিক তছরুপ মামলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তিনি। ২০০৯ ব্যাচের ভারতীয় রাজস্ব পরিষেবা (IRS) অফিসার কপিল রাজ।
জানা গিয়েছে, অফিসার কপিল রাজ আচমকাই পদত্যাগ করেছেন। কপিলের অবসরের এখনও বাকি ১৫ বছর, কারণ সুপারঅ্যানুয়েশন বয়স ৬০ বছর। তাঁর আকস্মিক এই সিদ্ধান্তে সরকারি মহলে সাড়া ফেলে দিয়েছে। অর্থ মন্ত্রালয়ে সূত্রে জানা গিয়েছে, কপিল রাজের পদত্যাগ ভারতের রাষ্ট্রপতির অনুমোদনসহ ১৭ জুলাই থেকে কার্যকর হয়েছে। সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্রপতি কপিল রাজে ভারতীয় রাজস্ব পরিষেবা (শুল্ক ও পরোক্ষ কর) থেকে পদত্যাগ ১৭ জুলাই থেকে কার্যকর হওয়ার জন্য গৃহীত হয়েছে।’
কী কারণে পদত্যাগ?
জানা গিয়েছে, ৪৫ বছর বয়সী এই অফিসার ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছে। পদত্যাগের সময়, কপিল রাজ দিল্লিতে জিএসটি গোয়েন্দা শাখায় অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কপিল রাজ লাইমলাইটে আসেন, যখন তিনি পরপর দুই মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করেন।
আট বছরের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)-এ তাঁর কর্মজীবনে গোটা দেশজুড়ে কপিল রাজ জনপ্রিয়তা লাভ করেন। যেখানে তিনি দুটি হাই প্রোফাইল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের গ্রেফতারের নেতৃত্ব দেন।
আরও পড়ুনঃ উদাসীন পঞ্চায়েত! আর কত দিন? খানাকুলে রাস্তা আটকে তুমুল বিক্ষোভ
হাই প্রোফাইল গ্রেফতারি:
জানুয়ারি ২০২৪: ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনকে জমি জালিয়াতির মামলায় গ্রেফতারের সময় কপিল রাজ নিজে হাজির ছিলেন। তিনি রাজভবনে হেমন্ত সোরেনের পদত্যাগের পর তাঁকে হেফাজতে নেন।
মার্চ ২০২৪: দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে আবগারি দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতারের সময় কপিল রাজ তাঁর বাসভবনে উপস্থিত ছিলেন এবং গ্রেফতার মেমো প্রস্তুত ও হস্তান্তরের তত্ত্বাবধান করেন।
আর্থিক তছরুপ মামলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা:
সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থার রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, কপিল রাজ ED-র তল্লাশি অভিযানে নিজে উপস্থিত থেকে তদন্ত দলের মনোবল বাড়ানো, রাজনৈতিক নেতাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রশ্নপত্র তৈরি এবং মামলা পর্যবেক্ষণে সক্রিয় ভূমিকা নিতেন।
মুম্বইয়ে পোস্টিং-এর সময় তিনি কয়েকটি হাই-প্রোফাইল মামলার তদন্তে যুক্ত ছিলেন। নীরব মোদী ও মেহুল চোকসির মানি লন্ডারিং কেস।
ব্যক্তিগত জীবন ও শিক্ষা:
কপিল রাজ উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুর জেলার বাসিন্দা এবং ইলেকট্রনিক্সে বি.টেক ডিগ্রিধারী। কাস্টমস, জিএসটি গোয়েন্দা বিভাগ এবং আর্থিক অপরাধ তদন্তের গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটে তাঁর পোস্টিং ছিল।
পদত্যাগের কারণ:
৪৫ বছর বয়সি এই অফিসার তাঁর পদত্যাগের কারণ হিসেবে ‘ব্যক্তিগত কারণ’ দেখিয়েছেন, যদিও তাঁর অবসরের বাকি ছিল আরও প্রায় ১৫ বছর। পদত্যাগের সময় তিনি দিল্লির জিএসটি গোয়েন্দা শাখায় অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।