অবৈধ ভোটারদের বাদ দিয়ে ভোটার তালিকায় স্বচ্ছতা আনতে সংশোধনের কাজ করছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। সেই কারণে বিভিন্ন রাজ্যের কাছে পাঠানো হয়েছে একটি ‘ডিক্লারেশন ফর্ম’। যার বেশ কিছু নিয়মাবলি নিয়ে আপত্তি তুললেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার দিঘা থেকেই এনিয়ে সরব হলেন তিনি। বললেন, ”ভোটার তালিকা সংশোধন করার জন্য আমাদের কাছে কমিশন একটা ফর্ম পাঠিয়েছেন। কিন্তু সেই ডিক্লারেশন ফর্মের কয়েকটি বিষয়ে আমার আপত্তি আছে। কেন উল্লেখ করা হচ্ছে যে ১৯৮৭ থেকে ২০০২-এর মধ্যে যাদের জন্ম, তাদের তা লিখতে হবে ফর্মে? তার মানে কি তার আগে বা পরে যারা জন্মেছে, তাদেরটা হবে না?” এহেন ডিক্লারেশন ফর্মের মাধ্যমে কমিশনের উদ্দেশ্য নিয়ে সংশয় প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: রথযাত্রা নিয়ে সতর্ক মমতা; দিঘার রথের রশি শুধু স্পর্শই করতে পারবেন সাধারণ মানুষ
এই মুহূর্তে রথযাত্রা উপলক্ষে দিঘায় রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার বিকেলে সেখান থেকেই জরুরি সাংবাদিক সম্মেলন করে নির্বাচন কমিশনের নয়া ডিক্লারেশন ফর্ম নিয়ে আপত্তি জানালেন। তাঁর দাবি, নির্বাচন কমিশন তাঁকে ২টি চিঠি পাঠিয়েছে। তা প্রাথমিকভাবে দেখতে গিয়ে ১৮ ও ১৯ পাতার নির্দেশিকায় তাঁর চোখে পড়েছে যে ওই ডিক্লারেশন ফর্ম পূরণের সময় বাবা-মায়ের বার্থ সার্টিফিকেটও দিতে হবে। তা কোথা থেকে পাবেন সবাই? এই প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে নিজের কথা বলতে গিয়ে মমতা বলেন, ”আমিও নিজের মা-বাবার জন্মসাল জানি না।”
আরও পড়ুন: সংক্রমণের মতো ছড়িয়ে গেল! ভয়াবহ ঘটনা বাংলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে
অবৈধ ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ দিতে ২২ বছর পর নড়েচড়ে বসেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। বিশেষ করে ভিনদেশি নাগরিকদের তালিকা থেকে বাদ দিতেই কমিশনের এই পরিকল্পনা বলে জানা গিয়েছে। নতুন ভোটারদের তালিকাভুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রেও বেশ কয়েকটি পরিবর্তন আনা হয়েছে। জন্মের প্রমাণপত্র সঠিকভাবে দাখিল করতে না পারলে ভোটার তালিকায় নাম তোলা যাবে না বলে স্পষ্ট জানিয়েছে কমিশন। আর এখানেই আপত্তি বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর। তাঁর সংশয়, এসব তথ্য নিয়ে কি আসলে NRC-র পথে এগোচ্ছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার? এ প্রসঙ্গে জনতাকেও সতর্ক করেছেন মমতা। বার্তা দিয়েছেন, ”আপনারাও বিষয়টি নজরে রাখুন। ফর্মে দেখে নিন ভালো করে। আপত্তিজনক কিছু মনে হলে তা করবেন না। দরকারে সমবেত প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, কমিশনের উদ্দেশ্য ভালো নয়।” তবে এনিয়ে তৃণমূল নতুন করে প্রতিবাদে নামছে কিনা, তা এখনও স্পষ্ট করেননি দলনেত্রী।